somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের আপন বাসগৃহ-৩

২২ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১ম পর্বটি
২য় পর্বটি

পুরো গ্রহ যেন নতুন করে ঢেলে সাজিয়েছে আমাদের আশা আকাঙ্খার আর ইলুশনকে। এ সেই আকাঙ্খা এবং ইলুশন যা তৈরী করছে আমাদের চাহিদার সাথে সাথে পরিমানে বাড়ছে অতৃপ্ত বাসনা এবং অপব্যয়। আমরা জানি একদিন এই সস্তা তেল শেষ হয়ে যাবে, তবে আমরা তা বিশ্বাস করতে পারছি না। আমাদের বেশকিছু মানুষের আমরিকার একটি শহরের নাম স্বপ্নের মত জড়িয়ে আছে।

লস এন্জেলেস। এই শহরটি ১০০ কিলোমিটারের চেয়ে বড় এবং এই শহরে গাড়ীর সংখ্যা প্রায় সমান শহরের বাসিন্দাদের সংখ্যার সমান। এখানে প্রতি রাতে শক্তি একটি অসাধারন দৃশ্য তৈরী করে। রাতগুলো হল দিনের ফ্যাকাশে আলোর মত যা মনে হয় দূরের নক্ষত্রের মত। দ্রুত এবং আরো দ্রুত। দূরুত্ব আর মাইল গণনা করা হয়না বরং তা হয় মিনিটে। অটোমোবাইল গুলো যে নতুন বাড়ীর আবাস্থল যেখানে প্রতিটি বাসা হচ্ছে এক একটি দালান, শহর থেকে নিরাপদ দূরুত্বে এবং যেখানে সারিবদ্ধ ঘর থাকে রাস্তার শেষ পর্যন্ত। এই মডেলটি কছু সোভাগ্যবান দেশে ব্যবহার করলেও টিভির মাধ্যমে তা যে ইউনিভার্সাল স্বপ্নতে পরিনিত হয়েছে। এমনকি বেইজিংও, সেই মডেলটি পুরোপরি নকল করা হয়েছে এবং বিস্ময়করভাবে মানচিত্রে প্যাগোডাকেও স্থান দেওয়া হয়নি। অটোমোবাইল যেন আরাম আর প্রগতির প্রতিক হয়ে গেছে। যদি প্রতি সমাজ এই মডেল কে অনুসরণ করতে শুরু করে তবে ৯০০ মিলিয়নের বেশি গাড়ি হতো না কিন্তু বর্তমানে আছে ৫ বিলিয়নের মত। দ্রুত এবং আর দ্রুত। পৃথিবী যতই উন্নত হচ্ছে ততই তৃষ্ণা বাড়ছে জ্বালানী শক্তির। সবজায়গায় মেশিন খনন করছে ,ছিদ্র করছে, কাটছে এই পৃথিবীর কবর রচনা করছে সৃষ্টির মাধ্যমে....

খনিজ।
শক্তির মতই ৮০% মিনারেল দখল করে আছে বিশ্বের মাত্র ২০% জনগন। এই শতাব্দির শেষ হওয়ার আগেই, মাত্রাতিরিক্ত ব্যয়িত এই মিনারেল গুলো গ্রহের সব মজুদ শেষ করে ফেলবে। দ্রুত এবং আরো দ্রুত। শিপইয়ার্ড গুলো তেলের ট্যাংকার গ্যাসের ট্যাংকার আর কন্টেইনার জাহাজগুলোর সাহায্যে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপি এর শিল্প চাহিদা মেটানোর জন্য। বেশির ভাগ ভোক্তার পন্য ভ্রমন করছে হাজার হাজার কিলোমিটার, উৎপাদক দেশ থেকে মূল ভোক্তার দেশে। সেই ১৯৫০ সাল থেকে বৈদেশিক বানিজ্য ২০ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে বর্তমানে। এবং ৯০ ভাগ দ্রব্যই যায় সমুদ্রপথে। ৫০০ মিলিয়ন কন্টেইনার প্রতি বছর পরিবহন হচ্ছে। এগুলো যাচ্ছে যেখানে প্রচুর থেকে ভোক্তা পাওয়া যায়।

