1.মাঝে মাঝে এমন হয়, যে, সব কাজ পড়ে থাকে, জমে জমে স্ত ূপ হয়ে ওঠে,
কোনো কাজে হাত দিই, এমন উদ্যম থাকে না। মন লাগে না- না কাজে না পড়ায়
না এমনকী আকাশের দিকে এক পলক তাকাতেও কানত্দি- ভালো লাগে না- ভালো
লাগার কিছু নেই! তখন ঝেঁপে আসতে থাকে নিষফলতা বোধ। নিষ্ফল মনে হতে থাকে সব দৌড়ঝাঁপ, সাফল্য ব্য র্থতা পাওয়া ও না পাওয়া - সব নিরেট নিষ্ফল! এই বদ্ধতা নিয়ে তখন সত্দব্ধ পাথর পড়ে থাকি। এইভাবে, এইভাবে মাঝে মধ্যে-
কী বদ্ধতা! তারপর, হঠাৎ তুমি ফিরে আসো- কখনো তোমাকে ডাকি তৃষ্ণা , কখনো স্পৃহা,কখনো বেঁচে থাকা। তখন চোখ ফিরে পায় দৃষ্টি, শ্রবণেন্দ্রিয় পেতে থাকে ধ্বনির গুঞ্জন, প্রাণ- তুমি ফিরে আসো তোমাতে! সাফল্য আস্বাদ করার জন্য আবার প্রাণ আকুলি বিকুলি শুর ু করে। ভুলে যাই কেমন অন্ধকার গ্রাস করে নিয়েছিলো এই খানিক আগে, কেমন অপার হয়ে উঠেছিলো বোধহীনতা!
একদিন, একদিন যদি ওই অসাড় দশা অনড় হয়ে থাকে! হঠাৎ এসে হঠাৎ যদি এইভাবে সরে না যায় আচমকা । ভালো হবে? কেমন হবে!
2. যদিও খুব স্বপ্ন হানা দিতো মনে একদিন, মনে হতো একদিন ঠিক বেরিয়ে পড়া হবে, দূরে -কোন অজানা দুনিয়ায়। করে ওঠা হবে রোমাঞ্চকর কিছু,উত্থানে পতনে ভরা কিছু, পাপপুণ্যের অতীত কিছু; জ্যাক লন্ডন যেমন করেছিলেন-- স্বর্ণঅভিযানে বের ুনো থেকে শুর ু করে জলদস্যুতা- এতোসব কিছু। তারপর ডাঙায় ফিরে থিতু হয়ে বসা- যা কিছু পঞ্চ ইন্দ্রিয় গ্রহণ করেছে ,তাকে শব্দেবন্ধে বেঁধে বেঁধে ফেলা । এমন, এমন করে ওঠা ! এমন সাধে ও বাসনায়, আশায় ও আশায় দিন কাটালাম বটে, কিনত্দ যা কিছু, সব ছাপোষা। ছাপোষা জাগরণ , রঙহীন বিবর্ণ নিদ্রা, ঢিমে ঢকর ঢকর চলা ও থামা- এই তো জীবন _ দিব্যি আছে। মনেও পড়ে না কোন রোমাঞ্চের স্বপ্নে কখন মন কেঁপে উঠেছিলো একদিন।
তবে আজকাল ভারী রোমাঞ্চকর কাটাচ্ছি সকালগুলো, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার পথে। টলে উঠছে পা, সন্ধ্যার মুখে, বাড়ি ফেরার সময়, চাঞ্চল্যে ত্রাসে অনিশ্চয়তায়_
আমাকে ধরতে হয় অটো রিক্সা, বাহন হিশেবে। আর দিতে হচ্ছে কী যে খেসারত,
পেতে হচ্ছে কতো যে চাঞ্চল্যকর অভিজ্ঞতা ! জলদস্যুতা আর কতোটা দিতে পারতো!
ভোর সকালে বাসা থেকে বের ুতে বের ুতে মন ঠকঠকানো শুর ু করে । বের ুচ্ছি তো, তো? কি আছে সামনে? সারি সারি অটো, স্ট্যান্ড-এ। আশে পাশে গুলতানি দিতে থাকা চালকেরা, খুবই ব্যসত্দ- আলাপে, পান খাওয়ায়। যাবেন? না।
আপনি যাবেন? অই দিগে যামু না। আপনি- প্রাণ ঢিবঢিবানি নিয়ে জিজ্ঞেস করি,
120 ট্যাকা দেওন লাগব। সাফ জবাব আসে। মিটারে যানজট হেঁচড়ে গেলেও যেখানে ষাট টাকার বেশি ওঠে না, সেখানে একশো টাকা হেসেখেলে চায় তারা।
সাবাশ! তাদের বাহাদুরির উত্তাল ঝঞ্ঝা আমাকে কোথায় উড়িয়ে যে নিয়ে যায়! থেবড়ে থুবড়ে এগোই, যদি মেলে অন্য একটা! কোনো মতে মিললো, তবে শর্ত হচ্ছে মিটারের চেয়ে 10 টাকা বেশি দিতে হবে। ওরে বাবা! আচ্ছা তা-ই সই, দেবো দেবো _ তবে মিটারে কতো আসবে? আমি জানি না। মিটার দুদ্দাড় করে ওপরে উঠতে থাকে।এই এক হাত যায় তো টাকা বাড়ে, দেড় হাত যায় তো সেই অঙ্ক দ্বিগুণ হয়ে যায়। যেতে যেতে শেষে 120 কী 100, তারপরে তো রইলোই 10 টাকা বেশি দেয়ার দায়।
দিয়ে থ ুয়ে বিভাগে ঢুকি, এইভাবে রোজ;মনে আসে জ্যাক লন্ডন-এর কথা- আরে এমন চাঞ্চল্য জ্যাক লন্ডন কোথায় পাবেন! পান নি । গর্ব বেশ আসে মনে, তবে সঙ্গে সঙ্গে মনে আসে যে, সন্ধ্যা আছে আমার পাড়ি দেয়া বাকি! ওহ! কী যে হবে!