somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাখীর জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা ও কষ্ট! যার জন্ম দিয়েছে নিজেই। সন্তানদের জীবনে পরিবারেরর অনিবার্যতা।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রেমিক জীবনের সত্য ঘটনা:

একটি সুন্দর পরিবার - মা.বাবা, ভাই বোন নিয়ে সুন্দর সংসার পাখীদের। ১৯৯৭ সাল পাখী ৭ম শ্রেনীতে পড়ে। বড় ভাই বিদেশে থাকে। সেই সুবাদে বড় ভাই বোনের জন্য বিদেশ থেকে গিফট পাঠায় তারই এক বন্ধু হুমায়ুনকে দিয়ে। পাখী এই গিফট পাবার জন্য দরজা খুলেই হুমায়ুন এর কাছ থেকে গিফট গুলো গ্রহন করে। ভাই এর বন্ধু হুমায়ুন দেখতে সুন্দর হওয়ায় পাখী তার প্রতি মনের অজান্তেই ৭ম শ্রেনীতে পড়া অবস্থায় দুর্বল হয়ে যায়। এক পর্যায়ে হুমায়ুন পাখীর বাবা-মাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। সেসময় পরিবার রাজি হয়না। কিন্তু পাখীর ভাই এর খুব ঘনিষ্ট বন্ধু হওয়ায় এক পর্যায়ে অনেক জোরাজুরির পর পাখী - হুমায়ুন এর এনগেজম্যান্ট হয়। শর্ত থাকে যে এর পর হুমায়ুন মালয়েশিয়া চলে যাবে। পাখী মাষ্টার্স পাশ করার পর তুলে দেবে। ১৯৯৭ সালে ৭ম শ্রেনীতে পড়ে মাস্টার্স পড়ার পর তুলে নিবে। এরই মধ্যে দুজনের মধ্যে পরিবারের অজান্তে চিঠি চালাচালি সহ ফোনালাপ হয়। ১৯৯৮ সালে হঠাত করে হুমায়ুন দেশে চলে আসে। এবং সরাসরি পাখিদের বাসায়। এরপর প্রেমিক প্রেমিকার অবুঝ মন বাবা মায়ের অবাধ্য হয়ে বিয়ের পিড়িতে বসে। এরই মাঝে চলে যায় ঘটনাবহুল ৪ বছর। শুরু হয় ৭ম শ্রেনীতে পড়াশোনার অবসান ঘটিয়ে সাংসারিক জীবন। যবনিকাপাত ঘটে এক অমিত সম্ভাবনায় উদ্বেলিত এক জীবন। এর কিছুদিন পর স্বামী হুমায়ুন বিদেশ বেড়াতে যাবে বলে পাড়ি জমায় দুবাই ৩ মাসের কথা বলে। এরপর মাস, বছর চলে যায় যোগাযোগ রাখেনা কারো সাথে। এভাবে একটি বছর চলে গেলে পাখী বোনদের ও শাশুড়ির পরামর্শে আবার এসএসসি পরীক্ষার রেজিষ্ট্রষন করে পরীক্ষা দিয়ে ২০০৪ সালে এস এস সি পাশ করে। কিন্তু কোন ভাবেই পিতামাতার অবাধ্য হয়ে বিয়ে করা স্বামীর খোজ পায়না। অবশেষে আবার ও বাবার বাড়ীতে প্রত্যাবর্তন ঘটে পাখির। কিন্তু তারপরেও ভুলতে পারেনা হুমায়ুনকে। তাকে ভুলে থাকার জন্য টিউশনি আর ছোট একটি চাকুরী নিয়ে ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। মনের কষ্ট চাপা দিয়ে আবারো এইচ এস সি পরীক্ষা দিয়ে ২০০৬ সালে পাশ করে। এরপর বি এ তে ভর্তি হয়। কিন্তু তার পরেও হুমায়ুনকে ভুলতে পারেনা।
একদিন হঠাত করে আবার সেই স্কুল জীবনের এক বন্ধু সিংগাপুর থেকে পাখীর সাথে যোগাযোগ করে। এবং এক পর্যায়ে দেশে চলে আসে। এরই মাঝে হুমায়ুন এর সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে ও ব্যর্থ হয়। শুরু হয় আবার ভালবাসা ওই বাল্যকালের বন্ধুর সাথে। পাখীর তিক্ত অতীতের কথা শুনেও বিয়ের কথা বললে পরবর্তীতে ফেরত পাঠায় পাখীকে। এরই মাঝে পরিবারের কোন পরামর্শই পাখী মান্য করেনি। এক পর্যায়ে হোস্টেল এ থেকে চাকুরী করে সময় চলে গেলেও হুমায়ুনকে ভুলতে পারেনা। পরে এক বছর পর হুমায়ুনকে ডিভোর্স লেটার পাঠায় পাখী। ২য়বার কষ্ট পায় বন্ধু দ্বারা। এরই মাঝে চাকুরীর ফাকে আবারো এক কলিগের সাথে শুরু করে প্রেম এর মত অবুঝ কার্যক্রম। কিন্তু নিয়তি, অতিমাত্রার আবেগ আর আবেগ মিশ্রিত সাহস পাখীকে সফল হতে দেয়নি। পরিবারের ঠিক করা ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করার পরও গ্রহন না করে পালিয়ে যায় কলিগের বড় ভাই যে কিনা বিবাহিত তার সাথে। কিন্তু সেখানেও সফল নয়। আকস্মিকভাবে সে ব্যক্তিটিও ফেরত দেয় তাকে। আর ওদিকে পারিবারিক ভাবে ঠিক করা ব্যক্তিটিও ফেরত যায় লন্ডন। একেবারেই ভেঙে পড়ে পাখী। সর্বশেষ পারিবারিক ভাবে অস্ট্রিয়া প্রবাসী এক ব্যক্তির সাথে বিয়ে ঠিক হয় পাখীর। কিন্তু পাখীর হৃদয় চূর্ন করে দিয়েছে যে ছেলেরা। এখন কাউকেই বিশ্বাস করতে চায় না পাখী।

প্রিয় ব্লগার বৃন্দ:
উপরোক্ত কথাগুলো এফ এম ৮৮.৪ এর ``লাভ গুরু'' নামক অনুষ্ঠান থেকে সংগৃহীত।

উক্ত প্রেম কাহিনী থেকে আমরা যে শিক্ষা পাই:
১. পাখী ছিল বাবা মায়ের অবাধ্য।
২. প্রেম ভালবাসার বয়স কি ক্লাশ সেভেন?
৩. অতিমাত্রার আবেগ মানুষকে ধ্বংস করে।
৪. পরিবারের চেয়ে বড় আপন কে হতে পারে?
৫. আবেগমিশ্রিত সাহস উপস্থিত থাকার কারনে হিতাহিত জ্ঞান থাকেনা।
৬. একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার ফলে পরবর্তীতে কোন ঘটনার জন্ম দেয়া ঠিক নয়।
৭. শিক্ষার্থিদের গ্রাজুয়েশন এর পূর্বে সাংসারিক কোন সঠিক জ্ঞান জন্ম নেয় না। মতামত ভিন্ন থাকতে পারে।
৮. এখন পাখী নিজের কারনেই সকল ছেলেদেরকে অবিশ্বাস করছে। যা তার নিজেরই দোষ।
১০. সর্বোপরি প্রেম ভালবাসার মাধ্যমে সৃষ্ট বিয়ে সংসারের শান্তির অন্যতম অন্তরায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ।

আশা করি এইরকম একটি ঘটনা থেকে শিক্ষা নিলেও এরকম অনেক ঘটনা থেকে বেচে যাবে এদেশের অবুঝ ছেলে মেয়েরা। আর কারো ঘর নষ্ট হবেনা। কষ্ট পাবেনা কোন হৃদয়। আর কোন পরিবার এরকম কোন আত্নঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়ে ৭ম শ্রেনীতে পড়া অবস্থায় বিয়ে করতে দিবেনা। যদি পরিবারে শিক্ষার ছাপ থাকে। আসুন আমরা সবাই এই সকল আবেগ প্রবন সত্বাকে নিয়ন্ত্রন করি। এর ফলেই নিস্তার পাবে একেকটি জীবন।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×