সুযোগ পেলেই আমরা কে কার জন্য কি করেছি সব ফটফট করে বলে দিই।এমনভাবে বলি যেন আমার দয়া ,অনুগ্রহ,দান কিংবা সেবার বদন্যতা না হলে
সে মানুষটির অস্তিত্ব থাকত না।ভুলে যাই প্রয়োজন হলেই আমিও এর কাছে,ওর কাছে কাকুতি মিনতি করি।অথচ কারো প্রয়োজনে নিজের অসুবিধার কথা আগে ভাবি।কে কি চাইল,কাকে কতটুক দিতে পেরেছি সেটা যাচাই করি না।নিজের পাওনা কত আনা বাকি থেকে গেল সেটার হিসাব করি।ষোল আনা পূর্ণ না হলে হা-হুতাশ করি।অপরিচ্ছন্ন ময়লা কাপড় পড়া কারো পাশে দাঁড়াই না।ফকির মিসকিনদের খালি হাতে ফিরিয়ে দিই।জানি আপনি দানবীর নন।কিন্তু আপনি কি অপচয়কারীও নন?দিনের পর দিন,যেন-তেনভাবে,কত টাকা কত দিকে আপনি খরচ করছেন,সে হিসাব আপনিও রাখেন না।ফকির মিসকিনদের দু'পয়সা দিতে লজ্জা লাগে।ঝণগ্রস্থ অসহায় আত্মীয়,যার আপন কেউ হয়তো হাসপাতালের বেডে শুয়ে মূত্যু সুধা পান করতে উদ্যত কিংবা টাকার অভাবে পড়ালেখা বন্ধ হতে যাওয়া কেউ সাহায্য চাইতে এলে নিজের অভাব দরজায় এসে লাইন ধরে।সাহায্য চাইতে আসা মানুষটিও একসময় লজ্জায় মুখ লুকায়।নিজেকে অপরাধী ভেবে কোন রকমে পালিয়ে যায়।
আমরা সব সময় চিন্তা করি অন্যজন কি কি পেয়েছে আর আমার কি পাওয়া উচিত।একবারও ভাবি না নিজে যা পেয়েছি তার যোগ্য কখনও ছিলাম কিনা।আমরা শুধু চাই।এর কাছে,ওর কাছে,ঈশ্বরের কাছে।একজন শরৎচন্দ্র হয়তো ব্যঙ্গ করে লিখতেন,'সে দুর্ভাগা লোকদের মা-লক্ষ্মী খুশি হইয়া বর দিবেন কি,তাহাদের যন্ত্রণা দেখিয়া কোথায় যে তিনি মুখ লুকাইবেন ভাবিয়া পান না।