somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা হচ্ছি সেই ১% মানুষ যারা মনে করি যে আমরা জনসাধারনকে রিপ্রেজেন্ট করি

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"রানঝানা" সিনেমাটার কথা অনেকের ফেইসবুকের স্ট্যাটাসে দেখেছি। নায়কটাকে দেখে খুব ইম্প্রেসিভ লাগেনি দেখে দেখা হয়নি। এইবার ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া আসার সময় আর কোন দেখার মত সিনেমা না পেয়ে রানঝানা দেখতে শুরু করি। প্রথমে একটু বোরিং আর বিরক্ত লাগছিল কিন্তু শেষ হওয়ার পর প্রায় স্তব্ধ হয়ে গেলাম।

যাই হোক কথা আসলে রানঝানা নিয়ে নয়। কথা আমাদের নিজেদেরকে নিয়ে। অশান্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অনেকেরই আশা কোন তৃতীয় শক্তি যাদু মন্ত্রবলে আমাদের উদ্ধার করে নিয়ে যাবে। ভারতের "আম আদমী পার্টি" এর মত দেশের মানুষ ভোটের জোয়াড়ে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে নতুন তৃতীয় শক্তিকে। আমিও হয়ত মনে মনে তাই ভাবি বা চাই।

কিন্তু কেন জানি মনে হয় আমাদের নিজেদের মৌলিক পরিবর্তন না হলে এই আশা শুধু স্বপ্নই থেকে যাবে। কয়েকদিন আগে এক আড্ডায় ডেভনেট এর সাব্বির ভাই আমাদের রাজনৈতিক রাজা উজির মারার আসরে হঠাত বলে উঠলেন - "... আমরা হচ্ছি সেই ১% মানুষ যারা মনে করি যে আমরা জনসাধারনকে রিপ্রেজেন্ট করি..."। কথাটা খুব সত্যি বলে মনে হয় মাঝে মাঝে। আর তাই তৃতীয় শক্তির কথা যখন আমাদের মত মানুষের মুখে শুনি, ঠিক ভরসা হয় না।

আবারও সেই রানঝানায় ফিরে যাই, ইউনিভার্সিটির ডাকসাইটে ছাত্ররা যখন কথা বলায় ব্যাস্ত তখন সাধারন রাস্তার ছেলেটাই জনমানুষের সাথে কানেক্ট করে বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে নিয়ে গেছে সবাইকে। ঘটনাটা সিনেমায় হলেও কেন যেন মনে হয় - যে খেলা যেরকম তা সেভাবেই খলতে হয়। আমাদের এখনকার নেতাদের আমরা যত গালিই দেই না কেন, তারা সবাই মাঠ থেকেই উঠে এসেছেন। নব্বইয়ের খালেদা জিয়া বা হাসিনা যেভাবে রাস্তায় থেকে মানুষের কাছে ছিলেন, তাদের ছেলেরা কিন্তু জনমানুষের ততটা কাছে আসেননি কখনও।

কেন জানি বারবার ইংরেজ সেনাপতির কথাটা মনে পড়ে, সিরাজউদ্দৌলাকে পরাস্ত করে যখন তারা রাজধানীর দিকে যাচ্ছিলেন তখন রাস্তার পাশে দাড়ানো অসংখ্য মানুষ দাড়ানো ছিল। সেনাপতি পরে নিজের জীবনীতে লিখেছিলেন - "রাস্তায় দাড়ানো মানুষগুলোর প্রত্যেকে যদি একটা ইটও ছুড়ে মারত, ইংরেজ বাহিনি ধুলিস্বাত হয়ে যেত"। তখনকার সেই মানুষদের দুইশ বছর লেগেছিল নিজেদের ভিতর থেকে গান্ধি, সুভাস, জিন্নাহ তৈরী করতে। কিন্তু না তৈরী করে, রাজনৈতিক রাস্তায় না হেটে কিন্তু হয়নি।

আজকে আমরা যদি চাই যে আমাদের দেশে সুস্থ রাজনৈতিক ধারা আসবে, আমাদের আগে রাজনীতির মূল ধারায় আসতে হবে। ছোট থেকেই শুরু করতে হবে। আমার মনে হয় না কোন শর্টকাট আছে। ভারতের জনসাধারন তখনকার রাজনৈতিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তৃতীয় শক্তির স্বপ্নই শুধুই দেখেনি। দীর্ঘদিন ধরে সেই শক্তি থেকে তৈরী রাজনৈতিক দলকে সংগঠিত করেছে, বড় করেছে। এরপর এইবার প্রথমবারের মত দেশের সর্বসাধারন তাদের কিছুটা হলেও মূল্যায়ন করছে। পরবর্তিতে হয়ত একদিন তারা দেশও চালাবে। আমি নিশ্চিত যে কোন হঠাত আসা অভ্যুথানের মত তাদের উথ্থান হয়নি (শুরু হতে পারে)। ধীরে ধীরে তারা সাধারন মানুষের কাছে গিয়ে তাদের ভিতর থেকে উঠে এসেছেন।

একদিন আমাদের শেখ হাসিনা আর খালেদা জিয়াও কিন্ত তাই ছিলেন। তখন মানুষ তাদের অন্তর থেকে ভালবেসে ক্ষমতায় নিয়ে এসেছিলেন। ক্ষমতায় এসে তারা কি করেছেন তা ভিন্ন ব্যাপার, কিন্তু ক্ষমতায় আসার রাস্তা কিন্তু সব সময়ই এক। এর ব্যাতিক্রম বিভিন্ন সময় হয়েছে বটে, কিন্তু স্থায়িত্ব পায়নি।

আমরা যদি চাই, আমাদেরও তাই করতে হবে। নিজেদের সুশীল বলে আর সবার থেকে আলাদা করে, আন্তর্জাতিক লবিং দিয়ে ব্যাবসা হতে পারে, কিন্তু দেশ মনে হয় চালানো যাবে না। দেশ চালাতে হলে সাহসী হতে হবে, মাঠে আসতে হবে, সাধারন মানুষের সাথে রাস্তায় দাড়াতে হবে। সব থেকে বড় কথা ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আর বাংলাদেশকে ভালবাসতে হবে। নিজেকে গর্বিত এবং সৎ বাংলাদেশী হতে হবে। আমি জানি না আর কোন উপায় আছে কি না।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×