মানুষের বিবেক নাকি সব সময় ভালোর দিকে আকৃষ্ট হয়, কিন্তু মানুষের অন্তর বা কুপ্রবৃত্তি সব সময় খারাপের দিকে নিয়ে যায়। যেমন একজন চোরের বিবেক -বুদ্ধি তাকে অনবরত বলে চুরি করা খারাপ কাজ, এ কাজ করা উচিত হবে না। কিন্তু চোরের কুপ্রবৃত্তি তার অন্তরকে প্রভাবিত করে চুরি করার জন্যে।
আল্লাহ যুগে যুগে নবী-রাসুলদেরকে পাঠিয়েছেন মানুষের বিবেককে শক্তিশালী করতে এবং অন্তর বা কুপ্রবৃত্তিকে দমন করার পন্থা শেখাতে। নবী রাসুলদের কথা এবং শিক্ষা মান্য করে যারা বিচার-বুদ্ধিকে শাণিত এবং কুপ্রবৃত্তিকে দমন করতে পারে , তারাই হয় আদর্শ মানুষ।
আদর্শ মানুষের কথা ও কাজে কোন অমিল থাকে না। তারা ভালোকে ভালো হিসেবেই দেখতে পায়,আর নোংরাকে দেখে নোংরা হিসেবেই। কিন্তু যাদের কুপ্রবৃত্তি বিবেক – বুদ্ধির ওপর প্রভাব খাটায় তারা অশ্লিলতাকেও খুব উপভোগ্য ভাবতে থাকে।
হিন্দি সিনেমা-নাটকে মেয়েরা যেসব পোষাক পরে,নিজেদের আকর্ষনিয় অঙ্গগুলো যেভাবে প্রদর্শন করে,তাতে অনেক মানুষই উপভোগ করেন।আমার এবং আওয়ামীলীগার বন্ধু বলে থাকেন,মেয়েদের ওসব তো আর গোপন কিছু না,তাহলে ওগুলো সুন্দর ভাবে প্রদর্শন করলে অসুবিধা কোথায়? আমার এই বন্ধুটির এক কন্যা বছর পাচেক আগে বয় ফ্রেন্ড কর্তৃক গর্ভবতি হয়েছিল,পরে ডিএনসি করিয়ে সব পরিস্কার করানো হয়েছে। আমার খুব বলতে ইচ্ছে করে ,বয় ফ্রেন্ডের সাথে ফষ্টি-নষ্টি করলে প্রেগনেন্ট তো হবেই,তাহলে ওই সন্তানটা ফেলে দেয়া হলো কেন? সমাজে ওই ঘটনাটা গোপন করার এত আয়োজন করতে হলো কেন ?
আসলে এসব বলে কোন লাভ নেই। যাদের বিবেক বুদ্ধির ওপর কুপ্রবৃত্তি জেঁকে বসেছে তাদের কাছে সবই শালিন, নিজের বউ, নিজের মেয়েকে দিবে অন্যের কাছে ,আর নিজে ফষ্টি-নষ্টি করবে অন্যের বউকে নিয়ে। আমাদের সমাজটা যেন সেদিকেই যাচ্ছে। অর্থাত বর্তমান আওয়ামী সরকার এবং তাদের সাংস্কৃতিক উপদেষ্টারা আমাদের নতুন প্রজন্মকে সেদিকেই নিতে চাচ্ছে। ভারতের সিনেমা টিভি চ্যানেলগুলোতে দেখে এবং দেখিয়ে বর্তমান সরকার তৃপ্ত হতে পারেনি, তারা ভারতের নগ্ন সংস্কৃতি বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের দোর গোড়ায় পৌছে দিতে সিনেমা হলগুলোতেও তা দেখানো সুব্যবস্থা করেছে। এসব নগ্ন সিনেমার সুবাদে ভারত এখন ধর্ষনের জগতে পরিণত হয়েছে। ২০০৯ সালে নয়া দিল্লিতে ৪৫৯ টি ধর্ষণের অভিযোগ রেকর্ড করা হয়েছে। এসব ছিল জোর করে করা ধর্ষন, আর হিন্দি সিনেমা নাটকের বদৌলতে যা কিছু আপসে হয়েছে সেগুলোর তো কোন হিসেবই নেই। ধষনের এই রেকর্ড ২০১১ সালে বেড়ে হয়েছে ৪৮৯ টি। এজন্য নয়াদিল্লির কিছু মহিলা মিছিলও করেছে। ( তথ্য সূত্র)
যেখানে নগ্নতা এবং বেহায়াপনার কারণে ভারতের মেয়েরা অহরহ ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার সেখানে আওয়ামী বুদ্ধিজীবীরা সেই সংস্কৃতি দেশে প্রচলন ঘটানোর জন্য বৈদেশিক মূদ্রা ব্যয় করছে। অথচ আমাদের দেশের গরীব ঘরের সন্তানরা মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে হাড় ভাংগা খাটুনি খেটে দেশে বৈদেশিক মূদ্রার যোগান দিয়ে যাচ্ছে। আর আমাদের ভারত প্রেমি আওয়ামী নেতারা এই বৈদেশিক মূদ্রা হিন্দি ফিল্ম আমদানির জন্য ব্যবহার করছে।
সবচেয়ে খারাপ লেগেছে একটি কথা শুনে। আওয়ামীলীগপন্থী নামকরা সংস্কৃতি কর্মী , টিভি উপস্থাপক ও নাট্যকার নাসির উদ্দীন ইউসুফ নাকি ঘরোয়া পরিবেশে (বন্ধু মহলে) বলেছেন, জামাত-শিবির এবং ইসলামী মৌলবাদ নিশ্চিহ্ন করতে হলে হিন্দি সিনেমার সংস্কৃতি বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে ঢুকিয়ে দিতে হবে।
এটাই যদি আওয়ামীলীগের পরিকল্পনা হয়ে থাকে তাহলে আজ সংসদে পর্ণোগ্রাফির বিরুদ্ধে কেন আইন পাসের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ? (তথ্যসূত্র) এটা নিশ্চয়ই দেশের মানুষকে ধোকা দেয়ার জন্যে। তবে আওয়ামী বুদ্ধিজীবীদের বুঝা উচিত মানুষ এখন আর বোকা নয়। মানুষ এখন অনেক সচেতন। মানুষের এই সচেতনতা তাদের জন্য বুমেরাং হতে পারে। তাদের এসব জঘন্য কাজ এবং অতি ভারত প্রীতি জামাত এবং অন্যান্য ইসলামী দলগুলোকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে।