গতকাল ইত্তেফাকে হিটস্ট্রোক নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ লেখা পড়লাম, সেটার তথ্যগুলো গুছিয়ে লিখছি। প্লাস এনকার্টার বিশ্বকোষের কিছু তথ্য যুক্ত করলাম।
প্রচন্ড গরমে হিটস্ট্রোকের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ বলছেন হিটস্ট্রোকে রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন দ্বিগুন হারে বাড়ছে।
যেধরণের সমস্যা হয়:
প্রচন্ড গরমে শরীরের ঘামের সাথে শরীরের লবণ-পানি বেরিয়ে যায়। এজন্য ডিহাইড্রেশন (Dehydration) বা পানিশূণ্যতা দেখা দেয়।
এজন্য রক্তের চাপ কমে যায়,
প্রস্রাব কমে যায়,
শরীর দুর্বল ও ক্লান্ত হয়
এবং অনেকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
প্রচন্ড গরমে সবচেয়ে যে গুরুতর রোগটি তা হল হিটস্ট্রোক
- হিটস্ট্রোকে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪-১০৫ ডিগ্রী পর্যন্ত হয়
- অনেকের ঘাম বন্ধ হয়ে চামড়া শুষ্ক হয়ে যায়
- শরীরে অতিরিক্ত তাপ থাকে ও খিচুনি হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে
- এর ফলে কিডনি, বেইন, হার্ট ও লাংস অকেজো হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে
করণীয়:
BSMMU-এর মেডিসিন বিভাগের খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন-
- প্রচন্ড রোদে চলাচল যত কম করা যায় তত ভাল
- রোদে ছাতা ব্যবহার করা যেতে পারে
- ঢিলেঢালা সুতি কাপড় চোপড় পরিধান পরিধান করা উচিৎ এবং টাইট কাপড় এড়িয়ে চলা উচিৎ
- প্রচুর পানি খাওয়া যেতে পারে (লবণ মিশিয়ে খেলে ভাল)
- এবং স্যালাইন খাবার পরামর্শ দেন তিনি।
হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হলে করণীয়
- আক্রান্ত হবার পরপরই ভেজা কাপড় দিয়ে সারা শরীর মুছে দিতে হবে, প্রয়োজনে পানি ঢেলে দেয়া যেতে পারে। তবে বরফ দিয়ে চিকিৎসা না করাই উচিৎ।
- পড়নের কাপড় খুলে দিতে হবে
- সবচেয়ে ভাল হয় নিকটতম হাসপাতালে আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিতে পারলে
- বৈদ্যুতিক পাখার নিচে রাখা বা হাত পাখা দিয়ে বাতাস দেয়া উচিৎ
- প্রয়োজনে আইডি স্যালাইন দেয়ার পরামর্শ দেন ডা. আব্দুল্লাহ।
এসব পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রা কমপক্ষে ১০২ ডিগ্রীতে নিয়ে আসতে হবে। ১০২ ডিগ্রীতে নিয়ে আসার পর ধীরে ধীরে তাপমাত্রা স্বাভাবিক হবার কথা। তবে যদি তাপমাত্রা আবার বাড়ে তাহলে উপরের চিকিৎসা পুনরায় করতে হবে।
হিটস্ট্রোক এড়ানোর অন্যতম উপায় হচ্ছে গরমকালে কাজকর্ম স্বাভাবিক রাখা এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল খাবার ও লবণ গ্রহণ করা।
তথ্যসূত্র:
১. দৈনিক ইত্তেফাক, "হিটস্ট্রোকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে - বিশেষজ্ঞ পরামর্শ", ১৯ এপ্রিল ২০০৯
২. Heatstroke, এনকার্টা এনসাইক্লোপিডিয়া ২০০৫
অনুলিপি: Click This Link