
প্রতিদিনই খুন-ধর্ষণের ঘটনা ঘটছেই। আইনশৃঙ্খলার যে ভগ্নদশা, সেসব নিয়ে কথা বললেও বিপদ। কখন নিজে বিপদে পড়ি! চাচা আপন প্রাণ বাঁচা। গতকালও কয়েকটা খুন-ধর্ষণের ঘটনা ঘটল। ব্লগে উঁকি দিয়ে দেখছিলাম এসব নিয়ে কোনো পোস্ট এসেছে কি না। দেখি এসব নিয়ে কোনো কথাই নেই। বোধহয় কারও মাথাব্যথাই নেই। নিজে আক্রান্ত হয়ে বেঁচে ফিরলে নিশ্চয়ই লিখবেন। তার আগে দালালি চলতে থাকুক।
গাজীপুরে গতকাল সাংবাদিক হত্যার ঘটনাটা একটু তুলে ধরে সবাইকে একটু বিরক্ত করি। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে সবাই জানেন।
বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুর মহানগরীর ব্যস্ততম এলাকা চান্দনা চৌরাস্তায় প্রাণ হারালেন সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৮)। দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ-এর গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার ভাটিপাড়া গ্রামের হাসান জামালের ছেলে তুহিন স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত এবং সিসিটিভি ফুটেজ থেকে জানা যায়, ছিনতাইকারীরা এক ব্যক্তিকে অস্ত্র দেখিয়ে ধাওয়া করছিল। সেই দৃশ্য পেছন থেকে মোবাইলে ধারণ করছিলেন সাংবাদিক তুহিন। একপর্যায়ে অস্ত্রধারীরা তার ওপর চড়াও হয়ে তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সাংবাদিক তুহিন চৌরাস্তা এলাকা দিয়ে হাঁটছিলেন। হঠাৎ একজন নারী ও পুরুষ আমাদের পাশ কাটিয়ে যায়। তখন কিছু যুবক হাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে চিৎকার করতে করতে ছুটে আসে। তারা বলছিল, ‘এই পাইছি, তোরা আয়।’ আমরা দেখি একজন ব্যক্তি দৌড় দিয়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। তখন তুহিন মোবাইল বের করে ভিডিও করতে থাকেন। অস্ত্রধারীরা হঠাৎ পেছনে ফিরে তাকায় এবং তাকে লক্ষ্য করে দৌড় দেয়। তুহিন ভাই চায়ের দোকানে ঢুকে আত্মরক্ষার চেষ্টা করলেও ওরা তাকে কুপিয়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, একজন নারীকে রাস্তার একপাশে এক ব্যক্তি জোরপূর্বক টেনে ধরছেন। সেই নারী পালাতে চাইলে ওই ব্যক্তি তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। ঠিক তখনই একদল অস্ত্রধারী যুবক সেখানে ছুটে আসে এবং ওই ব্যক্তিকে কোপাতে উদ্যত হয়। ওই ব্যক্তি পরিচয় অনুযায়ী বাদশা মিয়া পালিয়ে গেলেও কিছুক্ষণ পর আক্রান্ত হন সাংবাদিক তুহিন।
পুলিশ জানায়, এই ঘটনা নিছক একটি পারিবারিক বা ব্যক্তিগত বিরোধ নয়, বরং ছিনতাইকারী চক্রের অংশ। ওই নারীসহ একটা দল আছে, যারা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয়। পুলিশের মতে, ভিডিওতে দেখা নারীও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য হতে পারেন এবং ঘটনাস্থলে তার উপস্থিতি পূর্ব পরিকল্পনার অংশ।
তুহিন এদিন বিকেলে চাঁদাবাজি নিয়ে একটা লাইভ করেছিলেন। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস রাতে অন্য আরেকটা ঘটনায় তাকে মরতে হলো। যেকোনো সময় আমার আপনার পালাও আসতে পারে। কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে যদিও, কিন্তু এ মৃত্যুশোক পরিবার কী করে সইবে? দেশের আইনশৃঙ্খলার উন্নতি কে করবে? যতক্ষণ বেঁচে আছি, দালালি করে যাই। কী বলেন?
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



