somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার গুহা

২৪ শে মে, ২০০৮ দুপুর ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার গুহায় আমি বড়ই স্বাধীন।

পাহাড়টা আরেক জনের। আমার বাপের। বয়স বেশীনা আমার গুহার। এই বছর আটেক হবে। বাচ্চা কালে যখন মাঠে দৌড়াতাম, মাইর খাইতাম প্রচুর। বাইরেও, ভিতরেও। তখন শেয়ার্ড গুহা ছিল। আমি আর আমার ছোট্ট ভাই এর। একলা কান্দনের জায়গা ছিলনা । তাই পলাইতাম। কমলাপুর ইস্টিশনে। লোকাল প্লাটফমে বইয়া ট্রেনের আসা যাওয়া দেখতাম। ঘন্টার পর ঘন্টা। মাথা ঠান্ডা হইয়া যাইত। কিছুকাল পর আব্বার দয়ায় একটা সাইকেল পাইলাম। আমার দু:খ আর কান্দনের সাথী হইল আমার সাইকেল। আবার ওই রেল লাইন। ওইটার পাশ দিয়া চালানো। শরীরকে কষ্ট দিয়া মাথাটা ঠান্ডা করা।

ফেল করতাম, মাইর খাইতাম, হা কইরা দুনিয়া দেখতাম। ভাবতাম শালার বাল খারাপ্ও হইতে পারলামনা, ভালোও হইতে পারলামনা। খারাপ হওয়ার ইচ্ছায় বিড়ি ধরলাম। চলতাছে এখনো। মেট্রিক আমলে গিয়া দোস্ত পাইলাম - একটা। আকড়াইয়া ধরলাম। আমাগো তখন একটা গুহা হইল। কলোনীর পুরান একটা বাড়ির সিড়ি। বিড়ি খাইসি, হাসছি, কানছি আর সাইকেল চালাইছি। বষার মধ্যে কানতে কানতে প‌্যাডেল মারছি। দোস্ত আমার চুপচাপ পিছে বইসা ছিল। ভাব করসে য্যান বোঝে নাই।

ম্যক্সি কইরা কলেজ এ যাইতাম। লাইফের প্রথম প্রেমে পড়লাম। দুই দোস্তই। আমার দোস্তের মন ভাংল আগে। স্বান্তনা দিতে গিয়া দেখতে পাইলাম ওর আরেকটা গুহা আছে, অর কান্দনের লাইগা। আমার অ্যাক্সেস নাই। আমার গুহায় একা থাকা শুরু হইল। জানলা দিয়া দুরের দুইটা বাড়ির ফাক দিয়া আকাশ দেখা যায়। দেখতাম, বিড়ি খাইতাম, ফোলা গাল আরও ফুলাইয়া বইয়া থাকতাম। কত রাত্রি গেছে নিজের ভাগ্যরে অভিশাপ দিয়া। আমার দোস্ত দেশ ছাড়লো। একা হইলাম আবার। নিজের একটা আলদা দুনিয়া কল্পনা করতাম। নেশার মত কষ্ট খাইতাম চুইষা। হাসতাম, এখনো হাসি।

আমার ভুল ভাংগাইল আমার পরী । কিজানি কি দেখল আমার মধ্যে আল্লাই জানে। ৬ বছর ধইরা আমারে আনল লাইনে। আমার গুহা হইল আমাগো আপন জায়গা। সপ্তায় একদিন আইলেও আমার পুরা পরিবারের রাংগানি খাইত আমার পরী। তার পরো আমার শার্টের কোনা মুঠঠি কইরা ধইরা রাখছে, ছাড়ে নাই। বহুত ক্যারফা করলাম। পরীরে বউ করলাম। আমার টিনের ছদের গুহা। আমাগো ছোট্ট ভুবন। আমার সংগ্রামে পাওয়া চাকরি জীবনে কত বাধা আইছে, গুহায় ঢুইকা আমি শান্ত হইয়া গেছি। আমার পরীর বাপ চইলা গেছে ওইপার। আমি দেখিছি আমার পরীর কান্দন, আমার গুহায় ।

এখন আমার গুহায় আমি স্বাধীন না।

হায়রে আপন গুহা। এখনও গুহাটা বাপের । নিজের না। শুনছিলাম, গুহা মানবরা প্রথম যখন গুহার বাইরে আসা শুরু করলো উন্নতি শুরু হইল তখন। এখন আমার পরীও সকাল আটটা থেইকা রাত্রি আটটা খাটা শুরু করছে। আমার এত হাসন, কান্দন আর স্মৃতির গুহা টারে কাইল রাত্তির থেইকা গুডবাই বলা ধরছি। কংক্রীটের এই জংগলে আরেকটা গুহা কয় মাসের মধ্যেই খুজতে হইবো।

আগে সবার মাঝে একলা একা ছিলাম।

এখন সবার মাঝে দুইজন মিলা একা আছি।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×