আমাদের দেশে বিনোদনের বড্ড বেশি অভাব, তাই সবাই কিছু না কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চায়; অবশ্যই সেই ব্যস্ততায় থাকতে হবে অপার বিনোদন। সেই রকম একটা বিনোদনী ব্যস্ততা হলো ক্ষমতালিপ্সু, অর্থখোর, দুর্নীতিবাজদের সমালোচনায় মত্ত থাকা। আর উল্লিখিত চরিত্রের মানুষগুলো রাজনৈতিক ভ্রূণ থেকে জন্ম গ্রহণ করে। তাই আমরা যদি রাজনীতিতে কখনও কোন ভালো মানুষ পেয়ে থাকি সেটা আমাদের জন্য হবে বড়ই বেদনাদায়ক। এবং আমরা তা বেশিদিন সহ্য করতে পারবো না কারণ ভালো মানুষকে সহ্য করলে আমাদের বিনোদন নষ্ট হয়ে যাবে। আর এহেন বিনোদনী ভাঁড়দের কেবল মাত্র আওয়াম লীগ ও বিএনপি জোটই জন্ম দিতে পারে। তাই ঘুরে ফিরে তাদেরকেই আমাদের ক্ষমতায় আনতে হবে।
আমাদের দেশে সিনেমা হলগুলো এখন প্রায় বিলুপ্ত, খেলার মাঠে খেলাও অনেকটা বিলীন; যাত্রাপালা নেই, গাজীর গান আর শোনা যায় না। ওয়াজ-মাহফিলে ভিড় থাকলেও মসজিদগুলো অনেকাংশেই ফাঁকা পড়ে থাকে। জেলা শহরের পাবলিক লাইব্রেরিগুলো যেন বিলুপ্তির পথে। কবিতা বা সাহিত্যের চর্চা তো প্রায় হারিয়েই গেছে; জেনারেশন-জি মিনি সিলভার স্ক্রিনে চোখ রাখতে রাখতে অসার হয়ে গেছে; মানুষ এখন ৩০ সেকেন্ডের রিল ভিডিওতে চোখ আটকে রাখাটা মুল কাজ মনে করে, তাই সেখানেও বিনোদন অবশিষ্ট্য নেই। বিনোদনের যা কিছু অবশিষ্ট আছে, সেগুলোও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বেদনাদায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে; রাজনীতি ও পরচর্চা ব্যতিত।
তাই রাজনৈতিক অস্থিরতার পরচর্চা এদেশে খুব দরকার, দুর্নীতিবাজরা না থাকলে বিনোদন খরায় আমরা হা-হুতাশ করে মরবো। লক্ষ-কোটি টাকার পাচারে গল্প না থাকলে আমরা যৌন ক্ষুদার মত বিনোদন ক্ষুদায় মৈথুন করবো। আমরা অন্নের অভাবে এক-আধবেলা না খেয়ে থাকতে পারবো কিন্তু রাজনৈতিক বিনোদন ছাড়া থাকতে পারবো না; বাঁচতে পারবো না। তাই আমি বলবো এ দেশে রাজনৈতিক সমস্যা না থাকাটা বিরাট সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৩২