somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কৈশোরের বইঃ আমার প্রিয় তিন গোয়েন্দারা...

২৫ শে জুন, ২০১২ রাত ৮:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একটা সময় ছিলো যখন তিন গোয়েন্দার বই ছাড়া একটা দিন কল্পনাই করতে পারতামনা। কেমন বুঁদ হয়ে থাকতাম এক একটা বই এর ভেতর! অবস্থাটা এমন ছিলো যে তখন যে ৫০/৬০ টা ভলিউম বের হয়েছিলো তার কোনটার মধ্যে কি বই আছে তার সবটাই ছিলো আমার নখদর্পনে। প্রতিটা বইয়ের নাম সিরিয়ালি মুখস্থ বলে যেতে পারতাম। কি প্যাসনেটটাই না ছিলাম!! যে মনযোগ আমি ওদিকে দিয়েছি তার কিয়দাংশও যদি সে সময় পাঠ্যবই এর পেছনে দিতাম, বোধ করি, বাবা মা আমাকে নিয়ে দুঃশ্চিন্তা আরেকটু কম করতেন।


এবার আষাঢ় মাসের প্রথম দিন থেকেই বৃষ্টি পড়া শুরু হয়েছে। সারাদিন টিপটিপ কিংবা ঝম ঝম যে ভাবেই হোক বৃষ্টি পড়ছে তো পড়ছেই। ছুটির দিন। তাই বাইরে বের হবার তাড়া নেই। এই সময় বিকেল গুলো খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। বৃষ্টি পড়ছে। আলো ফুরিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ এর মধ্যেই একটা অপার্থিব ভাব চলে আসে। এরকম একটা সময়ে বই পড়তে যে কি আনন্দ তা যে বুঝতে পারলোনা তার জন্মই বৃথা। আজকালকার বই বিমুখী ছেলে মেয়ে গুলো যে কি মিস করে চলেছে তা তারা নিজেরাও বুঝতে পারছে না।

তিন গোয়েন্দাকে হঠাৎ খুব মিস করছি এই একনাগাড় বৃষ্টির কারণেই। তখন এইরকম বৃষ্টি পড়লে আমি সোজা গিয়ে আমার জানালার পাশে বসে যেতাম। রহস্যের বই গুলোতে বেশির ভাগ সময়েই বৃষ্টি পড়ে। বাইরের বৃষ্টি, বইএর ভেতরের বৃষ্টি, দুটোয় মিলে সে কী অতীন্দ্রিয় পরিবেশের সৃষ্টি করতো তা বর্ণণা করার মত না।

বই পড়তে পছন্দ করি কারণ তা পরিবেশের মধ্যে নতুন পরিবেশ সৃষ্টি করে। এখন আমি এক জগৎ এ আছি। বই এর ভেতর জগৎটা সম্পূর্ণ অন্যরকম। আমার প্রিয় তিন গোয়েন্দা গুলোও একটু অন্যরকম। পড়লে মনে হয় চারপাশে কেমন যেন গুমোট একটা ভাব। কিছু একটা যেন ঠিক নেই! মনে পড়ে ‘প্রেতের ছায়া’ বইটির কথা। পড়ে যাচ্ছি তো যাচ্ছিই। কিন্তু কিশোর মুসা রবিন এর দেখা পাচ্ছিনা। অথচ এদিকে কয়েকটা মেয়ে তাদের বান্ধবীর বাসায় বেড়াতে এসে একের পর এক মরতে বসেছে! ওই বই এর শেষে ছোট খাটো এমন এক টুইস্ট ছিলো যে রীতিমত চমকে গিয়েছিলাম।
‘বিপজ্জনক খেলা’র কথা বলা যায়, যেখানে এক পাগল লোকের খপ্পরে পড়েছে তিন গোয়েন্দা আর তাদের বন্ধুরা। নির্জন এক দ্বীপ এর মধ্যে ছেড়ে দেয়া হয়েছে তাদেরকে। হাতে কিছু সময় দিয়ে বলা হল পালাও ওই বনের মধ্যে। আর এক ঘন্টা পর তোমাদেরকে শিকার করা হবে!! কাহিনীটা খুব জনপ্রিয় এক বিদেশী বইএর। কিন্তু জানিনা এ বই গুলো পড়তে পড়তে যেমন গায়ের রোম দাঁড়িয়ে যেতো মূল বইগুলো পড়লে তেমনটা হবে কিনা।

রকিব হাসান, লেখকের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো


সিরিয়াল কিলারের কাহিনী নিয়ে লেখা আরেক ফ্রাঙ্কেস্টাইন, ভ্যাম্পায়ারের দ্বীপ, সৈকতে সাবধান, মায়াজাল, রাত্রি ভয়ঙ্কর, গ্রেট মুসাইয়োসো… এখন বুঝতে পারছি টুইস্ট আর সিরিয়াল কিলারের মুভি গুলো এতো ভালো লাগে কেনো!
এখন মনে হয় একটু বড় হয়ে গেছি। সেবা প্রকাশনীর ছোট সাইজের পেপারব্যাকে তিন গোয়েন্দা পড়া এখন সম্ভবত আমার গা গতরের সাথে মানানসই না, কিন্তু যখন কোন বই এর পেছনে ‘হ্যাল্লো কিশোর বন্ধুরা
আমি কিশোর পাশা বলছি অ্যামিরিকার রকি বীচ থেকে। জায়গাটা লস অ্যাঞ্জেলসে, প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে। হলিউড থেকে মাত্র কয়েকমাইল দূরে। যারা এখনও আমাদের পরিচয় জানো না, তাদের বলছি আমরা তিন বন্ধু একটা গোয়েন্দা সংস্থা খুলেছি। নাম…………’
দেখি তখন নিজেকে সংবরণ করা এখনো একটু কষ্টসাধ্য হয়েই দাঁড়ায় বৈকি!!
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×