আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি না মানায় বিএনপি '১৪ সালের নির্বাচনে আসেনি। দলের অস্তিত্ব রক্ষায় '১৮ সালের নির্বাচনে এসে কয়েকটি আসন পেয়েছিল। এ সময়গুলোতে খালেদা জিয়া মোটামুটি সুস্থ ছিলেন। এখন ২০২৩ সালের শেষাশেষি। পরবর্তী নির্বাচন আসতে ১১-১২ দিন আছে। আর এ নির্বাচনে বিএনপি আসছে না। কেন আসছে না?
দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অতটা নিরপেক্ষ হবে না; এ জন্যই বিএনপি নির্বাচনে আসছে না। এটা প্রচলিত কথা। আসলেই কি তাই? এ কথার মানে কি দাঁড়ায় না ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলে তারা নির্বাচনে যেত? আমেরিকার কাঁধে সওয়ার হয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা এখন আর নেই। আমেরিকা পিছু হটেছে। বিএনপিও হতাশ। তবে তারা কি এটা বুঝতে পারল না সংসদে গিয়ে কিছু আসন পেলেও তারা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলতে পারত? এবার যদি নির্বাচনে না যায়, তাহলে তো তারা অস্তিত্বের হুমকিতে পড়বে।
জিয়া জোরপূর্বক ক্ষমতা দখল করেছিলেন। এরপর এরশাদ। '৯১ এর পর ২০০৮ এর নির্বাচন শুধু স্বতস্ফূর্ত হয়েছিল। এছাড়া যত নির্বাচন হয়েছে, সব কাড়াকাড়ির। আওয়ামী লীগ অত সহজে ক্ষমতা ছাড়বে না; এ বাস্তবতা মাথায় রেখেই বিএনপির নির্বাচনে এসে শক্তি সঞ্চয় করা উচিত ছিল। জনসমর্থন আদায়ের চেষ্টা করা উচিত ছিল।
এতদ্বসত্ত্বেও কেন বিএনপি নির্বাচনে আসেনি? তাদের নীতি-নির্ধারকরা কি কম বোঝেন? ২৮ অক্টোবরের আগে-পরের ঘটনা পর্যালোচনা করলে বোঝা যায়, ওরা আসলে একটা গণ্ডগোল করে নির্বাচনে না আসার বাহানা তৈরি করেছিল। নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের অজুহাত দেখিয়ে বলবে, নির্বাচনে সুষ্ঠু হবে না। সত্যি বলতে দলের হাল ধরার মতো এখন কেউ নেই। তারেক রহমান হয়তো চাচ্ছেন না জিয়া পরিবারের বাইরের কেউ মূল দায়িত্বে আসুক।
বিএনপির এমন অনেক নেতা আছেন, যারা দলের নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। তারেক হয়তো নিয়ন্ত্রণ হারানোর ভয়ে তাদের হাতে ক্ষমতা ছাড়ছেন না। দল টিকিয়ে রাখতে গেলে এমন ছাড় দিতেই হয়। পাকিস্তানের ইমরান খান তার প্রধান আইনজীবীকে দলীয় প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। উনি বুঝেছেন, এটা ছাড়া দল টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। অথচ তারেক-খালেদা জিয়া ক্ষমতা হারানোর ভয়ে দলের নিয়ন্ত্রণ না ছেড়ে দলটাকেই অস্তিত্বের হুমকিতে ফেলে দিয়েছেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:১০