somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লিভার ক্যান্সার এবং লিভারের বিভিন্ন সমস্যা থেকে আপনি বাঁচুন অন্যকে বাঁচতে সহযোগিতা করুন

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বহুল আলোচিত লিভার ক্যান্সার ইদানিং খুব প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। লিভারকে বলা হয় দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণের প্রাথমিক উৎস। বিষাক্ত উপাদানকে বর্জ্য উপাদানে রূপান্তর, রক্ত পরিষ্কার রাখা এবং পুষ্টিকর খাবার কিংবা ওষুধের বিপাক ইত্যাদি কাজকে উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে লিভার।কিন্তু লিভারকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম না দিলে কিংবা লিভারের যত্ন না নিলে এর কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে, যা বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করবে। কারণ বাজারে এমন কিছু দ্রব্য রয়েছে, যা ব্যবহারের ফলে আমাদের লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।এখন বেশির অধিকাংশ মানুষই লিভার রোগ বা লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন । তাই এই জটিল মারাক্ত ময় লিভার ক্যান্সার ও লিভারের সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে আমাদের সকলের লিভার সম্পর্কে জানতে হবে ও সচেতন হতে হবে। লিভার শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। আমরা সকলে যদি সুস্থ থাকতে চাই তাহলে আমার মনে হয় অবস্যয়ই আমাদেরকে লিভারের খেয়াল রাখতেই হবে।কিছু বদ অভ্যাস এর কারন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লিভার খারাপ হওয়ার কারন হয়ে দাঁড়ায় ।তাই আসুন জেনে নিই লিভার সুস্থ রাখার কয়েকটা সহজ উপায়।

(১) লো ফ্যাট- ফ্যাটি লিভারের সমস্যা এড়াতে অতিরিক্ত মদ্যপান, তেল-মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত্ ঠিকই, তবে লো ফ্যাট ফুড হইতে সাবধান। সুপারমার্কেটে গিয়ে লো ফ্যাট বা ৯৯ শতাংশ লোয়ার ইন ফ্যাট লেখা ফুড কেনা অবিলম্বে ত্যাগ করুন। এই সব খাবার থেকে ফ্যাট বাদ দেয়া হয় ঠিকই কিন্তু স্বাদ ধরে রাখতে যোগ করা হয় প্রচুর পরিমাণ চিনি। আর তার করনেই লিভারের সমস্যা আরো বেড়ে যায়।

(২) স্ট্রেস থাকলে খাবেন না- বোর হলে, এনার্জি কম লাগলে কী করি আমরা ? অনেকেই এই সময় খাবার খেয়ে মুড ঠিক করতে চান। চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন লিভার সুস্থ রাখতে স্ট্রেসের সময় খাবার ছোঁবেন না। এই সময় হজম ঠিক মতো হয় না।

(৩) হার্বাল কেয়ার- শুনতে অদ্ভুত লাগলেও বেশ কিছু গাছের মূল রয়েছে যা লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ড্যানডেলিওন, মিল্ক থিসল বা হলুদের মূল লিভারের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে।

(৪) সাপ্লিমেন্ট- প্রোটিন বা ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার সময় সতর্ক থাকুন। এমন সাপ্লিমেন্ট বাছুন যা লিভার ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি লিভার পরিষ্কার রাখে। প্রোটিনের মধ্যে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিডও লিভার পরিষ্কার রাখার জন্য ভাল। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

(৫) ওষুধ থেকে সাবধান- বেশি কিছু ওষুধ লিভারের ক্ষতি করে। এ সব ওষুধ থেকে দূরে থাকুন। কিছু পেনকিলার, যেমন টাইলেনল বা কোলেস্টেরলের ওষুধ লিভারের প্রভূত ক্ষতি করে।

(৬)কফি- চা, কফি খেলে শরীরের ক্ষতি হয় এই কথাটা কত বার শুনেছেন? কফি খাওয়ার কিন্তু অনেক সুফল রয়েছে। গবেষণা জানাচ্ছে, নিয়মিত কফি খেলে লিভারের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্তত ১৪ শতাংশ কমে যায়।

(৭) টক্সিন- ত্বকে বিষক্রিয়া লিভারের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। ত্বকের মাধ্যমে বিষ রক্তে শোষিত হয়। তাই স্প্রে, টক্সিন থেকে দূরে থাকুন।

(৮) প্লান্ট প্রোটিন- লিভার সুস্থ রাখতে সবচেয়ে বেশি জরুরি সঠিক খাবার বাছা। অ্যানিমাল প্রোটিনের থেকে লিভারের জন্য বেশি ভাল প্লান্ট প্রোটিন। ডাল, সবুজ শাক-সব্জি, বাদাম, ফাইবার খান।

(৯) ইজি বুজিং- অ্যালকোহল লিভারে টক্সিন জমা করে। ফলে অতিরিক্ত মদ্যপান লিভারের ক্ষতি করে। তবে হালকা অ্যালকোহল শরীরের পক্ষে ভাল।

(১০) হেলদি ফ্যাট- ফ্যাট শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই লিভার সুস্থ রাখতে ফ্যাট ডায়েট থেকে একেবারে বাদ দিয়ে দেবেন না। হেলদি ফ্যাট খান। অলিভ, ওয়ালনাট জাতীয় খাবারে হেলদি ফ্যাট থাকে।


