ব্লগপোস্ট পড়ে বুঝতে পারেন দেশের বর্তমান পরিস্থিতি কী? চুরি-খুন-ধর্ষণ নিয়ে পোস্ট আসে? চাঁদাবাজি-ডাকাতি নিয়ে পোস্ট আসে? আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ৬ মাস চলে যাচ্ছে। এখনও গত ১৬ বছরেরর কেচ্ছা-কীর্তন চলছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতেও বিনা পয়সায় দালাল পাওয়া যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের দালালেরা তো পয়সা খেয়ে দালালি করত, এখনকার দালালেরা মাগনা সেবা দিচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতেও বলা হচ্ছে দেশ নাকি ভালো চলছে। প্রমাণ দেওয়ার পরও বলছে কমই। আসলেই কি কম? যদি পরিস্থিতি যদি একই থাকে, সরকার হটিয়ে জনগণের কী লাভ হলো? নিজেরা সুবিধা পাচ্ছে বলে সব দেখেও না দেখার ভান করছে।
একাত্তরে ৯ মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় অনেক অস্ত্র সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। এসব ব্যবহার করে ডাকাতি হয়েছে। চুরি-চামারি তো ছিলই। তাছাড়া মানুষের অভাব ছিল। দেশের ওই সংকট সামলাতে পারেনি তৎকালীন সরকার। এসব নিয়ে সমালোচনা হয় এখনও।
কিন্তু এখন দেশের মানুষ ওই সময়ের মতো অভাবী না। সবাই খেয়েপরে বাঁচতে পারে। তারপরও দেশের যে ভয়াবহ অবস্থা, তাও এসব নিয়ে তেমন কথা হয় না। দেখলাম সবাই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মুণ্ডুপাত করছে। আরেকজনের নাম মুখে নেওয়া বারণ। কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থেকে দেশের এ অবস্থা থাকলে তখন দোষ শেখ হাসিনারই হতো। শেখ হাসিনা সম্পর্কে যা খুশি বলা যায়, অন্যদের বিষয়ে চুপচাপ।
কীসের সাথে তুলনা করা যায় বিষয়টা? একজন ক্ষমতায়, যে আপনার ভাই অথবা কাছের কেউ। সে খারাপ হলেও তো আপনি অন্ধভাবে তাকে সমর্থন দেবেন। এই যে ৫ আগস্টের পর বিএনপি-জামায়াতি অপরাধীরা যে গণহারে ছাড়া পেল, কিছু বলেছেন? সবাই আপনার কাছে ফেরেশতা। কিন্তু আপনার শত্রু বায়ুত্যাগ করলেও আপনার কাছে মহাপাপ। যেহেতু আপনি সংখ্যায় বেশি বা ক্ষমতায় আছেন, আপনার দল ভারী আছে। ভাঙা রেডিও দিনের পর দিন বাজিয়ে গেলেন। মনে করছেন অন্যরা কিছু বোঝে না।
৫ আগস্টের পর বড় বড় আসামিরা পালিয়েছে। পালানোর সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। দুদিন ধরে ভাইরাল আবরার হত্যার আসামিরাও পালিয়েছে। থানা থেকে অস্ত্র লুট হয়েছে, পুলিশ হত্যা করা হয়েছে।
এত বছর ছাত্রলীগের মুণ্ডুপাত করলেও এখন দেখা যাচ্ছে তাদের লুঙ্গির নিচ থেকে শিবির বেরিয়েছে। আবরারের খুনিদের দুইজন শিবির। এই মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জামায়াতি। এগুলো নিয়ে কিন্তু আলোচনা হবে না। কারণ, এদের লোকজন বেশি। এরাই ওয়াজ করে আবার। বাংলায় যাকে বলে চোরের মার বড় গলা।
এখন পুলিশ সদস্যরা কাজ করছে না। কারণ, তাদের অনেকেই জেলে আছে। অনেকের নামে মামলা আছে। ৫ আগস্ট পরবর্তীতে যে ধাক্কা গেছে, মনে হয় না আগামী ১০ বছরে তারা উঠে দাঁড়াতে পারবে। মানুষ তো তাদের ভয় পায় না। র্যাব, বিজিবিও প্যানিকড।
সেনাবাহিনীর প্রতি দরদ ছিল মানুষের। এখন তাদের কেউ পুছে না। আনসার বাহিনীকে তো মানেই না।
এতকিছু ঘটে গেল, তাও কিন্তু আমলা বা রাজনীতিবিদদের স্বভাবের পরিবর্তন দেখা যায়নি। বিএনপি যে হারে চাঁদাবাজি শুরু করছে, মানুষ এখনই অতিষ্ঠ। নির্বাচন পেছালে তাদের কপালে শনি আছে, তাই তাড়াতাড়ি নির্বাচন চাচ্ছে। তাও তারা ক্ষমতালোভী না! সমন্বয়করা যে চাঁদাবাজি করছে, ধরা খাচ্ছে সেসবও গোপন থাকছে না। কিন্তু সেসব নিয়ে ব্লগে বা বড় পরিসরে আলাপ শোনা যায় কি? ওই যে বলেছি এই সংখ্যাই বেশি।
গাজার ৫০ হাজার মানুষ হত্যা করল ইসরায়েল, এ নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পদক্ষেপ কেমন দেখলেন? আমেরিকার একজন মরলে দেখেছেন তো ওদের কান্নার রোল পড়ে যায়? বাংলাদেশের পরিস্থিতিও এমন- ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগ আকামকুকাম করলে যে আলোচনা হয় দেশে-বিদেশে, তার সিকিভাগ কি বর্তমানে হচ্ছে? এত খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই, ডাকাতিও কি কারও টনক নড়াতে পারছে?
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:০৯