অনেক অপেক্ষা আর সাধনা পর সবার মাঝে এলো আদরের ধন- আদনান। বাবা-মা খুশি, নতুন রূপ সাধন হওয়াতে; দাদা-দাদু খুশি, নাতী এসে দাদা-দাদু হওয়ার সুবাদে।
রাত আনুমানিক ২.৩০ মি.- গভীর রাত। সবার ঘুম ভেঙ্গে গেল। বাবা-মা চেঁচামেচি করছে। বাবুর কি হলো, বাবুর কি হলো? অনেক চেষ্টার পর কান্না বন্ধ হলো। প্রায় সময় রাত-দিন এমন হঠাৎ হঠাৎ বাবুর কান্নায় বাব-মা অস্থির হয়ে যায়। অনেক ডাক্তার দেখানো হলো। কোন কাজে আসছে না। কখনো জ্বর-সর্দি, কখনো নিমোনিয়া, কখনো আবার পেটে সমস্যা; সাথে কান্নার আওয়াজ সবাইকে হাঁপিয়ে তুলছে। সবাই বেশ চিন্তিত। অনেক টাকা-পয়সা খরচ হয়ে যাচ্ছে; কোন ফলপ্রসু হচ্ছে না। বিদেশে নিয়ে যাওয়ারও প্রচেষ্টা করছে সবাই। অবশেষে চিকিৎসা শেষে ফিরে আসে দেশে।
প্রতিনিয়ত ভাল ফল-মূল ঘরে আসে; ভালো খাবার-দাবার হয়। ভালো পোশাক-আশাক; জুতা জোড়ার স্তুপ। বাব-মার কপালে ঠিকমত জোটে না ভালো খাবারের অংশ বা কোন ফলমূল। জোটে না নূন্যতম কাপড়-চোপড়। জোটে শুধু অসহায়ত্বের কালো ছাউনি।
বৃদ্ধ বাবা-মা ঘরে সামান্য অসুখে ভোগছে; সেক্ষেত্রে কোণ খোঁজ খবর নেই। বাবা-মা সন্তানের কাছে নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করছে কাকুতি-মিনতি স্বরে। যখন সন্তান থেকে অপ্রলাপ পায়- আমি ছাড়া কি আপনাদের আর সন্তান নেই; শুধু আমার কাছেই বলেন?
মনের মাঝে কষ্ট দানা বেঁধে যায়। বোবা কান্না মুখে ভর করে। মনের ভিতর বেজে উঠে- “আহ! তুই যেমন তোর ছেলের জন্য এত চেষ্টা করিস; এত কষ্ট করিছ, আমরাওতো তোর জন্য এমনই করেছি। দিন নাই, রাত নাই; কষ্টের সংসারে তোকে কষ্ট করে লালন –পালন করেছি। আজ তুই আমাদের ভূলে যাওয়ার মত হয়েছিস”। কষ্টের দানার আঘাতে হু-হু করে চোখ দিয়ে পানি চলে আসে।
এমন অসংখ্য ঘটনা ঘটে যায় আমাদের চোখে সামনে। যা নির্বোধ এই বিবেক সাড়া দেয়না। চিৎকার দিয়ে কান্না আসে। সবার বিবেকের কাছে প্রশ্ন করা হলে-
সামান্য প্রচেষ্ঠা হতে পারে বাবা-মার পক্ষ থেকে নিজের জন্য কিছু পাওয়া- আর্শীবাদ (দোয়া)।
আসুন সবাই বাবা-মার সেবা-শশ্রুষার জন্য মহান প্রভূর কাছে প্রার্থণা করি।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৫