somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চুরির ফল!

৩০ শে মার্চ, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের মানুষ আজ সোচ্চার দুর্নীতির বিরুদ্ধে। দুর্নীতি কীভাবে আমাদের জাতীয় জীবনে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে তা আর এখন বলে বোঝাবার প্রয়োজন পড়ে না। দুর্নীতি প্রতিরোধে যেসব সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন, পোস্টার ইত্যাদি তৈরি করা হয়েছে তাতে বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্ট।....
আজ আমি আমার ব্যক্তিগত জীবনে কিছু দুর্নীতির ফলাফল আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।

পর্ব-১
সাদ এর বাবা চাকরি ছাড়া পৃথিবীর আর কোনও কাজই করতে অভ্যস্ত নন। প্রতিদিন অফিসে যান আবার অফিসের গাড়িতে বাসায় ফেরেন। বাসায় ফিরে টি.ভি দেখতে দেখতে, স্ত্রীর সাথে খুনসুটি করে, ঝগড়া করে রাত বারোটার দিকে ঘুমিয়ে পড়েন। মাঝে মাঝে কম্পিউটারে এক আধটু লেখার চেষ্টা করেন, গান শোনেন, ভিডিও দেখেন। বাইরের আর কোনও কাজেই তিনি জড়িত হন না। বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকেন। বন্ধুবান্ধব মানে ছুটিরদিনের রেস্ট-বিপর্যয়। কেউ যদি ফোনে বলে দোস্ত অমুকদিনতো ছুটি, বাসায় বসে কী করবা? আসো একটু বন্ধুবান্ধবরা মিলে গ্যাজাই।...
আরে দোস্ত কী যে বলিস (ভয়ানক হতাশ সুরে..)বিবাহিত জীবন যে কষ্টের! তোর ভাবি প্রত্যেকটা ছুটির দিনই বুকিং দিয়ে রাখে....

কিন্তু এই বুকিং পর্যন্তই। লোকটি তার স্ত্রীকে নিয়েও কোথাও বেড়াতে যায় না। তার নাকি অল্পদূরত্বের ভ্রমণে আকর্ষণ নাই।
তাহলে চলো দূরে কোথাও যাই?
একদিন দুইদিনের ছুটিতে যাবে কোথায় বলো!
ছুটি নেও!
হ্যাঁ এখন ছুটি নিয়ে পাওনা ছুটিগুলো শেষকরি, শেষে কাজের সময় আর ছুটি পাবো না।...কখন কি অসুখ বাধে ঠিক আছে!

সাদ এর বাবার আরও কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। সে মানুষের সাথে খুব দ্রুত বন্ধুত্ব তৈরি করতে পারে। মানুষের উপকার করার সুযোগ পেলে সাধারণত হাতছাড়া করে না। আর সে একটু কিপটে টাইপের লোক। একটা উদাহরণ দিই।... কিপটেমির দুর্নাম ঘুচাতে সে বলে আসলে আমি অপচয় পছন্দ করি না। তো উদাহরণটা হচ্ছে--বাসায় তার এক বন্ধু আসে মেয়ে বন্ধু। মেয়েটাকে সাদ এর বাবা মা একপ্রকার জোরকরেই একটা রাত রেখে দেয়। আর কোনও সমস্যা না হলেও বিপত্তি বাধে সকালে দাঁত ব্রাশকরা নিয়ে। তো লোকটির একটি এক্সট্রা ব্রাশ ছিল বলে রক্ষে। কিন্তু একবার ব্রাশ করে ফেলে দেওয়ার মতো অপচয়তো সে করতে পারে না। মহিলা ব্রাশটা রেখে গেলে কয়েকদিন পর বেটাকে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে লোকটি নিজেই ব্যবহার করতে শুরু করে। স্ত্রীকে বলেছিল, স্ত্রী তেড়ে আসে।

নিশ্চই এখন বুঝতে পারছেন বেচারা কী ভয়ানক হিসেবী!
বাসার বাজার সদাই থেকে শুরু করে চাকরি বাদে আর সব কাজই স্ত্রী করেন। বাজার করে এস প্রতিদিন হিসাবটা ডায়রিতে লিখে রাখতে হয়। মাস শেষে সেটাকে কম্পিউটারে সুন্দরকরে সাজিয়ে রাখা হয়। এই বাজারে ভদ্রমহিলা সবসময় স্বচ্ছতা দেখান না। এবার বাজার করে এসে হিসেব দিলেন চাল চল্লিশ টাকা করে।
কী চাল?
নাজির শাইল!
এতো দাম! হাসিনা চালের দাম কী কমাইলো!
কিছুদিন পর লোকটি বলে আগোরা থেকে চাল কিনে আনো, ওরা ফেস্টুন টাঙিয়েছে, নাজিরশাইল ৩২ টাকা করে।
আরে সেইটা ভালোটা না, দুই নাম্বারটা।
আরেকদিন লোকটি বাসায় এসে বলে নাজিরশাইল নাকি সবচে ভালোটা ৩৬টাকা?
আরে না, দোকানদার আমাকে ঠকাবে না। সে আমার কাছ থেকে কমই রাখে। গিয়ে দেখো হয়ত চাল দুইনম্বরটা কিনেছে।
কী যে বলো যে মাস শেষে বেতন পায় ৫০হাজারটাকা সে খায় দুইনম্বর চাল! আর আমরা অর্ধেকও পাই না খাই একনম্বর! ঠিক আছে তুমি তাহলে দুই নম্বরটাই এনো। অথবা সস্তা কোনও চাল এনো।
পরেরবার বাজারে মহিলা ২৮নামের চালটি আনে ২৮টাকা দামে। কিন্তু এক বেলা খেয়েই সাদদের সবার অবস্থা খারাপ। চালটা মোটা চাল। বাড়ে কম। তবু কেজিতে ১২টাকা সেইফ ভেবে খেতে চায়।

ক্রমে ক্রমে রহস্য খুলতে থাকে। লোকটির বড়ভাই নাজিরশাইল চাল আনে ৩৪টাকা করে। এবার মা চুপ থাকতে পারে না। বলে দেয় আসল রহস্য। সে আসলে চাল এনেছিল ৩২টাকা করে। মিথ্যে বলেছে।
তাই নাকি! তাহলেতো নাজিরশাইলই ভালো! এতোকষ্ট করে আটাশ খাবো কেন? মাত্র চারটাকা পার্থক্য।
কিন্তু আটাশটাতো শেষ হতে হবে... ...
কেন তুমি মিথ্যে কথাটা বলতে গেলে।
তোমাকে যে সব হিসাব দিতে হয়। আমার বাইরে গেলে কতকিছু খেতে ইচ্ছেকরে.....
চুরি করলা তুমি, সাফার করলাম আমরা সবাই। মহিলারা বাজারের টাকা বাঁচিয়ে অনেককিছুই করতে চায়, কর্যাণের জন্য। এমনই কল্যাণের নমুনা।
সাদ এর চাচীও নিজে বাজার করে। চাল ৪কেজির এনে বলে ৫কেজি। ৩৪টাকা মাইর। সেটা দিয়ে এটাসেটা করে।......
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×