মিজানুর রহমান : বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সহিংসতার জন্য সরকারই দায়ী বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের লেখক, গবেষক এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব স্টিফেন লিন্ডম্যান। বাংলাদেশের সরকার মানুষকে ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষেপিয়ে তুলেছে। ফলে মানুষ এখন সরকারের অন্যায় আচরণের জবাব দিতে সহিংসতার পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে। বাংলাদেশের এই সহিংসতা ক্রমে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। প্রেস টিভি
যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বিচারের তৃতীয় রায় দেওয়ার পর এ সংঘাত আরও তীব্র আকার ধারণ করে। হাজার হাজার মানুষ রা¯ত্মায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। সরকার সেই বিক্ষোভ দমন করতে গিয়ে শতাধিক মানুষ হত্যা করে। এই প্রেক্ষিতে প্রেস টিভি স্টিফেন লিন্ডম্যানের একটি সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকার নেয়।
শিকাগোর বিশেষজ্ঞ লিন্ডম্যানের সাক্ষাৎকার হুবহু তুলে ধরা হলো।
প্রেস টিভি: মি. লিন্ডম্যান আপনি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিকে কতটুকু গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করেছেন? চলমান পরিস্থিতি কি বাংলাদেশকে আরও অস্থিরতার দিকে ঠেলে দেবে?
লিন্ডম্যান: আমার মনে হয় বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি সামনের দিনগুলোতে অপরিবর্তিত থাকবে। কয়েকদিন থেকে একই প্রবাহে আন্দোলন চলছে। এর ফলে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের রাজনীতি জটিলতার মধ্যে পড়বে। জামায়াত বাংলাদেশের প্রধান এবং সবচেয়ে বড় ইসলামী দল। বিএনপি প্রধান বিরোধীদল। তাদের দমন করতে সরকার যে নীতি গ্রহণ করেছে এটা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় অকল্পনীয়, অগ্রহণযোগ্য। বাংলাদেশে এখন যে শাসন চলছে এটাকে পুলিশি শাসন ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না।
প্রেস টিভি: তার মানে আপনার কি মনে হয় বাংলাদেশে বিরোধি নেতাদের যেভাবে গ্রেফতার এবং নির্যাতন করা হচ্ছে এটা চলতেই থাকবে? এটাকেই কি আপনি পুলিশি রাষ্ট্র বলছেন?
লেন্ডম্যান: হ্যাঁ, আমি আসলে তা-ই মনে করি। আমার মনে হয় দমনপীড়ন আরও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এবং এটা অব্যাহতভাবে চলতেই থাকবে হয়তো। বাংলাদেশ এখন বসবাসের জন্য এক ভয়ানক দেশ! এখানে প্রতিনিয়ত লঙ্ঘন করা হচ্ছে মানবাধিকার। সাধারণ মানুষ এতে বিরক্ত হচ্ছে। তারা সাহসী হয়ে উঠছে এবং সিদ্ধাšত্ম নিতে বাধ্য হচ্ছে চলমান অবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর। ফলে তারা আন্দোলনে সম্পৃক্ত হচ্ছে। আপনি হয়তো সংঘাতের পথ পছন্দ করবেন না। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এখন ওই পথটাই বেছে নিয়েছে। ফলে মানুষ নিজেকে অবরুদ্ধ মনে করছে এবং তারা চাইছে মুক্ত হতে। ফলে তারা ইটের বদলে পাটকেল মারছে।
দৈনিক আমাদের সময়