প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই দেখি পাতা ভরা হত্যা ছিনতাই,চুরি ডাকাতির মতো অপরাধগুলো ক্রমশ বেড়েই চলছে। তীব্র হয়ে উঠছে এসব সামাজিক অপরাধগুলি।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় প্রতিদিন যতোগুলো অপরাধ ঘটে তার বেশিরভাগ আবার মামলা পর্যন্ত গড়ায় না। ভুক্তভোগীরা মামলা করে ঝামেলায় জড়াতে চান না। আবার অনেক ভুক্তভোগীর ধারনা মামলা করে প্রতিকার পাওয়া যাবেনা।
যদিও গত কয়েক বছরে দেশে রাজনৈতিক খুনাখুনির ঘটনা কমে গেছে। কিন্তু আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে অন্য সব সামজিক অপরাধ।
সন্তানের হাতে বাবা খুন, স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন অথবা ভাইয়ের হাতে ভাই খুন এমন সংবাদ এখন যেন সাধারণ বিষয়ে পরিনত হয়ে গেছে। পাশাপাশি শিশু হত্যা, শিশু ধর্ষণ/বলাৎকার, গন ধর্ষণ, পারিবারিক কোন্দল, নারীর প্রতি সহিংসতা, কিশোর গ্যাংয়ের দোরত্ন্যও কম না।
দেশে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা বাড়লে অপরাধ কমে এবং অর্থনৈতিক দুর্বলতার সময় অপরাধ বেড়ে যায় এটা বেশ লক্ষনীয়।
যেমনঃ পৃথিবীতে সবচাইতে কম অপরাধ সংঘটিত হয় সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, জাপান, ফিনল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসের মতো উন্নত দেশে। আবার বিশ্বের বেশি অপরাধ সংঘটিত হয় পাপুয়ানিউগিনি, জ্যামাইকা, দক্ষিণ আফ্রিকা, হন্ডুরাস, আফগানিস্তানের মতো অনুন্নত দেশ সমুহে।
গত বছর জুলাইয়ে দেশের একটি প্রথম সারির দৈনিকে অপরাধের নিম্নোক্ত চিত্র প্রকাশ করে ছিলো
গুরুতর অপরাধ থেকে মানুষকে নিবৃত রাখতে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগের বিকল্প নেই মনে করলেও এ্যামেনেষ্টির তথ্য মতে ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালের মৃত্যু দণ্ডে দণ্ডিতের সংখ্যা বেড়েছে ৬৮ জন। তার মানে মৃত্যুদণ্ডের মতো সর্বোচ্চ দণ্ড প্রয়োগ করে অপরাধ নির্মুলের ধারনাও ফিকে হয়ে আসছে পৃথিবীতে।
এই অপরাধ প্রবনতা কমিয়ে আনতে হলে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি পারস্পরিক সহযোগিতা, নৈতিকতার বিকাশ, মানবিক মুল্যবোধ জাগ্রত করা, সংস্কৃতিক চর্চা বাড়ানো, খেলাধুলার পরিবেশ সৃষ্টি করা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের (ফেজবুক, ইউটিউব, টিকটক, টুইটার) নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং বাড়ানোর প্রতি বিশেষ ভাবে নজর দেয়াও অতি জরুরি।
করোনা পরবর্তী অবস্থা সাথে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের অর্থনৈতিক ধাক্কা সামাল দিয়ে দেশের ঊর্ধমুখি অপরাধের লাগাম টানা এখন বিরাট চ্যালেঞ্জ।
ছবিঃ অন্তর্জাল এবং দৈনিক প্রথম আলো।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:০৭