somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাদশা পয়গম্বর ও এক বৃদ্ধা

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একদিন এক বৃদ্ধা বাজার থেকে আটা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ হাওয়া এসে তার আটাগুলো উড়িয়ে নিয়ে যায়।
গরীব বৃদ্ধা উপায়ন্ত না পেয়ে আল্লাহর পয়গম্বর বাদশার দরবারে গেলেন হাওয়ার বিরুদ্ধে নালিশ নিয়ে। বাদশা হাওয়ার বিরুদ্ধে নালিশ শুনে হেসে ফেলে বললেনঃ এ তোমার কেমন ফরিয়াদ? হাওয়া কি আমার তাঁবেদার যে তার থেকে তোমার আটা আদায় করবো।

এই বলে রাজভান্ডার থেকে কিছু আটা দিয়ে তাকে বিদায় করলেন। পথে ৭ বছরের বাদশা পুত্র বৃদ্ধাকে দেখে বললেনঃ ও বুড়ি মা তুমি কি নালিশ দিলে আর কি বিচার নিয়ে যাচ্ছো.?
বৃদ্ধা তাকে সবকিছু খুলে বললো। শুনে বাদশা পুত্র বললোঃ এটা কোন বিচার হলো, তুমি রাজ দরবারে
ফিরে যাও আর বলো আমি এই আটা নিবো না। আমি হাওয়ার কাছ থেকেই আটা নিবো। বৃদ্ধা তাই করলো। এবার বৃদ্ধার আর্জি শুনে বাদশা মনে করলো হয়তো বৃদ্ধা আরো কিছু আটার জন্য এই বুদ্ধি আটছে। তাই এবার বৃদ্ধাকে ১মন আটা দিয়ে শান্ত করলো।

বাদশা পূত্র এবারো বৃদ্ধাকে বললেনঃ বুড়ি মা.. এবার তো তুমি অন্যায়ই করে ফেললে। তোমার তো ১মন আটা যায় নাই। তুমি অন্যের হক নিয়ে যাচ্ছো, পারবে ওপারে এর জবাব দিতে.?

বৃদ্ধা বাদশা পুত্রের কথায় ঘাবরে গেলেন এবং আবারো ফিরে গিয়ে পূর্বের আর্জি পেশ করলেন। বাদশা এবার বুঝে ফেললেন যে বৃদ্ধা অন্য কারো বুদ্ধিতে এমনটা করছেন। বাদশা বৃদ্ধার কাছ থেকে সবকিছু জানতে চাইলেন। সবকিছু শুনে তার পূত্রকে ডেকে বললেনঃ কি ব্যাপার বাবা তুমি এমন কেনো করছো? তুমি আসলে কি চাও?
বাদশা পূত্র বললোঃ আব্বা হুজুর আপনি তো আল্লাহর পয়গম্বর, আপনি আল্লাহর কাছে আরজ করে হাওয়াকে হাজির করান এবং জিঙ্গাসা করেন কেনো তিনি এমন করলেন..।
বাদশা তখন আল্লাহর দরবারে হাত তুলে আবেদন করলেন। সাথে সাথে হাওয়া সামনে হাজির হলেন। বাদশা তখন হাওয়ার কাছ থেকে কারন জানতে চাইলেন।
উত্তরে হাওয়া বলতে শুরু করলেনঃ হে আল্লাহর পয়গম্বর আমি যা করেছি আল্লাহর হুকুমেই করেছি। মাঝ দরিয়ায় একটি জাহাজ তলা ফুটো হয়ে ডুবে যাচ্ছিলো। জাহাজের মালিক তখন আল্লাহর কাছে আরজ করলো,
যদি জাহাজটা আল্লাহর কৃপায় রক্ষা পায় তবে জাহাজের সব মাল গরীব দুঃখিদের দান করবেন। আল্লাহ তার দোয়া মঞ্জুর করে আমাকে হুকুম করলেন বৃদ্ধার আটা দিয়ে জাহাজটি ঠিক করে দিতে। আমি তাই করেছি এবং জাহাজটিকে রক্ষা করেছি। বাদশা সব শুনে বৃদ্ধাকে জাহাজ তীরে ভিড়ানো পর্যন্ত সবর করতে বললেন। কিছুদিন পর বাদশার কাছে খবর এলো জাহাজ ভিড়েছে। এখন জাহাজের মালিকের ইচ্ছে, আল্লাহর পয়গম্বর বাদশা (আ) কে দিয়েই মালামাল বিলিয়ে দেবেন।

বাদশা আল্লাহর আদেশে অর্ধেক মালামাল গরীব মিসকিনদের মধ্যে আর বাকি অর্ধেক আটা হারানো সবরকারি সেই বৃদ্ধাকে দিলেন।
বৃদ্ধার প্রতি আল্লাহর এই নেক নজর দেখে বাদশা বৃদ্ধাকে বললেনঃ তুমি এমন কি এবাদত করেছো যে আল্লাহ তোমাকে এত ধন সম্পদের অধিকারিনী করলেন।
বৃদ্ধা বললোঃ আমি এমন কিছুই করি নাই, তবে সেদিন যে আটা হাওয়ায় উড়িয়ে নিয়ে ছিলো সেটা একজন ভুখা মেহমানের জন্য ছিলো। ঐ দিন এক ভুখা মেহমান এসেছিল। ঘরে একটি মাত্র রুটি ছিলো সেটাই দিয়েছিলাম কিন্তূ তাতে ঐ মেহমানের ক্ষূধা মিটে নাই। তখন সেই ভুখা মেহমানের ক্ষূধা মিটানোর জন্যই বাজার থেকে আটা আনতে গিয়েছিলাম। কিন্তূ হাওয়া উড়িয়ে নেওয়ার কারনে সেদিন ঐ ভুখা মেহমানের ক্ষূধা মিটাতে পারি নাই। এতে আমি খুব কষ্ট পেয়েছিলাম...

বাদশা বলনেনঃ হ্যাঁ ক্ষুধার্ত ব্যক্তিকে আহার দেওয়া এবং তার ক্ষুধা পুরাপুরি মিটাতে না পেরে তোমার মনের অনুশোচনা দেখে আল্লাহ খুশি হয়ে তোমাকে এত ধন সম্পত্তি দিলেন।

বিঃদ্রঃ সেই বাদশা পয়গম্বর হলেন আল্লাহর নবী হযরত দাউদ (আ) আর ৭ বছরের সেই বাদশা পুত্র হচ্ছে হযরত সুলায়মান (আ)।

(সংগৃহিত)
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১১
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×