ঝর্না বেগম, আমার মধ্যে ও মানবতা ছিল। আমারও মহৎ হবার ইচ্ছা ছিল।
কিন্তু .........
কোন এক রাতে মারামারিতে আহত এক লোককে আপনার(ঝর্না)মতো আমি ও হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম(তখনও জানতাম না যে, আহতের বন্দ্বুটি ঐ মারামারিতে নিহিত হয়েছেন)। ফলাফল ছিল কি জানেন? পুলিশ আমাকে আসামী বানালো। আহত লোকটিকে পুলিশ ভয় পর্যন্ত দেখিয়ে ছিল যে, আমার নাম যেনো বলে; আর তাহলেই পুলিশ আমাকে আসামী বানাবে। ভাগ্য ছিল ভালো, আল্লাহ আহত লোকটিকে হেদায়েত করেছিলেন; আর আমাকে করেছিলেন দয়া। পুলিশের শত ভয় ভীতি দেখানোর পরও আহত লোকটি আমাকে জড়িয়ে কোন কথা বলতে রাজী হয়নি। তাতেও কি রক্ষা পেয়েছিলাম? না, পাইনি। পুলিশ আমাকে আসামী বানালোই।দুই বছর এই মামলায় দৌড়ানোর পর অবশেষে খালাস পাই। আর এই দুই বছরে আমাকে জামিন বাতিল করে ২ বার জেলে যেতে হয়েছিল, পালিয়ে থাকতে হয়েছিল। তার চেয়ে করুন, ঐ পালিয়ে থাকার সময়ে আমার ছোট ভাই মারা যায় এবং আমি কাছে থাকতে পারিনি।
আর পুলিশ কি করলো, "জজ মিয়া নাটকের মতো" ৮টি নির্দোষ ছেলেকে ফাসায়।যাদের অনেকেরই ৩ থেকে ৭ বছরের সাজা হয় এবং সাজা খাটতে হয়েছিল।
সেদিন যখন দেখলাম হরতালে আহত পুলিশ সদস্যকে পরম মমতায় আপনি হাসপাতালে নিয়ে গেছেন, আপনার মহানুভবতায়,মানবতার ডাকে বুক আমার ভরে গেছে। এমন এক সময় যখন আপনি আপনার সন্তানের কথা না ভেবে মানবতার কাজ করেছেন।
সেদিন যখন দেখলাম সিটি মেয়র আপনাকে সম্মান দিয়েছেন, আমার বুকটা ভরে গেছে।
সেদিন যখন দেখলাম পুলিশের আইজির পার্শ্বে আপনাকে বসানো হয়েছে এবং ক্রেস্ট দেয়া হয়েছে, বিশ্বাস করুন আমি অনেক খুসী হয়েছি।
কিন্তু ঝর্না বেগম, আপনার ভাগ্য আমার চেয়ে অনেক ভালো! ঐদিন যদি পুলিশের জায়গায় আহত লোকটি বিএনপি, জামাত, আওয়ামী লীগ বা সাধারন কোন মানুষ হতো? একবার ভেবেছেন কি অবস্হা হতো আপনার?উকিল-মহুরী, হাজত, জেল, থানা-পুলিশ, আদালত, রিমান্ড কোন কিছুই বাদ থাকতো না। নাহ, আল্লাহর অশেষ রহমতে তা হয়নি আপনার বেলায়।
ঝর্না বেগম আপনি মায়ের জাত, নিজের সন্তানের কথা চিন্তা না করে আপনি আহত পুলিশ সদস্যকে পরিচর্যা করে হাসপাতালে নিয়েছেন।আপনি সত্যি বীর।আপনাদের মতো মানুষ আছে বলেই পৃথিবী এখন ও চলছে।
আমি? আমি কাপুরুষ। আমাকে দিয়ে অন্ততঃ এধরনের মানবতা জ্ঞানত আর হবে না।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


