somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসমাপ্ত

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তিন দিন হল আপনার কোন পাত্তা নেই, কিন্তু কেন? কল রিসিভ করতেই কথাগুলো শুনতে হল তামিমকে। তামিম কোন কিছু না বলেই রেখে দিল। কারণ মাত্র রুমে এসে কাঁধের ব্যাগটা রেখেছে। এমন ঝাঁজালো কথা শ্রবণের কোন মুড নেই। আর সেটা যদি হয় অপরিচিতা। সাধারণত এই মোবাইলটা রুমেই থাকে, বিশেষ কেউ না হলে নিজের কাছে রাখা মোবাইল নাম্বার দেয় না তামিম। একটা থিম নিয়ে চিন্তায় মগ্ন আছে এমন সময় কল এলে কেউ কি মনোযোগ দিতে পারে নাকি? তাই শুধু কাছের মানুষদের জন্য যে মোবাইল সেটাই সাথে রাখে। আর যেটা রুম এ থাকে সেটা যে চায় তাকেই দেয়া হয়। যতক্ষণ অবসর থাকে ততোক্ষণ তো রুমেই থাকা হয় তখন কথা বলে। কাজ থাকলে তো অন্যদের সময় দেয়া সম্ভব না। তবে এই অবরোধ আর হরতাল এর কারণে কোন কাজ নেই। তাই প্রায় দিন সাথেই নিয়ে যেত। একটা জরুরী কাজে ঘুরতে বেরিয়েছিল তাই নেয়া হয়নি। তামিম চায়নি এই কয়েকদিন অন্য কেউ তাকে বিরক্ত করুক । এতক্ষণ ফ্রেশ হতে সময় নিল। কল লিস্ট চেক করে পরিচিতদের কল করে কথা শেষ করে রাখল। মৌশাত কিছু টেক্সট পাঠিয়েছে পড়ল কিন্তু উত্তর দিল না। একজন অপরিচিতা কে এত গুরুত্ব দিতে নেই পড়ে অধিকারের জায়গায় বসে রাজত্ব করবে অধিকার নামক রাজ্যে। যখনই একটু পড়তে বসার জন্য প্রস্তুত হল তখনই বার বার কথাগুলো মাথায় ঘুরতে লাগল। সেই অপরিচিতা, কতজনই তো কত কিছু বলে কিন্তু এই মৌশাত এর কথা কেন জানি একটু অন্যধাচের মনে হতে লাগল। তামিম প্রতিদিন ঠিক কখন বাসায় ফেরে সেটা নাকি সে বুঝতে পারে। আবার কখন ঘুমাতে যাওয়া হয় সেটাও। তামিম আপন মনে কথা বলছে “আমার সাথে দশমিনিট কথা বলে নাকি আমার চোখের আবরণ বুঝে গেছে। আমি যে চোখের উপর একটা সামান্য আস্তরণ করে রেখেছি মৌনিক ভাবে সেটা সে বুঝেছে। কোন অপরিচিতা কে যে ভাল করে দেখি না, দেখার সুযোগ নেই না সেটা কি করে বুঝল? শেষ টেক্সট একটু বেশি অভাগ করেছে, “ আপনার মাথায় শুধু গোবর থাকলেও চলত, কিন্তু গোবর এর পাশাপাশি যেটা আছে সেটা আমি”। একটু সাহসীই বটে। কিন্তু আমিটা দিয়ে কি বুঝচ্ছে ঠিক বুঝতে পারছে না তামিম ।

সকাল সাতটায় উঠেই তামিম প্রথমে মোবাইল এর দিকে হাত বাড়াল। কেন মোবাইল এর দিকে হাত চলল সে নিজেও জানে না। কিন্তু শুভ সকাল বলে যে টেক্সট টা স্ক্রিন এ ভাসছে সেটা মৌশাতের। তাও দেয় হয়েছে মাত্রই, মানে মিনিট দুই হল। অথচ মোবাইল সাইলেন্ট ছিল। ঘুম থেকে ওঠার মিনিট বিশেক এর মধ্যে কল এলো, কি করে বুঝল ফ্রেশ হয়ে মাত্রই রুম এ প্রবেশ করল।
তামিমঃ বলুন
মৌশাতঃ এতদিন কোথায় ছিলেন?
তামিমঃ কাজে ছিলাম, কি দরকার বলুন তো?
না, এমনেই বললাম। কেমন আছেন?
ভাল, তুমি কেমন ?
কাল পহেলা ফাল্গুন, ফ্রি আছেন?
কেন আসবে নাকি?
আগে বলেই দেখুন না।
হুম ফ্রি আছি।
আচ্ছা রাখি।
একটু ভড়কে গেল তামিম, এমন পাগল কেন? নিজেকেই জিগ্যেস করল।

সকাল থেকে বসন্ত এসে গেছে গানটি বার বার শুনছে তামিম। আজ বের হবে সেটা শাবিপ্রবির জন্ম দিন বলে। প্রস্তুত হয়ে যখন ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ এ চলল ঠিক তখন মনে হল এটা যেন হলুদ গাঁদা ফুলের বাগান, সে বাগানে নানান ফুলের মাজে নিজেকে আগাছা জাতীয় কোন অসুন্দর লতা মনে হচ্ছে। মাথায় একটা পাখির বাসা নিয়ে লতা ঘুরছে। কিন্তু কিছু করার নেই। র‍্যালি শেষ করে কোন রকমে রুম এ গেলেই বাঁচে। রুমে তো পাঞ্জাবী ছিল, ছিল প্রিয় রং এর টি-শার্ট। র‍্যালিতে বেশ ভালই মজা হল।

দুপুর হতে চলল, এখনো কিছু পেট এ পড়েনি। সবাই যখন প্রিয় মানুষদের নিয়ে ব্যস্ত ঠিক তখন তামিম ভাবছে অন্য কথা। কি করে দিনের বাকি অংশ কাটানো যায়। খাবার খেতে রুম থেকে বের হয়েছে মাত্র, রুমের নাম্বার এ রিং বাজছে।
শুভ বাসন্তী,
আপনি কোথায়?
কেন বলতো !
দরকার আছে বলুন।
রুম এ। খেতে যাচ্ছি ।
ঠিক আছে, কিন্তু কোথায় খেতে যাচ্ছেন?
গেট এ ।
আচ্ছা খেয়ে আসুন। কথা আছে। প্লিজ তাড়াতাড়ি আসবেন
দেখি।
আজ যাতে আর রুমে আসতে না হয় সে জন্য পাঞ্জাবী আর গায়ে চাঁদর জড়িয়ে বেড়িয়ে পরল । ইচ্ছে করেই মোবাইল রুমে রেখে গেল দুটোই ।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×