বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সোয়াইন ফ্লুর চিকিৎসার জন্য নতুন দিক নির্দেশনা প্রদান করেছে । এই নতুন দিক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যাদের অন্য কোনো রকম জটিলতা বা রোগ-ব্যাধি নেই সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হলে তাদের ভাইরাসনাশক ওষুধ দেয়ার প্রয়োজন নেই। সর্দি জ্বর হিসেবে পরিচিত সাধারণ ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জাতে যে ধরণের উপসর্গ দেখা দেয় সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যেও প্রাথমিকভাবে সে ধরণের উপসর্গ দেখা দেয়। তবে কোনো চিকিৎসা ছাড়াই সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত বেশির ভাগ ব্যক্তি এক সপ্তার মধ্যেই পরিপূর্ণভাবে সেরে উঠেন বলে জাতিসংঘের তথ্য কেন্দ্র থেকে পরিবেশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে, সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য ওসেলটামিভির এবং জানামিভির নামে পরিচিত দুইটি ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। এই দুই ওষুধ রোগীর পরিস্থিতি অবনতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং মৃত্যু প্রতিহত করতে পারে। এ ছাড়া এই দুই ওষুধ ব্যবহার করা হলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পায় এবং রোগীর হাসপাতালে থাকার সময় হ্রাস করে। মৌসুমি ফ্লু বা সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত রোগীদের বেশির ভাগই নিউমোনিয়াতে ভুগে প্রাণ হারিয়ে থাকেন। তবে সঠিকভাবে ওসেলটামিভির এবং জানামিভির ব্যবহার করা হলে রোগীকে নিউমোনিয়ার খপ্পরে থেকে রক্ষা করা যেতে পারে। সোয়াইন ফ্লুতে যারা মারাত্মক ভাবে আক্রান্ত হয়েছে এবং যে সব রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটছে তাদের ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, যত দ্রুত সম্ভব এই অষুধ ব্যবহার করার পরার্মশ দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ওসেলটামিভির পাওয়া না গেলে তার পরিবর্তে জানামিভির ব্যবহার করা যেতে পারে। এম টু ইনহেবিটরস নামে পরিচিত ভাইরাস নাশক যে সব ওষুধ পাওয়া যায় সোয়াইন ফ্লুর ভাইরাস সে সব ওষুধের কার্যকারিতা প্রতিহত করতে পারে। সাধারণত গভবর্তী মায়েদের জন্য সোয়াইন ফ্লু আক্রমণ মারাত্মক ঝুকির কারণ হয়ে উঠতে পারে, তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, এমন মায়েদেরকে ফ্লুর প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দেয়া মাত্র ভাইরাস নাশক ওষুধ গ্রহণ করা উচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই দিক নির্দেশনায় শিশুদের দ্রুত চিকিৎসার আহবান জানিয়ে বলা হয়েছে, শিশু বিশেষ করে অনুর্দ্ধ ৫ বছরের শিশুদের যদি অবস্থার অবনতি ঘটে বা তারা যদি সোয়াইন ফ্লুতে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয় তবে তাদের চিকিৎসার জন্য সময় নষ্ট করা উচিত হবে না। তবে পাচ বছরের উর্দ্ধে যে সব শিশুর স্বাস্থ্য তুলনামূলকভাবে ভালো তাদের চিকিৎসার জন্য ভাইরাসনাশক ওষুধের দরকার নেই। কারো সোয়াইন ফ্লু হয়েছে বলে যদি নিশ্চিত হওয়া যায় বা সোয়াইন ফ্লু হয়েছে বলে যদি সন্দেহ করা হয়, একই সাথে যদি তার শ্বাস-কষ্ট হতে থাকে, বুকে ব্যাথা হয়, প্রচন্ড জ্বর থাকে এবং এ সব উপসর্গ তিন দিনের বেশি থাকে তবে দেরি না করে তাকে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে দ্রুত বা কষ্টকর শ্বাস নেয়া, সচেতনতার অভাব, ঘুম থেকে উঠতে বিলম্ব করা, খেলা-ধূলার ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা বা আগ্রহ হ্রাস পাওয়াকে বিপদজনক উপসর্গ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে।
তথ্যসূত্র: ২৩ আগস্ট (রেডিও তেহরান)