আইয়ুব খানের বেশ জনপ্রিয়তা ছিল। যথেষ্ট উন্নয়নও করেছিলেন পূর্ব পাকিস্তানে। তবে শেষ রক্ষা হয় নি। গণতন্ত্র দেন নি। তাছাড়া সকলক্ষেত্রেই পূর্ব পশ্চিমের বৈষম্যও ছিল প্রকট। আরও বহুবিধ কারণে পূর্বে ওনি সুবিধা করতে পারেন নি। আওয়ামীলীগ ৬ দফা দাবি জনপ্রিয় করে তোলে। আইয়ুব শত চেষ্টা করেও থাকতে পারেন নি। আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন। ক্ষমতা দেন ইয়াহিয়ার কাছে। '৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগ বিজয়ী হয় কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানিরা ক্ষমতা দেয় না। পূর্বাঞ্চলে গড়ে উঠে তীব্র আন্দোলন। ফলাফল স্বাধীনতা যুদ্ধ। এরপর ৯ মাসের যুদ্ধে দেশ স্বাধীন।
২
ক্ষমতায় আসেন শেখ মুজিবুর রহমান। সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। সাড়ে তিন বছর দেশ চালনা করেন। সাফল্য যেমন ছিল ব্যর্থতাও কম ছিল না। যাহোক, দেশকে মোটামুটি পুনর্গঠিত করেছিলেন কিন্তু নেতৃবৃন্দ এবং আমলারা দেশকে লুটেপুটে খেল। আধা মিলিশিয়া বাহিনী রক্ষীবাহিনী গঠন করেছিলেন বিশৃঙ্খলা দমনে, অস্ত্র উদ্ধারে। কিন্তু দেখা গেল এরা ব্যক্তিগত ক্রোধ এবং লোভ দমনে অগ্রসর হলো।
সরকারের ব্যর্থতাগুলো সামনে এনে জাসদ সহ অন্যান্য রাজনৈতিক এবং চরমপন্থী দল শুরু করল অরাজকতা।
সবকিছু নিয়ন্ত্রণে আনতে আনা হলো বাকশাল। উদ্দেশ্য ভালো। কিন্তু সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতাটা ততদিনে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। ওনার নামে গুজবের ডালপালা।
সেনাবাহিনীর একটা অংশ এবং বিদেশী গোয়েন্দাদের যোগসাজশে ওনি সপরিবারে একসময় নির্মমভাবে নিহত।
৩
কয়েকমাস ক্ষমতায় খোন্দকার মোশতাক। এরপর তাহের, জিয়া, খালেদ মোশাররফদের ক্ষমতার বাড়াবাড়ি। খালেদ হত। তাহেরেরও বিদায়। দৃশ্যপটে জিয়া। সবচেয়ে কমবয়সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি।
তাহেরের সাথে বেঈমানী, শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের পুনর্বাসন, যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন সহ নানাবিধ কলঙ্কের কালিমা। এছাড়া বিদ্রোহের নামে শত শত মুক্তিযোদ্ধা সেনা হত্যা। তবে জনগণ এসব ভুলে গেল। প্যান্ট-স্যুট-টাই পরা একজন চশমাপরা লোক খাল কাটতে নেমে গেলেন। দেখার মতো দৃশ্য। লোকজন মনে করল 'কত যে আপন'।
এ দেশের অনেক মানুষই আইয়ুবকে পছন্দ করত। তাছাড়া ঔপনিবেশিক শাসনের প্রভাব তো আছেই ( লোকজন কর্তৃত্ব পছন্দ করে)। তারা আইয়ুবের পর পছন্দ সই একজনকে পেল। একসময় ওনি নিহত হলেন বটে তবে দেখা গেল এখনও দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি।
ওনার পরবর্তীতে এরশাদ এসেছিলেন বেশিদিন ক্ষমতায়ও ছিলেন কিন্তু আওয়ামীলীগ-বিএনপির দাপটে সুবিধা করতে পারেন নি। কিন্তু তারপরও ওনার মোটামুটি জনপ্রিয়তা ছিল। ওনি কারাগারে থেকেও জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছিলেন। ওনার দলের বেশ কিছু আসন আছে।
এরশাদের পর থেকে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র আসে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সঙ্কোচিত করা হয়। সর্বময় ক্ষমতায় ন্যস্ত করা হয় জাতীয় সংসদ বরাবর। যদিও মূল ক্ষমতা থেকে যায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০২২ সকাল ৯:৪৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