(১১) গ্রিন টি গ্রিন টি-তে আছে ক্যাটেচিনস নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ফ্ল্যাভোনয়েড অর্গানিক গোষ্ঠীভুক্ত। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস এই খাবারটি নানা ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এবং লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।


(১২) মৌসাম্বি লেবু বা মালটা এতে আছে ভিটামিন সি। এবং গ্লুটাথিয়োন যা লিভার থেকেও বের হয়। একটি মালটায় ৭০ গ্রাম গ্লুটাথিয়োন থাকে যা লিভারকে শরীর বিষমুক্ত করতে সহায়ক এনজাইম নিঃসরণে সহায়তা করে।

(১৩) আখরোট আখরোটে আছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং স্বাস্থ্যকর অপাস্তুরিত চর্বি যা লিভারে চর্বি জমতে বাধা দেয়। এই স্বাস্থ্যকর চর্বি লিভারের কোষগুলোর চারপাশে শক্তিশালী কোষ ঝিল্লি সৃষ্টিতে সহায়ক।


(১৪)আপেল আপেলে আছে পেকটিন যা শরীরকে পরিষ্কার এবং বিষমুক্তকরনে জরুরি। এটি লিভারের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে দেয় না।


(১৫)হলুদ হলুদে আছে কারকিউমিন নামের একটি সক্রিয় উপাদান যা একটি কার্যকরী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহরোধী উপাদান। এটি পিত্তনালীকে রক্ষা করে এবং পিত্তরসের গতি বাড়ায় এবং লিভারকে পরিষ্কার করে।


(১৬)জাম্বুরা জাম্বুরাতে নেরিনজিন এবং নেরিনজেনিন নামে দুটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা যকৃতে প্রদাহ হ্রাস করে এবং কোষগুলোকে সুরক্ষা দেয়। এটা লিভারে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি দূর করতেও ভূমিকা রাখে। এছাড়া জাম্বুরায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অ্যালকোহল জাতীয় খাবারের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া থেকেও লিভারকে সুরক্ষা দেয়।

(১৭)ব্লুবেরি ব্লুবেরি এবং ক্র্যানবেরি ফলে অ্যানথোসিয়ানিন নামক এক প্রকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। তিন থেকে চার সপ্তাহ নিয়মিত ব্লুবেরি বা ক্র্যানবেরি ফল খেলে লিভারের ক্ষত, ফিব্রোসিস, ক্যান্সার ও লিভারের কোষের ক্ষয় ইত্যাদি জটিলতা থেকে সুরক্ষা দেবে।

(১৮)আঙ্গুর আঙ্গুর ফলে, বিশেষ করে রঙ্গিন আঙ্গুরে বিভিন্ন ধরণের উপকারী উপাদান রয়েছে। বিশেষ করে এতে থাকা রিসবারেট্রল উপাদান অনেকটা রেড ওয়াইনের মত কাজ করে। যা প্রদাহ জনিত ঝুঁকি হ্রাস করে এবং ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিক্যালের হাত থেকে লিভারকে সুরক্ষা দেয়। তাই লিভারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে নিয়মিত আঙ্গুর ফল বা আঙ্গুর ফলের নির্যাস খেতে পারেন।

(১৯)বিটরুটের জুস
বিটরুটের বিভিন্ন স্বাদ আছে। অনেকেই এর নির্যাস একেবারেই পছন্দ করে না। আবার যারা এর প্রেমে পড়ে গেছে তারা এটা ছাড়তে পারে না। তবে এতে বিটালেইন নামে এক ধরণের অ্যান্টিওক্সিডেন্ট রয়েছে, যা লিভারের অক্সিডেটিভ ক্ষয় ও প্রদাহ জনিত ঝুঁকি হ্রাস করে এবং বিষাক্ত পদার্থ অপসারণকারী হরমোন বৃদ্ধি করে।


(২০)ভেষজ এবং সবজি সবুজ শাক-সবজি ধাতব, রাসায়নিক এবং কীটনাশককে নিষ্ক্রিয় করে দেয় যেসব আপনি খাবার এবং পরিবেশ থেকে গ্রহণ করেন। এজন্য স্পিনাক, বিটরুট, ব্রকলি এবং কলিফ্লাওয়ার খেতে পারেন আপনি।

যাদের খাদ্যাভাস স্বাস্থ্যকর নয়, তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি প্রতিরোধ করতে লিভারের সুস্বাস্থ্যের কোনো বিকল্প নেই। কারণ অধিক পরিমাণে অ্যালকোহল, চিনি এবং চর্বি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার ফলে লিভারের বিপাক ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং লিভারে চর্বি জমে যায়। ফলে লিভারে মারাত্মক জটিলতা দেখা দেয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। তাই লিভারকে সুস্থ রাখতে উল্লেখিত খাবারগুলো খাদ্যতালিকায় যোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

আমার মা লিভার ক্যান্সারে মারা গেছেন আল্লাহু এই মারাক্ত রোগে যেন আর কারো মা,বাবা,ভাই,বোন,ও কোনো প্রিয়জনকে মরতে
না হয় ।


তথ্যসূত্র: ইন্টারনেটের বিভিন্ন স্বাস্থ্য ডেস্ক থেকে নেয়া ।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৬
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×