somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ অনেকদিন পর...

২৭ শে এপ্রিল, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২৬ এপ্রিল ২০০৯

আজ অনেকদিন পর একটি প্রোগ্রাম হল বাইরে। এক তরুণ কবির (হায়, আমি আর তরুণ নই!) সঙ্গে কিছুক্ষণ কাটবে আজিজ মার্কেটে এবং আশেপাশে। কবির নাম...থাক, উহ্য থাক। এর সঙ্গে কবে, কখন, কীভাবে পরিচয় মনে নেই। মনে পড়ছে, পরিচয়ের প্রথম দিকেই নিজের সম্পর্কে অনেক কথা জানিয়ে দিয়েছিল। নিজের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে, প্রেমের সম্পর্কে এমনভাবে জানিয়েছিল যে আমি তো অভিভূত। মনে হয়েছিল তখন লেখালেখির জন্যই নিশ্চয় এমনটা হয়েছিল। আমাকে সে কতকাল থেকেই চেনে-জানে ভেবেছিল হয়তো। আমিও ভেবেছিলাম, চিনি তো একে। ওই দিনই আমার প্রিয় কিছু ক্ল্যাসিক্যাল গান রেকর্ড করে নিয়ে গিয়েছিল। আর আমাকে শিখিয়েছিল অনেককিছু ইন্টারনেট সম্পর্কে, কম্পিউটার চালনার নানা সমস্যা সম্পর্কে।
দশাসই শরীর ছিল তার, কিন্তু মন আবেগে ভরপুর।
আজ দেখলাম শরীর যথেষ্টই হালকা, আর মনেরও মনে হল পরিবর্তন হয়েছে খানিকটা।
বললাম, ফেসবুকে দেখলাম তর্কাতর্কি, রেশারেশি। ওই সময়টা লিখতে পারলে বেশি ভাল লাগত না কি?
অবাক, মানল দেখি আমার কথাটা। গান ভালবাসে। মোবাইল থেকে শোনাল কিছু রাগমেশানো গান। নিজেও গলা মেলাল। সাহিত্য ভালবাসে খুব, কবিতা বিশেষত। নিজেরও হাত ভাল লেখার। পরিচিতি যথেষ্ট।
অনেক খোঁজখবর রাখে চারপাশ সম্পর্কে। এত, যে আমি বিমূঢ় বোধ করতে থাকি। সরল বিশ্বাসে আমি অনেককেই ‘সৎ’, সত্যবাদী বলে জানি। ‘সুশীল সমাজ’-এর কারো কারো সম্পর্কে বলল, লাখ লাখ কোটি কোটি টাকা এদের, ঘুষ খায় এরা, ভাবতে পারেন? ভাবতে তো অনেক কিছুই পারি, এদেশে যেকালে থাকি, কিন্তু কিছু বিশ্বাস তো থাকে বেঁচে, নইলে কীভাবে নিঃশ্বাস নিই?
আমরা গত কয়েক বছর খুবই খারাপ অবস্থার মধ্যে ছিলাম। তারই রেশ ধরে এখনো নানা দুর্দশা। কিন্তু তারপরও এখন মনে জাগে একটু আশা : খানিকটা হলেও ভালোর দিকে যেতে পারে দেশ।

