বঙ্গবন্ধু সরকারের ইন্দিরা গান্ধী সরকারের ২৫ বছরেরর চুক্তিকালে আমরা বিনা ফি'তে ভারতের ভিসা পেতাম। খুব সহজ ছিল প্রক্রিয়া। সাম্প্রতিক সময়ে এতটাই কঠিন হয়েছে যে মনে হয় অন্য গ্রহে যাওয়াও এরচেয়ে সহজ। এখন ইন্ডিয়ার ভিসার জন্য ই- টোকেন নামক এক যন্ত্রনার যন্ত্র আবিস্কার করা হয়েছে। এ্যামবেসীর ওয়েবসাইটে বৃত্তান্ত পূরণ করে সাক্ষাতের তারিখ পেতে অপেক্ষা করতে হয় দিনের পর দিন। ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করলে এ তারিখ কোনদিন পাওয়া যায় না। এ জন্য দেশব্যাপী দালাল সৃষ্টি হয়েছে। গুঞ্জন রয়েছে, এ দালালদের সাথে এ্যামবেসী কর্তৃপক্ষের যোগসাজস আছে। তবে বারবার তা অস্বীকার করে কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের ওয়েবসাইট না-কি হ্যাক করা হয়েছে। এত্ত বড় একটা দেশের ওয়েবসাইট হ্যাক করে আর তা উদ্ধারে বছরের পর বছর লাগে
ই-টোকেনের জন্য ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। এরপর ভিসার জন্য পাসপোর্ট, ২ কপি ছবি, ট্রেড লাইসেন্স, ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট, আইডি কার্ড, বিদ্যুত বিলের কপি দিতে হয়। প্রশ্ন- যেখানে পাসপোর্ট আছে সেখানে আইডি কার্ড প্রয়োজন কেন ? হয়ত বলবে, জাল হতে পারে। মানলাম- আইডি কার্ড দেয়ার পর বিলের কপি দিতে হবে কেন ? সবই যদি জাল হয়- তো এত কাগজ দেয়ার দরকার কি ? এরপর সব কাগজ ঠিক করে দেয়ার পরেও একটি ব্যাংকের মোবাইল একাউন্টের মাধ্যমে ৬ শ' টাকা সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। এই সার্ভিস বলতে তারা শুধু কাগজগুলো ২ মিনিট দেখে দেবে আর একটা স্ট্যাপলার পিন মেরে দিবে। এরপর জমা নেয়া হয় এবং পাসপোর্ট ফেরতের তারিখ দেয়া হয়। তারিখ মত পাসপোর্ট হাতে নিয়ে দেখা যাবে ভিসা হয়েছে কি-না। ভিসা হলে ভাল না হলে কেন হল না- তার কোন ব্যখ্যা নেই। প্রশ্ন হল যদি কাগজপত্র ঠিকই না থাকে তবে ৬ শ' টাকা সার্ভিস ফি নেয়ার সময়ে কেন বলা হল না ?
আর নিরাপত্তার অজুহাত যদি দেয়া হয় তবে বলব- জঙ্গীদের ইন্ডিয়া যেতে ভিসা নিতে হয় কি ? কেননা কে না জানে অবৈধ পথে এ দেশ থেকে ইন্ডিয়া যাওয়া বেশী সহজ। আমাদের মত সাধারণ মানুষই ভিসা নিয়ে যাওয়া যুক্তিযুক্ত মনে করে। আমি দুইবার সিঙ্গাপুর ও একবার মালয়েশিয়া ভ্রমন করেছি। এরপর সব প্রক্রিয়া অনূসরণ করে ভিসা এপ্লাই করেও ইন্ডিয়ার ভিসা পাইনি। মাঝখান থেকে ৬/৭ হাজার টাকা গচ্চা গেছে।
প্রতিবেশী দেশ যদি এরকম আচরণ করে- তো আমাদের কি-বা করা আছে ? বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যারা বন্ধুর মত সহযোগীতা করেছে তারা ভিসা নিয়ে এমন রুঢ় আচরণ করে কেন ? এ প্রশ্নের উত্তরে অনেকে মনে করেন- পশ্চিম বঙ্গে মমতা সরকার। বাংলাদেশীরা ভিসা নিয়ে বেশীরভাগ কোলকাতা যায়-কেনাকাটা ও রোগ সারাতে। আয় বাড়ে মমতা সরকারের। এটা পছন্দ নয় কেন্দ্রীয় সরকারের। তাই ভিসা প্রক্রিয়া অয়থা কঠিন করার নির্দেশ রয়েছে। সত্য মিথ্যা জানিনা তবে এমনটা মনে হয়।
যদি তাদের আন্তরিকতা থাকে তাহলে এখনি ওয়েবসাইটে ই- টোকেন প্রক্রিয়ার বদলে ই-মেইলের সিস্টেম করতে পারে । কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী ব্যক্তি ই-মেইল থেকে সব ডাটা পাঠানোর পর এ্যামবেসী কর্তৃপক্ষ একটা সাক্ষাতের তারিখ দিবে। সেই তারিখে ভিসা আবেদনকারী নির্দিষ্টা স্থানে হাজির হবে। এরপর আর একটা তারিখে পাসপোর্ট দিবে। তবে কাগজপত্রের ঘাটতি থাকলে পাসপোর্ট জমা না নেয়াই ভাল। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু এজেন্ট দিতে পারে তারা। যেমনটা সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া করে। প্রতিবেশী অতিথিকে আদর আপ্যায়ণ করবে এটা স্বাভাবিক। তা না করে হয়রানি করার অধিকার কারোর নেই।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:২৪