somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ভন্ড (বিজ্ঞানী)

০২ রা জুন, ২০০৯ রাত ৩:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ থেকে সাত বছর আগে বিজ্ঞানী মহল কেপেঁ উঠেছিল এক ভন্ড গবেষকের জোচ্ছুরিতে। তার নাম হেন্ড্রিক সন (Jan Hendrik Schön) । পৃথীবি বিখ্যাত বেল ল্যাবের ইতিহাসে এমন ঘটনা আর ঘটেনি। বেল ল্যাবের সুনাম প্রায় যায় যায়। এখনো বিজ্ঞানীরা হেন্ড্রিক সনের জোচ্ছুরি নিয়ে উদহারণ দেয়। এই ঘটনার পরে সারা বিশ্বের গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো গবেষনার জন্য নতুন নীতিমালা তৈরী করতে বাধ্য হয়।

হেন্ড্রিক সন একজন জার্মান বিজ্ঞানী । ডক্টোরেট ডিগ্রী পান বিশ্ববিখ্যাত জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় University of Konstanz থেকে। ১৯৯৮ সালে তিনি যোগ দেন বিশ্ববিখ্যাত বেল ল্যাবে, যেখানে সেমিকন্ডাক্টর ট্রান্সিস্টর প্রথম আবিস্কৃত হয়।

জোচ্ছুরি ধরা খাওয়ার আগে পর্যন্ত হেন্ড্রিক সন ছিল একজন সুপার স্টার বিজ্ঞানী। ২০০১ সালে তার শুধু নেচার এবং সাইন্স জার্নালেই প্রকাশিত হয় আটটি নিবন্ধ। যারা বিজ্ঞানের লাইনে আছেন তাদের বলতে হবে না এই দুই জার্নালের কথা। অন্যদের জন্য এখানে বলে রাখা ভালো যে, এই দুই জার্নালে নিবিন্ধ প্রকাশ করা সবচেয়ে কঠিন। পৃথীবির শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীরা সাধারনত তাদের শ্রেষ্ঠ কাজগুলো এই জার্নালে প্রকাশ করে । অন্যসব জার্নালের হেন্ড্রিক সনের নিবন্ধের সংখ্যা ধরলে, হেন্ড্রিক সন প্রতি ৮ দিনে একটি প্রথম শ্রেনীর নিবন্ধ প্রকাশ করছিল।

হেন্ড্রিক সনের গবেষনার ক্ষেত্র ছিল পদার্থ বিজ্ঞান, ম্যাটেরিয়াল সাইন্স এবং ন্যানোটেকনলজি। আরো বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে অর্গানিক (জৈব) ফিল্ড ইফেক্ট ট্রান্সিস্টর, সুপারকন্ডাক্‌টর এবং সেমিকন্ডাক্‌টর। স্বপ্নের মতো সব আবিস্কার। প্রতিটি আবিস্কারই ছিল পৃথীবিতে বৈজ্ঞানীক বিপ্লব ঘটানোর মতো ক্ষমতাশীল। পৃথীবি বড় বড় সব গবেষণা প্রতিষ্ঠান এই সব আবিস্কার নিজেদের ল্যাবে করে দেখার জন্য সমস্ত শক্তি নিয়োগ করেছিল। বহু বিজ্ঞানী তাদের মূল্যবান সময় এবং বহু রাষ্ট্র কোটি কোটি ডলার খরছ করেছে হেন্ড্রিক সনের আবিস্কার পুনরুৎপাদন করতে। কিন্তু ফলাফল শূন্য।

২০০১ সালের শেষের দিকে গবেষকদের মনে ধীরে ধীরে সন্দেহ দানা বাধতে শুরু করে, যখন কোণ গবেষকই হেন্ড্রিক সনের আবিস্কার পুনরুৎপাদন করতে পারেনি। কিন্তু হেন্ড্রিক সন ছিল বড়ই ধুরন্দ্বর। যখনই তার আবিস্কার নিয়ে প্রশ্ন করা হতো, সে আরো নতুন উপাত্ত দেখাত যা তার আবিস্কারকে স্বমর্থন করে।

হেন্ড্রিক সন কম্পিউটারে গানিতিক পদ্দ্বতি প্রয়োগে ছিল সিদ্দ্বহস্ত। তার সমস্ত জগৎ কাপানো আবিস্কার ছিল কম্পিউটারে গাণিতিক মডেল ব্যবহার করে। হেন্ড্রিক সন প্রথমে ঠিক করতো বিজ্ঞানীরা কোন ফলাফল আবিস্কারের জন্য ব্যস্ত । তারপর সে পিছনের দিকে ক্যলাকুলশান করে সেই বৈজ্ঞানীক আবিস্কার দাবী করতো ।

২০০২ সালে হেন্ড্রিক সনের সমস্ত জালিয়াতির প্রমান হয়ে যায়। বেল ল্যাব থেকে বিতারিত হয়। পালিয়ে যায় জার্মানীতে। University of Konstanz তার ডক্টরেট ডিগ্রি কেড়ে নেয়। এখন কেউ জানে না হেন্ড্রিক সন কোথায়। ধারনা করা হচ্ছে জার্মানীর কোন ইঞ্জিনিয়ারং কোম্পানিতে আছে। তবে এটা সত্য, হেন্ড্রিক সন ছিল এই পৃথীবি সের বদ্দ্বিমানদের একজন। বুদ্দ্বি না থাকলে সারা পৃথীবিকে এমন ঘোল খাওয়ানো সম্ভব হতো না। তাকে বলা হচ্ছে এই সতাব্দীর সবচেয়ে বড় প্রতারক। মানুষ সাফল্যের শীর্ষে উঠার জন্য কতো কিছুই না করে। হেন্ড্রিক সনের জালিয়াতিও মানুষ স্মরন রাখবে যতদিন এই পৃথীবিতে বিজ্ঞান গবেষনা থাকবে।

আরো লিংক
ফিজিক্স ওয়ার্ল্ড
উইকি
নেচার

১৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×