২৭ এপ্রিল ২০০৯

রোজই লিখতে বসতে আমিও চাই। এটা সাইকোথেরাপির মতো কাজ করে। মনে হতে থাকে যে নিজের কাছে নিজেকে খানিকটা স্বচ্ছ করা গেল। মগ্নতা, ফারহান দাউদ, শিমুল সালাহউদ্দিন, পান্হ রহমান রেজা, তনুজা, শূন্য আরণ্যক, সব্যসাচী প্রসূন, আপনারা উৎসাহ দিলেন বলে লেখার ইচ্ছাটা বাড়ল। আপনাদের ধন্যবাদ। গতকালও বসেছিলাম অল্প সময়ের জন্য। বাইরে বেরিয়ে ফিরতে দেরি হয়ে যাওয়ায় পোস্ট আর করা হল না।
শূন্য আরণ্যক-এর কাছে ‘মানুষের মন চায় মানুষেরই মন’ কথাটা ভাল লেগেছে তো? এটা কিশোর রবীন্দ্রনাথের লেখা থেকে ধার করা। আমার ধারণা ছিল উক্তিটি খুব পরিচিত, তাই উদ্ধৃতিচিহ্ন বসাইনি। অবশ্য খুবই সাধারণ একটি কথাই এটা, সকলেই কোনো না কোনো সময়ে বলে থাকবেন। সাধারণ, সহজ কথাই আমরা বলতে ও শুনতে চাই। কিন্তু অনেক সময় সরল কথাটি বলতে গিয়েও ‘জটিল’ কথার ঘূর্ণাবর্তে পড়ে যেতে হয়, পথ হারিয়ে বসতে হয়। আবার কথা তো সবসময় মনে সোজাসুজি আসে না, কথার রূপেও আসে না তা কখনো কখনো, ছবি হয়ে আসে, স্বপ্ন হয়েও আসে। আমরা তখন কিছু বলতে গিয়ে অস্বস্তিতে বেসামাল হতে পারি, বা, ফূর্তিতে উদ্দাম। বা, ধীরস্থির, প্রকৃতিকে অনুসরণ করে যেতে পারি। অবশ্য আমরা অনেকে শিল্প সৃষ্টি করার আগ্রহে, বা, প্রতারণা করার ইচ্ছায় বানানো কথার আশ্রয় নিই। নিজের ভিতরে ডুব দিয়ে ‘প্রকৃত’ কথাটি বলতে গিয়ে কিছু না কিছু তৈরি করা বাক্য আমরা সকলেই বলি, কিন্তু যদি তার ভাগটাই বেশি হয় তবে আমাদের স্বস্তি লাগার কথা নয় বলে আমার তো মনে হয়। লেখকদেরও তা মনে হয় বলে আমার ধারণা।
অনেক লেখাকে বিশেষত কবিতাকে যে অনেকের কাছে দুর্বোধ্য লাগে সে কথা ভাবতে গিয়েই ওপরের কথাগুলি, যা পুরানো কথাই, লেখায় এল।

একটা কবিতা পড়ি। কবির নামটি শেষে বলি।

মা

স্টেশনের প্লাটফর্মে, রাত দশটায়
তিন-তিনটে বাচ্চা নেচে চলেছে
তাদের শায়িত মায়ের চারপাশ ঘিরে।
এপাশে-ওপাশে যাওয়া-আসা করছে ট্রেন, যাত্রীদের ওঠানামা
কুলিদের দৌড়ঝাঁপ, কারো দিকে তাকাবার সময় নেই কারো
তার মাঝখানে
অফুরান হাসির শব্দে গোল হয়ে
বাচ্চাকটা ঘুরছে মাকে ঘিরে, এখনই উঠে তাদের খেতে দেবে মা
মায়ের মুখের ওপর ভনভন করছে মাছি
আর আলতো পায়ে কখন পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে মুদ্দোফরাস
তাকে তুলে নিয়ে যাবে বলে এখন
মর্গে
তার বাচ্চা তিনটে নেচে চলেছে নেচেই চলেছে চারপাশ ঘিরে
এই রাত দশটায়।



কবির নাম : শঙ্খ ঘোষ। কাল কেনা হল নতুন এ বইটি। নাম : মাটিখোঁড়া পুরোনো করোটি।
যখন ইচ্ছা যতবার ইচ্ছা কবিতাটি পড়তে পারবেন আলাদাভাবে, কবিতারসিক ব্লগার। আর কিছুর জন্য নয়,
এ জন্য আমাকে ধন্যবাদ দিন। দিন।
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×