somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আলমগীর জনি
সূর্য থেকে অসম্ভব শক্তিশালী আলোকরশ্মি চাঁদের উপর পড়ে। সে চাঁদ কিছুদিন জোছনা বিলায় আমাদের মাঝে।অমাবস্যায় কেউ চাঁদকে ভুলে যায় না।অপেক্ষা করে জোছনা ফিরে আসার ।সূর্য না হই ,মাঝে মধ্যে জোছনা হতে চাই।অমাবস্যায় হাহাকার হতে চাই মানব মনে।

ক্ষুধার অন্ধকার রাজ্য

২৬ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার বন্ধু-বান্ধবদের ধারণা আমার মাথায় সবসময়ই খাবারের চিন্তা ঘুরে।ধারণাটা প্রায় সত্য। শারীরিকভাবে মোটা ঘরনার মানুষগুলো খাবার নিয়ে চিন্তা করবে এটাই স্বাভাবিক। করোনা ভাইরাসের যুগে আমাকে যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে সেটা হচ্ছে খাদ্য।

আমার বা আমার পরিবারের জন্য মোটামুটি পরিমাণ খাবার আছে।যতটুকু মহান আল্লাহ রিজিকে রেখেছেন তা হয়তোবা খেতে পারব।আর রিজিকে না থাকলে তো কিছু করার নাই।

আমি যেটা ভাবছি এদেশের একটা বড় অংশ এমনিতেই খাবারের অভাবে থাকেন। অনেকেই দিনে আনে দিনে খান।এখন দিনটাই যদি বন্ধ হয়ে যায় এসব মানুষ খাবেন কি? গতকাল একটু বের হয়েছিলাম। বাজারের তরকারি বিক্রেতার মুখে হাসি নাই। চোখে মুখে শত চিন্তা।ফুট ওভার ব্রীজ দখল করে রাখা হাত পা ছাড়া ভিক্ষুকটা কেমন জানি নির্বিকার। রাস্তার হকার একটু পর পর গুনছে ঠিক কত টাকা হলো। যে মুচি আমার পুরোনো জুতা জোড়া বারবার রং করে দিয়ে নতুন জীবন দান করেছেন সে কিছু চাল,ডাল আর আলু কিনে আগেই নিজের পাশে রেখে দিয়েছেন। সে আঁচ করতে পারছে কাল থেকে আর কেউ হাটঁতেই বের হবে না। আর জুতা রং করে বা সেলাই করে কি হবে? সোশ্যাল মিডিয়া ব্যাবহার করলে সে হয়তো ভালো করেই জেনে যেতো এখন চলছে হ্যাশট্যাগ #StayHome আর #Workhome. এই স্টে হোম আর ওয়ার্ক হোম হ্যাশট্যাগ সম্ভবত তারাই দিচ্ছে যাদের সাথে এই দুইটার প্রায় কোনটারই যোগাযোগ নাই। যারা ঘরে বসে থাকলেও খাবার পাবেন।

যারা হ্যাশট্যাগগুলো দিচ্ছেন বা সবার কাছেই আমার কিছু অনুরোধ থাকবে।ছোটখাটো অনুরোধ।

১. আপনার বাবা-মাকে বাজারে না পাঠিয়ে আপনি বাজারে যান কারণ উনাদের মৃত্যু ঝুঁকি অনেক বেশি।যদিও উনারা আপনাকে ছাড়বেন না কিন্তু উনাদের ছেড়ে দিলে হয়তো চিরদিনের জন্য ছাড়তে হতে পারে।

২.আশেপাশের মানুষকে আমি না বললেও আপনি দান করবেন।

৩.পরিচিত কোন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধ খাবেন না।

৪.আল্লাহকে ভয় করুন, মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নিন।

এইতো গেলো বর্তমানের চিন্তা। আমি ভাবছি এরচেয়ে একটু সামনে।যা দিয়ে শুরু করেছিলাম আমি।যেখানে দেখতে পাচ্ছি প্রচুর খাদ্য সংকট। কিছুদিন আগের কথা চিন্তা করুন।শুধুমাত্র ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছিল বলে আমাদের দেশে পেয়াঁজের দাম ২০০ ছাড়িয়েছিল। এবার বাকি চিন্তা করুন নিজে নিজে।

এই চিন্তা করতে গিয়ে অনেকেই হয়তো ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেতে পারেন।বলতে পারেন বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটা দেশ। তবে উনাদের কথা আপনি আমি আসলেই বিশ্বাস করি না।

ঐদিন লেবু কিনতে গিয়ে মনে পড়ল এক সময় আমাদের নিজেদেরই অনেকগুলো লেবু গাছ ছিল। আমাদের ভিটায় আমার বাবা অনেক শাক সবজি চাষ করতেন। বাড়ির উঠানে আম্মা শিম,লাউ সহ হাবিজাবি চাষ করতেন।আমরা শহরে বড় হয়ে আম্মাকে বুঝালাম এগুলা বাড়ির সৌন্দর্য নষ্ট করছে।আম্মাও এসব বন্ধ করে দেন। এখন কিছুই করি না আমরা। আজকে চাল শেষ হয়ে গেলে কাল থেকে খাবার বন্ধ যদি না বাজারে চাল পাওয়া যায়। আমাদের ব্যাক্তি পর্যায়ের পরনির্ভরশীলতাটা কতটা প্রকট হয়ে গেছে বুঝা যাচ্ছে?

এটা হলো গ্রামের গল্প।শহরের অবস্থা আরো ভয়াবহ।নিমসার বাজার থেকে সবজি না আসলে কুমিল্লা শহরে কোন সবজি পাবেন না।আর ঢাকার হিসাব বাদই দিলাম। পাবেন কিন্তু অনেক চড়া দামে।যে রিকশাওয়ালা এক ট্রিপ ভাড়া মেরে ৩০-৪০ টাকা কামান সে কি ৬০-৭০ টাকা দাম দিয়ে এক কেজি চাল কিনে খেতে পারবেন?

জানিনা রাষ্ট্র কি ব্যাবস্থা করছে বা করবে।জানিনা আল্লাহ সেসব মানুষের কপালে কি রেখেছেন।উনারা যে এখনো রাস্তায় মাস্ক ছাড়াই ঘুরাঘুরি করছেন এবার কারণ বুঝা যাচ্ছে?

ক্ষুধার জ্বালা সবচেয়ে বড় জ্বালা। ক্ষুধায় মৃত্যু যেখানে অনিবার্য, করোনায় মৃত্যুর ভাবনা সেখানে বিলাসিতা।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পরিণতি - ৩য় পর্ব (একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস)

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:২৮



( পরিণতি ৬১ পর্বে'র একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস ।)

তিন


আচানক ঘুম ভেঙ্গে গেলো ।

চোখ খুলে প্রথমে বুঝতে পারলাম না কোথায় আছি । আবছা আলোয় মশারির বাহিরে চারপাশটা অপরিচিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইফতার পার্টি মানে খাবারের বিপুল অপচয়

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৩



গতকাল সরকারি ছুটির দিন ছিলো।
সারাদিন রাস্তাঘাট মোটামুটি ফাকাই ছিলো। ভাবলাম, আজ আরাম করে মেট্রোরেলে যাতায়াত করা যাবে। হায় কপাল! মেট্রো স্টেশনে গিয়ে দেখি গজব ভীড়! এত ভিড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×