somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়া্শিংটনের করুণ মৃত্যু: রক্তপাত: চিকিৎসা না অপচিকিৎসা

২৫ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশীল দেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনকে অসময়ে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে। তাও কিনা তার চিকিৎসকদের হাতেই। একবার নয় চার চারবার চিকিৎসকরা তার শরীরের বিভিন্নস্থানে ছুরি চালিয়ে শরীর থেকে রক্ত ঝরান। এমন নয় জর্জ ওয়াশিংটনের অজ্ঞাতসারে এটি হয়েছে। বরং তার সম্মতিতেই বারবার রক্ত ঝরানো হয়।


কি হয়েছিল তার? কেনই বা তাকে বারবার ছুরির নিচে গিয়ে রক্ত ঝরাতে হল? উত্তর পেতে যেতে হবে অনেক অনেক পেছনে......
১৭৯৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাত। ৬৭ বছর বয়সী সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের ঠান্ডা লেগেছে। গলাও ব্যথা করছিল। অবস্থা এমন পযার্যে গেল, পরদিন সকালে তিনি শ্বাস নিতে পারছিলেন না। সবাই ভেবেছিল গুড়, ভিনেগার ও মাখনের তৈরি প্রশান্তিদায়ী স্যুপটি খাওয়ালে তার ভাল লাগবে। কিন্তু তিনি তা খেতে পারছিলেন না।
ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়েন ওয়াশিংটনের স্ত্রী। স্বামীকে বললেন, ডাক্তার ডাকবো? মাথা নেড়ে না বললেন ওয়াশিংটন, কোন রকমে বললেন বাগানের যে তত্ত্বাবধায়ক তাকে ডাকো। তাড়াতাড়ি চলে আসল অরলিন্স।
তিনি এসেই ওয়াশিংটনের হাত কেটে রক্ত ঝরাতে শুরু করে দিল!
চমকে গেলেন? ভাবছেন তিনি কেন এটা করলেন? তিনি যা করেছেন তখন সবাই এটাকে সবচেয়ে উত্তম পন্থাই মনে করতেন।
তখন বেশির ভাগ চিকিৎসকই মনে করতেন দেহ থেকে রক্ত ঝরলে ধমনীর উত্তেজনা কমবে, যা শরীরের যন্ত্রণা কমাবে, নিদ্রা আনবে ও অবস্থার পরিবর্ত ঘটাবে। তাই চিকিৎসকরা জ্বর থেকে শুরু করে পাগলামি-সব চিকিৎসার জন্য এক ওষুধই (শরীর থেকে রক্ত গমন) ব্যবহার করতেন। ওয়াশিংটন ওইদিন ডাক্তারের অনুপস্থিতে যা করেছেন, তা ওই সময় অস্বাভাবিক ছিল না। নাপিত বা সাজর্ন মেডিক্যাল টেনিং আছে বা নেই যে কেউই মানুষের শরীর থেকে রক্ত ঝরানোতে ছিলেন ওস্তাদ। রোগীরা ডাক্তার না ডেকেই সিম্পলি হাতের একটি শিরা কেটে ফেলতেন কিংবা পা, বা ঘাড় ফুটো করে রক্ত বের করতেন।
ওয়াশিংটনের চিকিৎসক জেমস ক্রেইক সাড়ে ৯ টার দিকে এসেও একই কাজ করেন। অর্থাৎ আবার হাত কাটেন। এরপর আরেকবার।
কল পেয়ে দুপুরে ওয়াশিংটনের বাড়ি এসে পৌছান চিকিৎসক এলিসা ডিক ও প্রখ্যাত ডাক্তার গুস্তাভো ব্রাউন। ডা. ব্রাউন ,ক্রেইকের সঙ্গে একমত হন যে ওয়াশিংটন টনসিলের যন্ত্রণা ভোগ করছেন এবং তিনি সুপারিশ করেন আরো রক্ত ঝরানোর। যদিও ডিক বলেছিলেন ওয়াশিংটনের গলায় অপারেশন করতে হবে। এজন্য তার শক্তি সঞ্চয় রাখা উচিত। এ মুহুর্তে তার আর রক্ত ঝরানো উচিত নয়। কিন্তু তরুণ বলে তার কথা পাত্তা দেননি জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকরা। চতুর্থবারের মত রক্ত ঝড়ে সাবেক প্রেসিডেন্টের শরীর থেকে। যদি তারা ডিকের কথা পাত্তা দিত তাহলে আমেরিকার প্রসেডিন্টের মৃর্তুটা এমন হতনা।
সন্ধা থেকে ক্রমেই নিস্তেজ হতে থাকেন প্রেসিডেন্ট। বুঝতে পারেন এই যাত্রায় আর রেহাই নেই। তিনি তার সেক্রেটারিকে খবর দিলেন। ওয়াশিংটনকে দেখে মনে হচ্ছিল কী একটা ভয় খেলা করছিল তার চেহারায়। একটা অদ্ভুত ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। নিস্তেজ কন্ঠে তিনি বলেন, আমার মৃত্যুর তিন দিন পর আমাকে কফিনে প্রবেশ করাবা। সেক্রেটারি সম্মতি জানাতেই তিনি প্রত্যুত্তরে বলেন, টিস ওয়েল (Tis well) .
১৪ তারিখ গভীর রাতে চলে গেলেন আমেরিকার প্রথম পেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন।
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঘরে আগুন, মন্দীরে হামলা, মাজার ভাঙ্গা, পিটিয়ে মানুষ মারা এমন মেধাবী এদেশে দরকার নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৩২



