সময় মত এ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের আব্দুল মালেক নামের এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
মৃত্যুর খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা মেডিকেল ও উপাচার্যের বাসভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যপক হামলা চালিয়েছে। বিক্ষুদ্ধ- শিক্ষার্থীরা ঢাকা আরিচা মহাসড়ক অবরোধ ও গাড়ি ভাংচুর করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে গেলে তোপের মুখে পড়েন প্রক্টর ড. সোহেল আহমেদ।
এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার খানিক বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল ও ভাঙচুর করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে তীব্র আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জানা গেছে, পরিসংখ্যান বিভাগের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র আবদুল মালেক মঙ্গলবার রাতে হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়। মালেককে সন্ধ্যা ৭ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে কর্তব্যরত ডাক্তাররা উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভারের এনাম মেডিকেলে নিতে বলে।
তবে এসময় মেডিকেলে এ্যাম্বুলেন্স না থাকায় এক ঘন্টা পর বিশেষ ভাবে এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে মেডিকেলে পাঠানো হয়। পরে এনাম মেডিকেলের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে। এদিকে মালেকের লাশ রাত ৯টার দিকে মালেকের আবাসিক হল মওলানা ভাসানী হলের সামনে আনলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সোহেল আহমেদ এবং হল প্রভোস্ট ড. খবির উদ্দিন শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন। পরে এক পর্যায়ে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয় প্রধান মেডিকেল অফিসারের কক্ষে।
এরপর উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনের বাসভবনের সামনে হামলা করে। বাসার সামনে থাকা একটি এ্যাম্বুলেন্স ও দুটি মাইক্রোবাস এবং বাসার ভিতরে ঢুকে একটি প্রাইভেট কার ভাঙচুর করে। তবে এসময় উপাচার্য বাসভবনে ছিলেন না। এরপর প্রভোস্টের বাসা, রেজিস্ট্রার ভবনেও ব্যপক ভাঙচুর করে শিক্ষার্থীরা।
পরে রাত ১০ টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনে দ্বিতীয় দফায় হামলা করেছে শিক্ষার্থীরা। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বটতলা এলাকায় বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, এ্যাম্বুলেন্সের জন্য প্রক্টরকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
মওলানা ভাসানী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. খবির উদ্দিন বলেন, আমাকে রাত ৭ টা ৫১ মিনিটে এ্যাম্বুলেন্স লাগবে জানালে ৫ মিনিটের মধ্যে ব্যবস্থা করেছি।
এ বিষয়ে প্রক্টর ড. সোহেল আহমেদ বলেন, আমি প্রথমে হল প্রভস্টের কাছ থেকে জানতে পারি। এরপর দ্রুত সময়ে এ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করি।
তিনি আরো বলেন, এ্যাম্বুলেন্সের বিষয়টি মেডিকেল সেন্টারের দেখার কথা। তারপরও আমি চেষ্টা করেছি।
উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারটির বেহাল দশা হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় অসুস্থ হয়ে কোন সেবা পায় না। এর আগেও বেশ কিছু ছাত্র মৃত্যুবরণ করেছে সময় মত এ্যাম্বুলেন্সের অভাবে। প্রশাসন বিভিন্ন সময় মেডিকেল সেন্টার আধুনিকায়ন করা হবে বলে আশ্বস্ত করলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
-সৌজন্যেঃ টাইমস ওয়ার্ল্ড ডট কম