সন্ধ্যা ৭.৩০ মিঃ। অফিসে কাজ করতে করতে হঠাৎ মোচড় মেরে উঠল পেট। বুঝলাম অনেকক্ষন দানাপানি না পড়ায় মহাশয়ের মেজাজ খারাপ হয়েছে। কাজ যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থায় রেখে নীচে গেলাম কিছু উদরস্থ করার জন্য। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ভাজাপোড়া খাচ্ছিলাম অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া শিশু ভিখারীর বিরক্তিকে গ্রাহ্য না করে।সাধারণত এদের 'উৎপাত' খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। কিন্তু আজকে হঠাৎ কিছুক্ষন পরই সবগুলো একত্রে দিল দৌড় রাস্তার অপর প্রান্তের দিকে। নিশ্চই আরেকটি বড় মক্কেল পেয়েছে। আমি তাকানোর প্রয়োজন মনে করলাম না। খেয়ে চলছি নিজের মতো। খেতে খেতে আনমনে চোখ পড়লো রাস্তার ওপারে। যা দেখলাম- টং করে মেজাজ ধরে গেল। রাস্তা দিয়ে যাওয়ারত কিছু বিদেশীকে (চাইনীজ হবে হয়ত) ঐ শিশু ভীখারীর দল এমনভাবে ছেকে ধরল যে তারা হাটতেই পারছেনা। কেউ হাত ধরে টানছে, কেউ জামা ধরে, কেউ ব্যাগ... আর আমাদের স্বদেশী ভদ্রলোকদের অনেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মজা দেখছেন। দৃশ্যটা আমার কাছে মনে হলো- একটি হরিণের উপর হামলে পড়েছে একপাল ক্ষুধার্ত কুকুর (জানি এভাবে উপমাটা দেয়া আমার ঠিক হচ্ছেনা, কিন্তু সত্যিই সে মুহুর্তে দৃশ্যটা আমার কাছে এরকমই মনে হয়েছিল।) ছুটে গেলাম রাস্তার ওপারে। দুর দুর করে তাড়িয়ে দিলাম শিশুগুলোকে। কিছুক্ষন খিস্তি খেউড় করলাম। একজন পরিপাটি ভদ্রলোকের (তথাকথিত) এমনটি করা শোভা পায় কিনা, তা নিয়ে ভাবার অবকাশ পেলাম না। যাই হোক, ভাবলাম লোকগুলোর সাথে কথা বলে আসি। সরি করে আসি, বাংলাদেশীদের পক্ষ থেকে। একটু দ্রুত হেটে তাদেরকে ধরে ফেললাম।
হাই-
তারা তাকালোনা, নিজেদের মধ্যে কি সব বলতে বলতে এগিয়ে চলল।
চাইনীজ?
একই রকম আচরণ।
আই এম ইউর ফ্রেন্ড। আর ইউ স্টুডেন্ট?
তারা আচরণ পরিবর্তন করল। কিন্তু সেটা ছিল এরকম- চোর কে দৌড়াইয়া বাটপারী করতে আইছে। বুঝলাম বাংলাদেশীদেরকে, অন্তত স্ট্রীট মানুষজনকে তারা এভাবেই ট্রিট করছে (জানিনা হয়ত আমার বোঝার ভুল)। খারাপ লাগলো, খুব, সেই সাথে অপমানও। ফিরে এলাম অফিসে। ভুলে যাবার চেষ্টা করলাম। ভুলতে পারছিনা। তাই কাজ ফেলে লিখতে বসলাম ব্লগে। যদি মন খারাপটা কমে...।
আচ্ছা, বাংলাদেশের এইরকম ইমেজটা কি আপনাদের আপমান লাগেনা, নাকি আমি ইগো প্রবলেমে ভুগছি। কেউ কি শেয়ার করবেন।