somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মমতার কাছ থেকে হাসিনার যা যা শেখা উচিত

০৯ ই মার্চ, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দালালি বাংলা ভাষায় একটি নেগেটিভ শব্দ। এই শব্দটি আমরা ফার্সি ভাষা থেকে গ্রহণ করেছি। আমরা এখনও প্রায় তেরশো ফার্সি শব্দ বাংলায় ব্যবহার করছি বলে মনে করেন ভাষাবীদরা। দালাল বা দালালি শব্দটি ইরানে তথা ফার্সি ভাষায়ও নেগেটিভ অর্থেই ব্যবহৃত হয়। আমরা কাওকে দালাল বললে যেমন কেউ অপমান বোধ করেন,তেমনি কোন ইরানিকেও দালাল বললে নাকি তিনি অপমান বোধ করে থাকেন।
ইরানে বসবাসরত আমার এক বন্ধু একবার এক গল্প শোনালেন, আমার বন্ধুটি পেশায় ডাক্তার। একবার তার কাছে এক ইরানী চিকিৎসার জন্য আসলো। আমার সদাচারী ডাক্তার বন্ধু রোগীর সাথে গল্প করতে করতে তার পেশা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। রোগী ঘুরিয়ে ফিরিয়ে যা বললো তাতে বুঝা গেল তিনি জমি এবং বাড়ী কেনা বেচার দালালী করেন, ডাক্তার সাহেবও ইনিয়ে বিনিয়ে তাকে বুঝাতে চাইলেন এটা তো দালালি, আর দালালি তো ভালো কোন পেশা নয়। তখন রোগী ডাক্তারকে বুঝানোর চেষ্টা করলেন,দালালি কোন খারাপ পেশা নয়, দুপক্ষের মধ্যে দলিল সহকারে সমঝোতা করিয়ে দেয়াই হচ্ছে দালালি । আর যিনি ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে এই সমঝোতা করিয়ে দেন তিনি হলেন দালাল।
কিন্তু বাংলা ভাষায় দালালি দুই ভাবে হয়ে থাকে।যেমন আমাদের দেশেও ইরানের মত জমি বা অনেক কিছুর দালাল আছে। ইরানী দালালের সজ্ঞা এসব ক্ষেত্রে হয়তো আমাদের দেশেও খাটবে। কিন্তু বাংলায় আরেকটি ঘৃন্য কাজকেও দালালি বলা হয়। যেমন কেউ যদি অন্যের চাটুকারিতা বা কেউ যদি নিজের পরিবার, দেশ বা দলের স্বার্থ রক্ষা না করে প্রতিপক্ষের স্বার্থ রক্ষার জন্য উকালতি করে তাহলে তাকেও দালাল আখ্যায়িত করা হয়। এ অর্থে আমাদের বর্তমান সরকার ও সরকারের প্রধান ব্যক্তি শেখ হাসিনা জনগণের কাছে ভারতের দালাল হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেছেন। কারণ শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর দেশের স্বার্থের কথা বিবেচনা না করে, পার্লামেন্ট এবং বিরোধীদলগুলোকে উপেক্ষা করে ভারতকে এমন সব সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন যা জাতীয় ঐক্যমত্য ছাড়া দেয়া মোটেও দেয়া উচিত নয়।
শেখ হাসিনা অতি দালালির মানসিকতায় উন্মত্ত হয়ে এসব কাজ করে ফেললেও এখন তিনি অনেকটা হতাশ । কারণ ভারত তার কাছ থেকে সব সুবিধা নিয়ে তা ভোগ করা শুরু করলেও শেখ হাসিনার উপর আস্থা রাখতে পারছে না। ভারত ভালো করেই বুঝে, পার্লামেন্ট এবং বিরোধী দলগুলোকে বাদ দিয়ে শেখ হাসিনা ভারতকে যা দিয়েছে তা কোন দিন স্থায়ি হবে না। আ.লীগ ক্ষমতা হারালে ভারত সব সুবিধাগুলো হারাতে পারে। ফলে ভারত বাংলাদেশকে যা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এখন তা দিয়ে গড়িমসি করছে। এজন্য বাংলাদেশের একজন সিনিয়র সাংবাদিক মন্তব্য করেছেন,বাস্তবে শেখ হাসিনা ভারতকেও সন্তুষ্ট করতে পারলো না,দেশের মানুষের মনও পেলো না। ( সূত্র এখানে দেখুন)
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার প্রতি শেখ হাসিনা এখন ক্ষুব্ধ। কারণ তিস্তাচুক্তিসহ আরো অনেক কিছু মমতার বিরোধিতার কারণে ভেস্তে গেছে।এখানে হাসিনার ক্ষুব্ধ হওয়ার কিছু নেই। কারণ মমতা যেটা করেছেন সেটা তার দিক থেকে ঠিকই করেছেন। মমতা তার দেশের তার জনগণের স্বার্থকে বড় করে দেখেছেন। তিনি তো কারও দালাল নন। কাজেই তিনি সব ক্ষেত্রে তার দেশ ও জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েই করতে চান। এখানে হাসিনাকে মমতার কাছ থেকে দেশ প্রেমের সবক নেয়া উচিত।
মমতার রাজনৈতিক প্রতিভা এবং দূরদর্শিতা আজকের আরেকটি খবরে সবার কাছে সুস্পষ্ট হবে। মাওবাদী সন্ত্রাসীদের ততপরতা এখন ভারতের সবচেয়ে বড় সমস্যা। পশ্চিমবঙ্গেও এ সমস্যা প্রকট। কেন্দ্রের সরকার এই সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। কিন্তু মমতা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কোন রক্তপাত ছাড়াই বাহ্যত এ সমস্যার সমাধান করে ফেলেছেন।মমতা মাওবাদীদের সাথে সংঘাতের পথ পরিহার করে তাদের সাথে সখ্যতার পথ অবলম্বন করেছেন। তিনি মাওবাদীদেরকে কুপথ পরিহার করে স্বাভাবিক রাজনীতেতে ফিরে আসতে আহ্বান জানিয়েছেন।এক্ষেত্রে সব ধরনের সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দেন তিনি। ফলে মাওবাদীদের গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী সুচিত্র আজ মমতার কাছে ধরা দিয়েছেন এবং মমতার হাত ধরে স্বাভাবিক রাজনীতিতে ফিরে এসেছেন। (সূত্র এখানে পাওয়া যাবে।)
অপরদিকে হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের সবপক্ষকে এত বেশি ক্ষিপ্ত করে ফেলেছেন যে এখন তিনি এবং তার দলের নেতারা শুধু হত্যার ষড়যন্ত্রের গন্ধ পান। কাজেই শেখ হাসিনা যদি অন্তত মমতার কাছ থেকে রাজনীতির সবক নেন তাহলে আমাদের দেশের জন্য যে মঙ্গল হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×