২০০১ সালে দেলাম ঘরে আগুন দেওয়া ও মন্দীরে হামলার জঘণ্য কাজ। ২০০৪ আবার দেখলাম ঘরে আগুন, মন্দীরে হামলা, মাজার ভাঙ্গা, পিটিয়ে মানুষ মারার জঘণ্যতম ঘটনা।জাতি এদেরকে মেধাবী মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিক্ষাঙ্গনে অপ্রীতিকর ঘটনার মুল দায় কুৎসিত দলীয় লেজুরভিত্তিক রাজনীতির

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৫

সোস্যাল মিডিয়ার এই যুগে সবাই কবি, লেখক, বুদ্ধিজীবি সাজতে চায়। কিন্ত কেউ কোন দ্বায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে রাজী নয়। ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটা মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে । এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোমলমতিদের নিয়ে আমি কি বলেছিলাম?

লিখেছেন সোনাগাজী, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪



আমি বলেছিলাম যে, এরা ভয়ংকর, এরা জাতিকে ধ্বংস করে দেবে।

ড: ইউনুসের সরকারকে, বিশেষ করে ড: ইউনুসকে এখন খুবই দরকার; উনাকে টিকিয়ে রাখতে হলে, কোমলমতিদের থামাতে হবে; কিভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিটিয়ে মানুষ মারার জাস্টিফিকেশন!

লিখেছেন সন্ধ্যা প্রদীপ, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৩

এদেশে অনেক কিছুই সম্ভব।বর্তমান এলোমেলো সয়য়ে যা সম্ভব না বলে মনে করতাম তাও সম্ভব হতে দেখেছি।তবে মানুষকে কয়েক ঘন্টা ধরে পিটিয়ে মারাকে ইনিয়েবিনিয়ে জাস্টিফাই করা যায় এটা ভাবিনি।তাও মেরেছে কারা?
একদল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আহা তোফাজ্জল

লিখেছেন সামিয়া, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৪




মৃত্যু এখন এমনি সহজ
ভিডিও করতে করতে;
কথা বলতে বলতে
ভাত খেতে দিতে দিতে;
কনফিউজড করতে করতে
মেরে ফেলা যায়।

যার এই দুনিয়ায় কেউ অবশিষ্ট নাই
এমন একজনরে!
যে মানসিক ভারসাম্যহীন
এমন একজনরে!
যে ভবঘুরে দিক শূণ্য
এমন একজনরে!
যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×