somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাতীয় সঙ্গীত বিতর্ক

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগে আমাদের এইটা বুঝতে হবে যে জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে কি না। অন্য যেকোন বিষয়ের মত জাতীয় সঙ্গীত বিষয়েও কি সবার মতামত দেয়ার অধিকার আছে?

একটা সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিবেশে যে কেউ যে কোন বিষয়ের পক্ষে বা বিপক্ষে মত দিতে পারে। জাতীয় সঙ্গীতও তাই।

আমার জাতীয় সঙ্গীত ভালো লাগে। সেই ভালোলাগা যদি আরেক জনের উপরে চাপায়া দিতে হয় তাহলে সেইটা তো আর জাতীয় থাকে না। সেইটাকে জাতীয় করতে হলে যার ভালো লাগে না তার কথাটাও মনযোগ দিয়া শুনতে হবে। তার সাথে তর্কবিতর্কের রাস্তাটা খোলা থাকতে হবে। এখন যদি তর্ক-বিতর্কের রাস্তা বন্ধ করে বলা শুরু করি তুমি জাতীয় সঙ্গীতের বিরুদ্ধে বলেছো মানে তুমি আসলে একটা শয়তান তখন সমাজে সুস্থ মতপ্রকাশের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। এবং এর ফাঁকতালে ফ্যাসিজম ঢুইকা পড়ে।

এখন এই প্রজন্মের কেউ যদি প্রশ্ন করে এই যে জাতীয় সঙ্গীত আপনারা যখন ঠিক করছিলেন, তখন কি আমারে জিগায়া ঠিক করছিলেন। যখন আমারে জিগান নাই তখন আমার ঠেকা কি সেই জিনিস মানার? এর উত্তরে যদি বলেন, এইটা সবাই জাতীয় সঙ্গীত বইলা মাইনা নিচে তুমিও মাইনা নেও। তাহলে তার উপরে এইটা চাপায়া দিলেন। ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক, সামাজিক কিংবা ভাষাগত অথবা অন্য যে কোন কারণে এইটা তার ভালো না লাগতে পারে। তাহলে তার সেই ভালো না লাগাকে আমরা ডিল করব কিভাবে?
সুতরাং জাতীয় সঙ্গীতের এই প্রশ্নটা একটা তাত্ত্বিক প্রশ্নও বটে।

প্রথমত আমাদেরকে তার সেই ভালো না লাগার অধিকারকে স্বীকার করতে হবে, সম্মান জানাতে হবে। তারে বলব, যেহেতু দেশেরভাগ মানুষ এইটারে জাতীয়সঙ্গীত হিশাবে ওন করে, তুমি এইটা মাইনা নেও। গণতন্ত্রে যেমন সংখ্যাগরিষ্ঠের সরকারকে সংখ্যালঘিষ্টরা মাইনা নেয়। তুমিও এইটারে জাতীয় সঙ্গীত মাইনা নেও।

সে কি তাহলে নতুন কোন সঙ্গীতকে জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে হাজির করতে পারে?
হ্যাঁ পারে। অর্ধশত বছর আগে তারে না জিগায়া কেউ যদি তার জন্য জাতীয় সঙ্গীত ঠিক কইরা দিতে পারে, তবে সেও নিজের পছন্দের জাতীয় সঙ্গীত নিয়া হাজির হইতে পারতে হবে। আর তার সঙ্গীতরে যদি সবাই জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে মাইনা নেয় তবে সেইটাই জাতীয় সঙ্গীত।
সমাজে যদি এই তর্ক বিতর্কে অবকাশটুকু না থাকে তবে সেই সমাজে ফ্যাসিবাদের রাস্তা উন্মুক্ত। বেহুলার বাসর ঘরে যেভাবে সাপ ঢুকেছিল সেভাবে।

এটুকুন বুঝলে বর্তমান জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে কথা বলতে পারি।
এই জাতীয় সঙ্গীত নিয়া আগেও কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছিল। ঢাকার একজন বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক আফতাব আহমাদ একবার জাতীয় সঙ্গীত নিয়া প্রশ্ন তুলেছিলেন। সম্ভবত বলেছিলেন, জাতীয় সঙ্গীত কোন ঋষিবাণী নয় যে একে পরিবর্তন করা যাবে না। তখন তাকে বেশ হেনস্থা হতে হয়। তাঁর রুম-টুম পোড়ানো বা ভাংচুর করা হইছিল।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের নজীর আছে। গুগল করলে পাইবেন।
আমি এত কথা কইতেছি শুধু এইটা বোঝানোর জন্য যে জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন করা যায়, এ নিয়ে প্রশ্ন করা যায়। এইটা বেদবাক্য না। এইটারে বেদবাক্য বানানোও ঠিক না।
তো আমাদের জাতীয় সঙ্গীত কি পরিবর্তন করতে হবে?
আমাদের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে অনেকের অনেক প্রশ্ন আছে। যৌক্তিক প্রশ্ন। এইটা যেমন একটা দিক, তেমনি এর বিপরীত দিকও আছে। এত বছরে এই সঙ্গীতকে ঘিরে অনেকের আবেগ-অনুভূতি তৈরি হইছে। এই পাল্টানোর কথা বললে, তাদের খারাপ লাগবে।
একটা তর্ক উপস্থিত হবে। যেমনটা অলরেডি হইছে।
এখন এই তর্ক বিতর্কের সময় না। আরো অনেক গুরত্বপূর্ণ কাজ আছে দেশে। সেই সব কাজে মনোনিবেশ করা উচিত।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:১২
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি।। আমি পদত্যাগ করিনি , ডাইনী করেছে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৪০

জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানা আপু

লিখেছেন সোহেল ওয়াদুদ, ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৩

শুভ জন্মদিন আপু! আপনার জন্মদিনে সুস্থ দেহ প্রশান্ত মন কর্মব্যস্ত সুখী জীবন কামনা করছি। আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আপনি এবং দুলাভাই অনেক প্রজ্ঞাবান মানুষ। দেশের স্বার্থে জাতির স্বার্থে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন তারেক রহমানের দুর্নীতির নিয়ে আরো কিছু জেনে নেই

লিখেছেন এম টি উল্লাহ, ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৫


‘তারেক রহমানের উপর আস্থা রাখবো কিভাবে? দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার, হাওয়া ভবন দিয়ে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার কী না করেছেন তিনি’, আলাপচারিতায় কথাগুলো বলতেছিলো বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক বিপ্লবী ছোটভাই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিপদের সময় কোনো কিছুই কাজে আসে না

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:১৫


কয়েক মাস আগে একটা খবরে নড়েচড়ে বসলাম। একটা আরব দেশ থেকে বাংলাদেশি দুটো পরিবারকে প্রায় দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কীসের ক্ষতিপূরণ সেটা খুঁজতে গিয়ে যা পেলাম, তা হলো:... ...বাকিটুকু পড়ুন

পদ ত্যাগ না করলেও ছেড়ে যাওয়া পদ কি শেখ হাসিনা আবার গ্রহণ করতে পারবেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৯



তিনি ছাত্র-জনতার ধাওয়া খেয়ে পদ ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে প্রাণে বেঁচে গেছেন। পদের লোভে তিনি আবার ফিরে এসে ছাত্র-জনতার হাতে ধরাখেলে তিনি প্রাণটাই হারাতে পারেন। ছাত্র-জনতার হাত থেকে রক্ষা পেলেও তাঁর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×