ঢাকার শহরের প্রায় নব্বই শতাংশ অধিবাসী ভাড়ায় থাকে। বাড়িওয়ালাদের কাছে প্রায় জিম্মি আমরা অনেকেই। ভাড়া বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে প্রায়ই মালিক ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে দন্ধ সংঘাতের খবর পত্র পত্রিকায় আমাদের চোখে পড়ে। তেমন কোন জবাবদিহিতা না থাকায় বছর বছর বাড়ির মালিক ইচ্ছে মত ভাড়া বৃদ্ধি করছেন। তার সাথে বাড়ছে সার্ভিস চার্জ (দারোয়ানের ভাড়া, পানির মটর বিল, ওয়াসা বিল, ভবনের বিদ্যুৎ বিল, দারোয়ারের রান্নার জন্য গ্যাসের চুলার বিল, ভবনের সিঁড়ি ঝাড়ুদারের বিল) ।
১৯৯১ সালে সরকার যে বাড়িভাড়ানিয়ন্ত্রন আইন জারি করেছিলো তা পুরোপুর কারা কোথায় কার্যকর করছে তা খোদায় মালুম ।
ঐ আইনের ১০ ধারায় বলা আছে-
“(ক) ভাড়ার অতিরিক্ত কোন প্রিমিয়াম, সালামী, জামানত বা অনুরূপ কোন অর্থ দাবী বা গ্রহণ করিতে বা প্রদানের জন্য বলিতে পারিবেন না, অথবা
(খ) নিয়ন্ত্রকের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে, অগ্রীম ভাড়া হিসাবে এক মাসের ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা দাবী বা গ্রহণ করিতে পারিবেন না৷ ।’’
কিছু কিছু এলাকার বাড়িভাড়া নিতে হলে অগ্রীম হিসাবে দুই/তিন মাসের ভাড়া কোন কোন ক্ষেত্রে থোক টাকা এক লাখ/দুই লাখ নেবারও নজির আছে। অথচ আইনের ২৩ ধারা অনুযায়ি “মানসম্মত ভাড়ার অতিরিক্ত আদায়কৃত টাকার দ্বিগুণ পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হবে এবং পরবর্তী প্রত্যেকবারের অপরাধের জন্য উক্ত অতিরিক্ত টাকার তিনগুণ পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় বিধান রয়েছে।
অধিকাংশ বাড়িওয়ালাই আইনকে তোয়াক্কা করেনা । আর কেজানে কেউ কোন দিন এজন্য কোন দণ্ড ভোগ করেছে কিনা।
বাড়ি ভাড়ার এই যন্ত্রনার নির্মম শিকার হচ্ছে গার্মেন্ট সহ বিভিন্ন শিল্প কারখানার শ্রমিক ও নিম্নবিত্ত নামের বিশাল জনগোষ্ঠি। বাড়ছে স্বল্প ও নিম্ন আয়ের অসহায় ভোক্তাদের নাভিশ্বাস।
নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের আয়ের প্রায় অর্ধেকেরও বেশি খরচ হয়ে যায় বাড়িভাড়া দিতে দিতে। তার সাথে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, সহ দৈন্দিন সব জিনিসের দাম বৃদ্ধিতে নাকাল নগরবাসি।
আমরা পেপার পত্রিকায় অনেক সময় মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশের খবর দেখছি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে বলে মনেহয় না।
বাড়িভাড়ার এই নৈরাজ্য কি কেয়ামত পর্যন্ত চলতে থাকবে?
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৫৫