মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আশা করি আল্লাহর অসীম কৃপায় আপনি ভালো আছেন। আপনার পরিবারের সবাই ভালো আছেন। আপনারা ভালো থাকুন সবসময় সেই কামনা করি।
মাননীয়া, আমি এক অধম নাগরিক বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের। আমি দেশের কাছ থেকে কিছু চাইনা প্রধানমন্ত্রী। শুধু চাই দেশের মানুষগুলো দুবেলা দু মুঠো খেয়ে পড়ে বেচে থাকুক।
আরো একটি জিনিষ চাই। যুদ্ধপরাধীদের বিচার।
মাননীয়া এই একটি চাওয়ার জন্য ২০০৮ সালে আমি আমার জীবনের প্রথম ভোটটি নৌকাতে দিয়েছিলাম। একবুক স্বপ্ন নিয়ে ভোট দিয়েছিলাম। বন্ধুবান্ধব, আত্বীয়-স্বজনদেরকে নৌকাতে ভোট দিয়েছিলাম তাদের সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা তর্ক করে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম কেনো নৌকাতে ভোট দেয়া উচিত। আমার মত হাজারো তরুন এই কাজটা করেছিলো। ফলাফল? ২৫০টির ও বেশী আসনে আপ্নারা জয় লাভ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী, এই যে তরুন প্রজন্ম আপনাকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করেছে এক্টি কারনে! আমরা যুদ্ধপরাধিদের বিচার চাই। মাননীয়া প্রধানমন্ত্রি আমরা কলংকমুক্ত হতে চাই। একমাত্র আপনিই পারেন বিচার করতে।
বিচারের কাজ শুরু হয়েছে। ট্রাইবুনাল গঠিত হয়েছে। তদন্ত চলছে। ৪-৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এজন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
কিন্তু মাননীয়া আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে বিচারের কাজ যতটা দ্রুত হওয়া উচিত তার ২/৫ ও হচ্ছেনা। ৩০ লাখ লোকের হত্যার বিচার করার জন্য যে প্রস্তুতি, একাগ্রতা, কর্মযজ্ঞতা, নিষ্ঠা দরকার তা পরিলক্ষিত হচ্ছেনা! আমরা দেখতে পাচ্ছি সব নেতা, মন্ত্রিরা শুধুমাত্র ভাষনের মধ্যেই বিচারটা সীমাবদ্ধ রাখছেন। তাদের একটি কথা। বিরোধি দল নাকি বিচার বানচাল করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। তাই যদি হবে তবে কেনো তাদের ষড়যন্ত্র ভেঙে দেয়া হচ্ছেনা? কেনো তা মানুষের সামনে প্রকাশ করা হচ্ছেনা? কেনো আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা?
তবে কি আমরা ধরে নিব ষড়যন্ত্র টড়যন্ত্র কিছুইনা, নেতারা বাকঅয়াস করছেন?
প্রধানমন্ত্রি, আপ্নার মেয়াদকালের ২ বছর চলে গেছে। আর মাত্র ৩ বছর বাকি। আপ্নারা কি পারবেন এত বড় একটি বিচার কার্য তিন বছরে শেষ করতে?
প্রধানমন্ত্রি, এবার যদি বিচার না হয় তবে কোনোদিনই হবেনা। এটাই শেষ সুযোগ। শেষ সুযোগ ৩০ লাখ শহিদের রক্তের প্রতিদান দেয়ার। জাতিকে কলংকমুক্ত করার।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রি আমরা চাইনা আপনি আপনার ওয়াদা ভঙ্গ করুন। আপ্নাকে ওয়াদা ভঙ্গকারী হিসেবে দেখতে চাইনা।
আপনি সবসময় আপনার পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু জীবদ্দশায় বিচারের কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন! আপনার কি উচিতনা আপনার পিতার অসম্পুর্ন কাজ সম্পুর্ন করা?
জানি আমার হৃদয়ের আকুতি আপনার কাছে পৌছুবেনা। তবু বৃথা চেষ্টা করলাম। আপনাকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
ইতি,
বাংলাদেশের একজন সাধারন নাগরিক।