খবরটিকে নিছক এক দূর্ঘটনা ভাবলে ভুল হবে, এটা তো মৃত্যুফাঁদ ছিল। আর স্পস্ট করে বললে, এমনটাই তো হবার কথা ছিল। বেলুন ফোলানোর ক্ষেত্রে নিয়ম হল হিলিয়াম(He) গ্যাস ব্যবহার করা। এটা নিষ্ক্রিয় গ্যাস হওয়ায় নিরাপদ। কিন্তু এর দাম তুলনামূলক বেশী হওয়ায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এ কাজের জন্য হাইড্রোজেন গ্যাস(H₂) ব্যবহার করে। যা মারাত্মক দাহ্য পদার্থ, বাতাসের সংস্পর্শে এলেই বিষ্ফোরিত হয়। এখন জেনে বুঝে এসব জীবন্ত বোমা নিয়ে ঘুরে বেড়ালে এমনটা ঘটা কি অস্বাভাবিক?
এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে কিনা জানি না, তাদের প্রতিবেদনে কি আসবে সেটাও জানি না। তবে এটা নিশ্চিত জানি, এরপরও আমরা সতর্ক হবো না।
২. গত কয়েক বছরে অন্যতম এক ঘটনা হল পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে মৃত্যু। নিছক মজা/দুষ্টোমি/কৌতুহলি হয়ে আমরা এমন সব কাজ করে বসি যাতে অন্যের জীবন সংকটময় হয়ে ওঠে।
গাড়ির চাকায় বাতাস দেবার জন্য যেসব কম্প্রেসার ব্যবহার করা হয়, তাতে উচ্চচাপে বাতাস থাকে। এক সেকেন্ডের ভগ্নাংশ সময়ে যে পরিমান বাতাস প্রবেশ করে, সেটাই একজনের জীবন নেয়ার জন্য যথেষ্ঠ। আফসোসের বিষয় হল, আমরা দেখছি, শুনছি কিন্তু বাঁদরামি ছাড়ছি না।
৩. আরও একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল: সেপটি ট্যাঙ্কে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু
একে অসাবধানতা, দুর্ঘটনা যাই বলিনা কেন অহরহ এটা ঘটেই চলেছে। অথচ সামান্য একটু সতর্ক হলে ম্যাসের কাঠি বা মোমবাতি দিয়ে পরীক্ষা করে দেখলে এসব অপ্রয়োজনীয় মৃত্যু এড়ানো সম্ভব।
উল্লেখ্য পুরাতন কুয়া, ভূগর্ভস্ত রুম/পানির হাউজ, ম্যানহোল, সেপটি ট্যাঙ্ক এসব জায়গায় বিষাক্ত গ্যাস জমা হয়(কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, মিথেন ইত্যাদি)। এসব স্থানে কেউ প্রবেশ করলে অক্সিজেন স্বল্পতায় মৃত্যু হতে পারে।
৪. পিটিয়ে মানুষ হত্য
আমরা বড় চেতনা সম্পন্ন জাতি! প্রতিদিন খুন, ধর্ষণ, অনিয়ম, দূর্নীতি দেখেও আমাদের চেতনা শীতনিদ্রায় থাকে; অথচ ছিঁচকে চোর ধরলে, ছেলেধরা/কল্লাকাটা গুজব শুনে কিংবা কথিত ধর্ম অবমাননার গন্ধ পেলে আমাদের চেতনা জাগ্রত হয়। আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে, সত্য মিথ্যা যাচাই না করে সাপ পেটানো/ভাংচুরেরর প্রতিযোগিতা শুরু করি। একটু সাবধান ভাই, অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে মানুষটা মারা যেতে পারে।
৫. শহরাঞ্চলে ইন্টারনেটের ব্রডব্যান্ড লাইনের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। প্রতিটি পোলে বিদ্যুতের তারের চেয়ে ইন্টারনেট লাইনের সংখ্যা কয়েকগুণ বেশী। এসব ঘিঞ্জিময় লাইন দেখলে বড় বিরক্তি লাগে। কর্তৃপক্ষ এসব ব্যাপারে সচেতন না হলে কে হবে?
৬. আরো কিছু পয়েন্ট:
১) ছবিটা দেখে আমার এক স্যারের কথা মনে পড়লো। ইন্টারে স্যারের কাছে রসায়ন প্রাইভেট পড়তাম। স্যারের বাড়ির গেটে প্রায়ই আবর্জনা ফেলে রাখতো(অন্য সবাই পলিথিনে মুড়ে বা পুরাতন বালতিতে করে রাখতো কিন্তু ওখানে মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতো)। সেখান দিয়ে যখন যেতাম বড় বিরক্তি লাগতো। মনে মনে ভাবতাম, শিক্ষিত লোকের এই সচেতনতা! স্যার সেই বাসাটা চেঞ্জ করেছে, অভ্যাসটা চেঞ্জ হয়েছে কিনা সন্দেহ।
২) ঢাকাতে থাকতে আমার দম বন্ধ লাগে। শহরটাতে আসলেই বসবাস করা কঠিন। যে দিকে তাকাই অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলা চোখে পড়ে। সরকার, কর্তৃপক্ষ আর আমরা জনগণ, সবাই মিলে শহরটাকে অযোগ্য করে তুলেছি/তুলছি। ভবিষ্যতে এর খুব একটা পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না।
গুগল সার্স করতে গিয়ে একটা ইউটিউব লিংক চোখে পড়লো, শিরোনামটা এমন "দেখুন ইহুদিরা কেন অভিশপ্ত এবং পৃথিবীর নিকৃষ্টতম জাতি?" ভিডিওটা দেখি নি, ইহুদিরা কেমন সে তর্কে যাব না তবে জাতি হিসেবে আমরা যে খুব একটা সভ্য নই, এ বিষয়ে আমার সন্দেহ নেই।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১১:১৯