ঘটনার শুরু যেভাবে:
ডিজুস প্রেম। পর্ব-১
ডিজুস প্রেম। পর্ব-২
ওপাশ থেকে মেয়টা যখন তার নাম বলল, আমি পুরো বিস্মিত হয়ে পড়ি। বলে কি মেয়েটা, না কি সে শুধু মজা করছে আমার সঙ্গে।
- কি হলো, কথা বলেন না কেনো?
- কি বলব? আপনাকে সেই কখন থেকে নাম জিজ্ঞেস করছি, কিন্তু আপনি নিজের নামটা না বলে শুধু শুধু এটা ওটা বলে পার হয়ে যাচ্ছেন। যদি কথা বলতে ইচ্ছে না করে তাহলে সোজাসুজি বলে দিন, আমি আর কোনদিন আপনাকে বিরক্ত করব না।
- আরে কি আশ্চর্য! আমি বললাম না আমার নাম মুক্তা।
নাহ সে তো মনে হয় মজা করছে না, সত্যি সত্যি বলছে। তাহলে কি এটা একটা কাকতালীয় ঘটনা, নম্বর বানিয়ে ফোন করলাম আর তা রিসিভ করল মুক্তা নামেরই একটা মেয়ে! সত্যিই আমার বিস্ময়ের ঘোর তখনও কাটছিল না। আমি বার বার তাকে তার নামের ব্যাপারটি জিজ্ঞেস করতে থাকি কিন্তু সে বার বারই একই কথা বলে।
- আমি একটা মেয়ে আমার নাম মুক্তা হওয়া ঠিক আছে, কিন্তু আপনি ছেলে, তাহলে কিভাবে আপনার নাম মুক্তা হয়। মুক্তা নাম কি কোনো ছেলের হয় ?
- হতে পারে, আমাদের এদিকে আরও ২/৩ জন ছেলে আছে যাদের নাম মুক্তা বা মুক্তার। আরে এটা আমার ডাক নাম, ভালো নাম .....................।
- ও, তা এত সুন্দর একটা ভালো নাম থাকতে মেয়েদের নাম দিয়ে পরিচয় দেন কেনো?
- কি করব বলেন, আসলে আমার বাবা-মা যখন আমার নামটা রাখে, তখন আমি খুবই ছোট ছিলাম তো তাই জানতাম না এটা ছেলেদের নাম না মেয়েদের। তাই কিছু বলতে পারিনি।
- খিল খিল করে হেসে ওঠে ফোনের ওপ্রান্ত থেকে।
- কি হলো হাসছেন কেনো? আমি হাসার মতো কি এমন বললাম?
- না বললেন না আপনি ছোট ছিলেন বলে নামের মানে জানতেন না। আরে ভাই সবার নামই তো ছোট অবস্থাতেই রাখে তাই না।
- হুম তাই যদি হয়, তাহলে বার বার আপনি আমার নাম নিয়ে প্রশ্ন করে বিব্রত করছেন কেনো?
- ও আপনি বিব্রত হচ্ছেন বুঝি?
-নাহ্ আমার খুব ভালো লাগছে!
এভাবে কেটে যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা! না তার চোখে ঘুম, না আমার চোখে। যখন ফযরের আযান দিল মসজিদে।
- এবার ফোনটা রাখেন আমি ঘুমাতে যাবো আমার ক্লাস আছে সকালে।
- আমারও তো অফিস আছে সকাল ৯.০০টায়। তো অপরিচিত মেয়ে মুক্তা আপু আমি যদি এরপর আপনাকে ফোন করি তাহলে কি কথা বলা যাবে?
- কেনো? আমি বলেছি না আমি অপরিচিত কারো সঙ্গে কথা বলি না।
- না, এখন তো আমরা আর অপরিচিত রইলাম না, এখন আমরা দু'জন দু'জনের নাম জানি, কে কোথায় থাকি, কি করি সেসব জানি, তাহলে কি অপরিচিত থাকলাম বলেন?
-হুম আপনার কথা ঠিক আছে। দেখি চিন্তা-ভাবনা করে। এখন ফোন রাখেন, ঘুমাতে হবে।
- ওকে বাই বাই।
ফোন রেখে আমি ঘুমাতে যাই। এভাবে বেশ কিছুদিন এ কথা, ও কথা, এটা ওটা সেটা নিয়ে পার হয়ে গেলো কয়েকটি রাত। এখন আমরা দুজনে আর অপরিচিত নই এখন দুজন দুজনের ভালো বন্ধু। রাতের পাশাপাশি দিনেও মাঝে মাঝে কথা হতো আমাদের মাঝে। এভাবে গভীর হতে হতে অনেকটা আকর্ষণ তৈরি হলো দুজনের মাঝে। আর কখন যে এই আকর্ষণটা তৈরি হলো তা দু'জনের কেউই বুঝতে পারিনি। বুঝতে পারলাম হঠাৎ দু'দিন আমার ফোন বন্ধ থাকার পর একদিন ফোনটা চালু করার পর। ফোনটা চালু হয়ে যেইমাত্র নেটওয়ার্ক কানেক্ট হলো মুহুর্তেই ওপ্রান্ত থেকে মেয়েটার ফোনের কলিং টোন বেজে উঠল আমার মোবাইলে। রিসিভ না করে কেটে দিয়ে এ পাশ থেকে ফোন করি। ও রিসিভ করে কিন্তু আমি কোন কথা শুনতে পাই না। বার বার হ্যালো হ্যালো করেই যাচ্ছি আমি কিন্তু ওপাশে তবুও কোন সাড়া নেই। শুধু ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নার শব্দ পাচ্ছি আমি।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:৫৬