কথা থেকে শব্দগুলো থুলে নিলে
অর্থের ফানুস হয়
রক্ত আর সম্পর্কের কাছাকাছি কোনো মানেই হয়না।
কথা থেকে শব্দ না খুলে
শব্দের উৎসে যদি কান পেতে একটু দাঁড়াই
আমি হবো মস্ত শিং ভাঙা ছোট্টো বাছুর
শব্দের অতীত কিছু অর্থের হাসাহাসি হবে
ভুল ক'রে একদিন যেই ঘুমিয়ে পড়েছি
বয়েসটা চুরি হয়েছিলো
তারপর বেহিসাবী পৃথিবীর চোটে আসা রঙে
আমি ছাড়া সকলেরই কমছে সময়
অথচ লোকে বলে
আমি নাকি পুরনো হয়েছি।
ভাষা দিয়ে বলতে পারিনা
এই কটা বছরের কী এত অবাক রামধনু
ওঠালো আকাশ যে
সমস্ত কষ্টের রঙ নীল হয়ে যাবে?
যদি শুধু অক্ষর দিয়ে ব্যঙ্জনাকে আগাগোড়া লিখি?
এভাবে খুচরো কথা যেই আলগোছে খাতায় তুলেছি
হাততালি পেতে পেতে হয়েছে কবিতা
এদিকে হিম জমা বর্ণমালা
পাললিক শিলা ভেঙে পায়ে পায়ে উঠে এলো ভাঙন পাহাড়!
এখানে বাতাসের বেগে শব্দেরা উড়তে পারেনা
নাম থেকে খুলে পড়া ডাকে
ইশারায় চিৎকার করেছি যখোন
মেঘের কোরাস থেকে এক ঝাঁক বৃয্টির উত্তর পেয়েছি।
কাঁচ ভাঙা আয়নায় কে তুমি ফাটা-চটা প্রতিবিম্ব এলে?
স্বচ্ছ পাকস্থলী থেকে উঠে আসছে তোমার ধোঁয়া ওঠা ভাতের আরাম
শিরায় বাসি রক্ত উথলে ছিটকে উঠছে মেঘ-ফোঁড় আলো
কালোর কীম্ভূত থেকে সূক্ষ্মতা সেলাই করা এইটুকু সাদার আভাষ
অথচ শব্দের নাম মাত্র উত্তেজনা ওখানে ছিলনা।
শব্দের আগে আসে শরীরের ভাষা
তারপর ইশারার রঙ
সম্পর্কের আদিম এই যদি থেকে যেতো ভাষার বদলে
প্রতিদিন আধুনিক হওয়া থেকে রেহাই পেতাম।
চোখ এবং পা কোনোটাই পেছনে চলেনা
একদিন ভালোবাসি যারা যারা বলেছিলে
তারা কী কেউ আজ সন্ধ্যায় পার্ক ষ্ট্রীটে এসে
স্বাভাবিক ভাবে হেঁটে যাবে ঠিক সেদিনের মতো?
আমার বাঁ-দিকে?
আমি ওই রুমালের রঙটাই আবার দেখাবো।
কথা থেকে শব্দগুলো খুলে যদি আলাদা না করি
মাথার ওপর দিয়ে এক ঝাঁক উড়ন্ত সারস
আর ঝুম শীতে বিলের কুয়াশা
কি করে নিঃশব্দের সাদা হয়ে কবিতার পাকা চুল
থুথ্থুরে বুড়ো হতে পারে?
~ সৌম্য চট্টোপাধ্যায় (৭/৭/০৮ - ১৪/৭/০৮)