যেমন দুবাই । দুবাই পশ্চিমা মডেলে গড়ে উঠা একটি শহর যেখানে অসম্ভবকে সম্ভব করা হচ্ছে। উদাহরন হিসেবে বলা যায় কৃত্রিম দ্বীপ সাগরের বুকে। দুবাই এ প্রাকৃতিক সম্পদ অনেক কম কিন্তু তেলে বিক্রির অর্থদ্বারা তারা মিলিয়ন মিলিয়ন টন সামগ্রি আর জনশক্তি আনছে সারা বিশ্ব থেকে। দুবাইয়ে কোন কৃষি জমি নেই কিন্তু তার খাদ্য আমদানি করতে পারে। দুবাইয়ে কোন খাবার পানি নেই কিন্তু সে প্রচুর জ্বালানি শক্তি দিয়ে সাগরের পানিকে বিশুদ্ধ করে নিচ্ছে আর পৃথিবীর সবচেয়ে উচু উচু দালানগুলো তৈরি করছে। দুবাইয়ে আছে সূর্যের প্রচন্ড আলো কিন্তু কোন সোলার প্যানেল নেই। এটি হল আধুনিকতার সর্বশেষ সংস্করন যা পৃথিবীকে বিস্ময়ায়িত করছে সব সময়। দুবাই যেন নতুন বাতিঘর পৃথিবীর অর্থ ফলানোর জন্য। মনে হয় যেন প্রকৃতি থেকে দুবাইই কিছুই নিচ্ছে না, বরং বাস্তবতা হল প্রকৃতির উপরই দুবাই সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল। এই দুবাই হল পশ্বিমা মডেলে এক নিদর্শন। আমরা এখনও বুঝতে পারছি না কি আমরা নষ্ট করে চলেছি যা প্রকৃতি আমাদের দেয়। ১৯৫০ সাল থেকে মাছধরার পরিমান বড়েছে পাচঁগুন , তা ১৮ থেকে ১০০ মিলিয়ন মেট্রিকটন প্রতিবছর। হাজার হাজার জাহাজ সমুদ্রেকে খালি করে যাচ্ছে।
পৃথিবীর তিন চতুর্থাংশ মাছ হ্রাস পেয়েছে বা চরম ক্ষতির মুখে আছে। সবচেয়ে বড় মাছগুলো ধরা হয়েছে আরো পুনরায় উৎপাদন হওয়ার আগেই । আমরা তাদের জীবন চক্রকে নষ্ট করছি যা আমাদের জন্য দেওয়া হয়েছে। বর্তমান মাছধরার হার অবহ্যত থাকলে মাছের ভান্ডার হুমকির সম্মুখে পড়বে। প্রতি ৫ জনে ১ জন প্রতিবেলা তেই মাছ খায়। আমরা ভুলে গেছি যে এই সম্পদ একদিন শেষ হবে।

৫০০ মিলিয়ন মানুষ পৃথিবীর মরুময় এলাকায় বাস করে, যা পুরো ইউরোপের সমস্ত জনসংখ্যার সমান। তারা পানির মূল্য জানে। তারা জানে এর স্বদব্যবহার। সেখানে তারা পানির ঘাটতি পুরণের জন্য ব্যবহার করে ভুগর্ভস্থ পানি, জমে ছিল ভুতলে যখন এই মরুতে বৃষ্টি হত। ২৫০০০ বছর আগে। এই ভুগর্ভস্থ পানি মরুভুমিতে ফসল ফলাতেও সাহায্য করে যা এই এলাকার মানুষদের আহারের ব্যবস্থা করে। এই এলাকর কৃষি জমি গুলো হয় গোলাকৃতি এবং কেন্দ্রিয় ভাবে পাইপ দ্বারা পানি এবং অন্যান্য বস্তু ছড়ানো হয়। কিন্তু তার জন্য অনেক মূল্য প্রদান করতে হয়। ভুগর্ভস্থ পানি একটি সম্পদ যা পুনরায় পাওয়া যাবে না। সৌদি আরবে , মরুভুমিতে চাষের স্বপ্নটি ম্লান হয়ে গেছে। যদি এটা চর্মের একটি ম্যাপ হত তবে সেখানে আলোর স্পট গুলো পরিত্যক্ত প্লটগুলো প্রদর্শন করত। সেচের যন্ত্রপাতি এখনও সেখানের রযেছে। যে শক্তির মাধ্যমে পানি সেচ করা হয় তাও আছে। কিন্তু ভুগর্ভস্থ পানির সন্ঞয় অনেক কমে গেছে। ইসরায়েল মরুভুমির জমি গুলোকে ফলদায়ী জমিতে পরিণত করেছে। এমনকি এই গরমঘর গুলো প্রতিটি ফোটা পানি খরচ করছে রপ্তানি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে। (চলবে)

(২০০৯ সালে বিখ্যাত মুভি হোম অবলম্বনে লিখা। মুভিটি মানবজাতীর জন্য একটি সতর্ক বার্তা বলেই আমার মনে হয় আর তাই লিখতে শুরু করলাম এই ধারাবাহিক লিখা। সবগুলো ছবি এই মুভি থেকেই নেওয়া।)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নেতানিয়াহুও গনহত্যার দায়ে ঘৃণিত নায়ক হিসাবেই ইতিহাসে স্থান করে নিবে

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:৩৮

গত উইকেন্ডে খোদ ইজরাইলে হাজার হাজার ইজরাইলি জনতা নেতানিয়াহুর সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
দেখুন, https://www.youtube.com/shorts/HlFc6IxFeRA
ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে নেতানিয়াহুর এই হত্যাযজ্ঞ ইজরায়েলকে কতটা নিরাপদ করবে জনসাধারণ আজ সন্দিহান। বরং এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×