আফগানিস্তানে মেয়েদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ রহিত করা হয়েছে। চতুর্থ শ্রেণির ওপর পড়ালেখার সুযোগ নেই। মেয়েদের চাকরির ওপরও কঠোর বিধিনিষেধ। এবার জানা গেল, রাজনৈতিক দলগুলোর সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে তালেবান সরকার। বুধবার (১৬ আগস্ট) তালেবান প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশটিতে কার্যকর শরিয়াহ আইনের পরিপন্থী হওয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই এখন থেকে দেশটিতে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানো যাবে না। খবর ভয়েস অব আমেরিকা।
তালেবান সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন বিচারমন্ত্রী শেখ মৌলভি আবদুল হাকিম শারায়ে রাজধানী কাবুলে তার মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি বলেন, 'রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। কারণ, শরিয়াহ আইনে রাজনৈতিক দলের কোনো বৈধ অবস্থান ও স্বীকৃতি নেই। জাতীয় স্বার্থরক্ষায় এসব দলের কোনো ভূমিকা নেই। এমনকি নাগরিকেরাও এসব দলের কার্যক্রম পছন্দ করে না।' পরে বিচারমন্ত্রী আবদুল হাকিমের এ ঘোষণা বিবৃতি আকারে প্রকাশ করা হয়। তালেবাননিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম ওই বিবৃতি প্রচার করে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, এ ঘোষণা এটাই প্রমাণ করে যে আফগানিস্তানে বহুপক্ষীয় রাজনৈতিক চর্চা চিরদিনের জন্য বন্ধ করতে চাইছে তালেবান। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রক্ষমতায় নিজেদের একচেটিয়া অধিকার ধরে রাখার পক্ষে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল তারা।
২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। ওই সময় তালেবানের প্রত্যাবর্তন ও পশ্চিমাদের বিশৃঙ্খল পশ্চাদপসরণের ঘটনাপ্রবাহ আফগানিস্তানের ওপর দুই দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোটের উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। এ পর্যন্ত কোনো দেশই তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসার দ্বিতীয় বার্ষিকী উদযাপনের ঠিক পর দিন এমন ঘোষণা দিয়েছে ডি-ফ্যাক্টো তালেবান সরকার।
বাংলাদেশে এখনও অনেক তালেবান ভক্ত আছেন, যারা আবার গণতন্ত্র চান। তারা আসলে কী ভাবছেন? গণতন্ত্র আবার তালেবানভক্তি কি একসঙ্গে যায়?
অনেকে আবার জনগণের পছন্দকে অতি মূল্যায়ন করে বলেন, জনগণ যাকে খুশি তাকে মনোনয়ন দিক মেনে নেওয়া উচিত। জনগণ যদি হিরো আলমকে নির্বাচিত করে তাহলে? ইসলামপন্থীরা নরেন্দ্র মোদীকে, প্রগতিশীলরা এরদোয়ানকে অপছন্দ করেন কেন? তারা তো জনগণের ভোটেই নির্বাচিত।
সংখ্যাধিক্য মানেই সঠিক সিদ্ধান্ত; এই ধারণা কতটুকু যৌক্তিক? সংখ্যাধিক্যের ভোটের কারণে অনেক অন্যায় বিষয় কি আইন আকারে আসছে না? একটা দেশে চোর-ডাকাত, গুন্ডা, বদমাশও ভোট দেয়। এদের কি ভোটের অধিকারই থাকার কথা? ডাকাত তো ভোট দেবে ডাকাতের পক্ষেই। কত প্রশ্ন মাথায় ঘুরে, পাই না তার উত্তর।
পৃথিবীতে অনেক বড় বড় কমিউনিস্টকে দেখা গেছে পুঁজিবাদী আমেরিকায় শেষকালে ঠাঁই নিয়েছেন। এখনও যদি দেশের কাউকে কোনো দেশ বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, দেখা যাবে আফগানিস্তান, চিন বা রাশিয়া নয়, পুঁজিবাদী দেশগুলোই বেছে নেবেন। নিটশে বলেছিলেন, না পাওয়ার ক্ষোভ থেকেই কমিউনিজমের জন্ম। কথাটা শত ভাগ সত্যি।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:৫৫