ফ্রি ইনফরমেশন পেপার
সাবটাইটেল- কর্মসংস্থানমূলক শিক্ষা
আমাদের দেশে বেকারের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কোন সূত্র মতে এ সংখ্যা কমবেশি ২ কোটি, আবার কোন সূত্র মতে ৩ থেকে সাড়ে তিন কোটি। এই বিপুল সংখ্যক বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের দায়িত্ব শুধু সরকারের নয়, সাধারণ জনগণসহ সকলের।
আমরা জানি শিক্ষা শিক্ষা কর্মসংস্থানের পাথেয়। আবার এও জানি আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে পারছে না। বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে কাটাছেঁড়া না করে কিংব ছেঁটে না ফেলে শুধু সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ পরিকল্পনার দ্বারাই এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে কর্মসংস্থানের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব।
একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, কোন ধরনের শিক্ষালাভ করে না এমন জনগোষ্ঠী প্রায় ৬ কোটি। ১৫ কোটি জনগোষ্ঠীর এই দেশে প্রাথমিক পর্যায় পর্যন্ত পড়ালেখার সুযোগ পায় শতকরা ৩২ জন, অর্থাৎ প্রায় ৫ কোটি। তারপর এদের বিশাল একটি অংশ অর্থাৎ শতকরা প্রায় ২০ ভাগ অর্থাৎ ৩ কোটি লোক ন্যূনতম উচ্চশিক্ষার দ্বারপ্রান্তেও যেতে পারেনা।
আমরা খুব সহজেই এই ৩ কোটি লোককে কর্মসংস্থানমূলক শিক্ষার আওতায় এনে শিক্ষিত করে তুলতে পারি। শিক্ষার মধ্য থেকেই তারা উপার্জন করবে। আমাদের দেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা সার্টিফিকেট নির্ভর এবং কর্মমুখী। এটিকে কর্মসংস্থানমুখী করা যায় খুব সহজেই।
৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা কারিকুলামে কৃষি শিক্ষা নামে একটি বিষয় পড়ানো হয়। এর প্রতিটি অধ্যায়ে ব্যবহারিক অংশটুকু যথাযথভাবে অনুশীলন করা গেলে আমাদের দেশে শিক্ষার সাথে কৃষির সমন্বয় করে একটা বিপ্লব ঘটানো সম্ভব।
একটি বিষয় পরিস্কার যে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে আমাদের দেশেই পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে। পণ্যের উৎপাদন বাড়াতে হলে আমাদের দেশে কি কি পণ্য বা সেবা পর্যাপ্ত আছে সেগুলো আগে চিহ্নিত করা দরকার। ৬ষ্ঠ শ্রেণীর কৃষি শিক্ষা বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ের ব্যবহারিক অংশে একটি প্রশ্ন আছে এরকম-
তোমার গ্রামে/এলাকায় কোন শাক-সব্জী বেশি উৎপাদিত হয় তা লিখ এবং বৎসরের শুরু থেকেই লিখে শ্রেণী শিক্ষকের নিকট জমা দাও।
উক্ত প্রশ্নের উত্তরটি শিক্ষার্থীর মাধ্যমে জেনে গ্রামে গ্রামে এক বা একাধিক পণ্য চিহ্নিত করা সম্ভব। এখান থেকেই শিক্ষার্থীরা ওয়ান ভিলেজ ওয়ান প্রডাক্ট, ওয়ান স্কুল মেনি প্রডাক্ট, ওয়ান প্রডাক্ট অল ভিলেজ ইত্যাদি শিখবে। শিক্ষার্থীরা এই পণ্যটির উৎপাদন, সংরক্ষণ, মূল্য সংযোজন, বাজারজাতকরণ ইত্যাদি শিখবে। এতে করে পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ বজায় রাখা সম্ভব হবে।
এডুকেশন বেজড প্রডাক্টশন অ্যান্ড মার্কেটিং বা শিক্ষাভিত্তিক উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে উপরোক্তভাবে কর্মসংস্থামূলক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব। এভাবে দেশের বৃহ্ত্তর জনগোষ্ঠীকে একই সাথে শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


