একটা বিষয় খুবই অদ্ভূত কেহ মানতে রাজি নন তবুও অবশেষে সেটাই মানতে হয় বা সেখানেই নিয়তী নিরব। আর সেটা হল
মানুষের মৃত্যু।আমাদের মধ্যে অনেকেই আছি আমাদের যে সকলেরি একদিন মায়া ভরা রঙ্গিন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে
সেটা মনে রাখিনা।কিন্তু যখন মৃত্যু একদম সামনে এসে যায় তখন সেটাকে আর না মেনে পিছু হাটতেও পারিনা, মৃত্যুই যে আমাদের
মানব সম্প্রদায়ের শেষ নিয়তী বিষয়টা প্রতি মুহুর্তে আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন।
আজ পোনের দিন হল আমার মা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন।৬ই এপ্রিল রোজ শনিবার বিকেল ৫:৪৫মিনিটে মা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ
করেছেন। মাকে শেষ বিদায়ের জন্য স্থান ঠিক করা হল,সকলে মিলে পদক্ষেপ নিলাম গাড়ি ঠিক করলাম ঠাকুর গাঁয়ের উদ্ধেশ্যে।
সেদিন দিন ও আবহাওয়া সব কিছুই ভালো ছিল,কিন্তু হঠাৎ রাত ৯টায় বৃষ্টি শুরু হয়।তবুও মায়ের জানাজা সম্পন্য করলাম এবং
আল্লাহুর নাম নিয়ে মায়র কফিন সঙ্গে নিয়ে আমি,আমা ছোট দুই ভাই এবং আমার এক বড় ভাই ও খালাতো ভাই আর দুই খালাতো
বোন মিলে আমরা ঠাকুর গাঁয়ের উদ্ধেশ্যে রওনা হোলাম,রাস্তায় যানজট থাকায় উত্তরা পযন্ত যেতে যেতে আমাদের রাত ১১টা বেজে যায়।
বৃষ্টি বেড়েই চলছে আর গাড়ির উপরে যে টিরপল দেয়া হয়েছিল সেটা ভালো না থাকায় আমরাতো ভিজে গেছিই এমনকি মায়ের কফিনও
ভিজে যাওয়ার অবস্থা পরে কোনো উপায় না দেখে গাড়ির চালককে বলাম গাড়ি থামাতে উনি গাড়ি থামালেন উনাকে ডেকে বললাম ভাই
এভাবে যাওয়া সম্ভব না। চালক নেমে এসে আমাদের অবস্থা দেখে উনিও বললেন আসলে অনেক দূরের পথ তাছাড়া বৃষ্টি কমার পরিবর্তে
যেন আরো বেড়েই চলছে,তাই গাড়ির চালক আমাদের পরামর্শ দেন সামনে হাসপাটাল আছে আপনেরা সেখান থেকে একটা এম্বুলেন্স
ভাড়া নিয়ে নেন আর মনে চাইলে আমাকে তেল খরচ হিসেবে যা মনে চায় দিয়ে দেন । আমারা আগ পিছু আর কিছু না ভেবে সামনে
হাসপাটাল থেকে একটা এম্বুলেন্স ভাড়া নিয়ে নিলাম আর আগের চালককে ১০০০ টাকা দিয়ে দিলাম ।আবার নতুন করে যাত্রা শুরু
হলো আমাদের ঠাকুর গায়ের উদ্ধেশ্যে।রাত তখন প্রায় ৩:৩০মিনিটের মত বাজে আমরা যখন যমুনা সেতুর পার হচ্ছি। পরে সিরাজগঞ্জ
গাড়ি থামিয়ে সকলে চোখমুখে পানি দিয়ে হালকা চা নাষ্টা করলাম। গাড়ি যতই স্প্রিট বাড়াচ্ছে কিন্তু গাড়ি কোনো ভাবেই ৬০ এর উপরে
চলছেনা আর চালকও যেন কয়েক মিনিট পর পর ঘুমের দেশে হারিয়ে যাচ্ছেন,আর এই জন্য যমুনা সেতু পার হওয়ার পর ৪ কি সারে চার ঘন্টার রাস্তা যেতে হয়েছে প্রায় সারে সাত ঘন্টায় । যাইহোক সকাল সারে এগারোটায় আমরা যেয়ে উঠলাম ঠাকুর গা আমাদের বাড়িতে।
অবশ্য ঠাকুর গা মেন শহর থেকেও আরো প্রায় ১১ কিলোমিটার ভিতরে আমাদের গ্রাম।
গাড়ি থেকে মায়ের কফিন নামাতেই মামা,মামী,খালা,খালু,খালাতো ভাই,বোন,এবং মামাতো ভাই,বোন এবং আরো অন্যান্য আত্মীয়স্বজন
একে অপরকে ধরে কান্না শুরু করল।আমি ও আমার এক খালাতো ভাই আমরা দুজন মিলে গাড়ির চালককে ভাড়া এবং খাবারের জন্য
আলেদা ভাবে ৫০০টাকা বেশি দিয়ে তাকে বিদায় করে দিলাম। দীর্ঘ প্রায় দের ঘন্টা আত্মীয়স্বজনরা আসলেন মাকে শেষ দেখা দেখলেন
চোখের পানি ফেললেন। এর মধ্যে জোহরের নামজ শেষ হল আমরাও মাকে কাধে করে নিয়ে গেলাম ঈদ গাঁ ময়দানে সেখানে আবারো
মায়ের জানাজা হল,তারপর আবার সকলে মিলে মাকে কাধে করে নিয়ে গেলাম এবং মায়ের শেষ ঠিকানায় পৌঁছে দিয়ে মাকে শেষ
বিদায় জানিয়ে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে মা বিহীন বাড়ি ফিরলাম।
মা তুমি যেখানে আছো ভালো থেকো।পরম করুনাময় আল্লাহু আমার মাকে জান্নাতবাসী করুন।
ছিলেন মা,
মৃত্যুর পরে হলেন লাশ।
সারে তিন হাত মাটির ঘরে শুণ্য জমিনে হল তার বিশানা,
চাল হল তার জঙ্গলের বাঁশ ।
আসবেন না মা আর ফিরে,
থাকবেননা ছেলে ফিরে আসাকে নিয়ে,
আর কেহ নতুন কোনো স্বপ্ন ঘীরে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১:১০