somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মন বাদশা/ মন আমার ইচ্ছে ঘুড়ি

১৬ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘূড়ি তুমি কার আকাশে ওড়ো – নিজের আকাশে, মঙ্গলের লাল আকাশে। এই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে, নীল আকাশ ছাড়িয়ে মঙ্গলের রক্তিম আকাশই বেছে নিয়েছি ওড়বার জন্য।



ইচ্ছে ঘুড়ি শব্দমালা শুনতে ভাল শোনায়। কিন্তু মন বাদশা শব্দগুলো একটু তিরষ্কারমূলকই।

সাদি মোহাম্মদের মহাপ্রয়াণে উনার নিকট আত্মীয় স্বজনের করা অভিমানের অভিযোগ খুঁজতে খুঁজতেই উনার সম্বন্ধে অনেক কিছু জানলাম! বিশেষ করে উনার বাবার মৃত্যু সময়কার ঘটনা এবং শান্তিনিকেতনে ভর্তি হবার সময়কার ঘটনাগুলো। উনার গান তো অনেকেই শুনেছি সেই মেয়েবেলা থেকে। লিজেন্ড দুই ভাই! সবার পরিচিত!

আজকের লেখার ভাবনাট এসেছে আমার কিছু ছাত্রের কান্ড কীর্তি দেখে! সময় মতো এসাইনমেন্ট করবে না, সব জমিয়ে রাখবে, ডেডলাইন ফলো করবে না। অনেক জমিয়ে রেখে পরে সাজেশন চাইবে, আজকে ক্লাসও করেনি। মনে হলো তাদের শিক্ষাটা কেবলি তাদের ইচ্ছের উপরই নির্ভরশীল, শিক্ষকের দেয়া ডেডলাইন বা সিলেবাস বা ভার্সিটির দেয়া রুটিনমাফিক নয়।

আজকাল অনেককেই শিক্ষা ক্ষেত্রের অবনতির কথা শুনছি। ফেইসবুকে বিভিন্ন ছাত্রদের পোস্টও দেখেছি। এবার মনে হয় নিজেই প্রত্যক্ষ করছি অনেকটা। দায়িত্বশীলতার প্রচন্ড অভাব, অনীহা দেখছি ছাত্রদের মাঝে। এতোটা গত ১৯ বছরের শিক্ষকতা জীবনে এতোটা প্রকট ভাবে দেখিনি। এতো দুঃসাহস! অবাক করার মতোই। আমাদের স্যারেরা হলে বলতেন, বেয়াদব!

গত কয়েক বছরেই আমার আশপাশে অনেক ক্ষেত্রেই দেখিছি ছোটদের দ্বারা বড়দের অপমান করাতে। গেল কয়েক বছর শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনাও ঘটেছে কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

আজকাল অনেক জায়গায় কনফিডেন্ট অপরাধকর্ম – এরকম শব্দ বা ঘটনা প্রত্যক্ষ করছি। বড়রাই অনেক ক্ষেত্রে ছোটদের ইনভল্ভ করছে, ইয়াবা, দেহব্যবসা, নারী পাচার, দুস্যবৃত্তি, নীল ছবি,… ভিক্ষাবৃত্তি তো বটেই! অনেক মানবতা বা ধর্মের ধ্বজাধারী ব্যক্তিরাই বা সমাজে ক্ষমতাসীন রাজনীতিবিদেরাই আজকাল কনফিডেন্ট অপরাধী!

প্রশ্নপত্র ফাঁস, ইচ্ছাকৃত ভুল চিকিৎসা বা ইঞ্জিনিয়ারিং, শিক্ষাক্ষেত্রে মান কমানো - সবই হচ্ছে প্রতিবাদের নামে, বিপ্লবের নামে।
প্রতিপক্ষকে ভয় বা সমুচিত শিক্ষা দেয়ার জন্য ধর্ষণ, হত্যাকান্ড, দেহব্যবসায় বাধ্য করানো – সবই হচ্ছে। সবচেয়ে ভাল ব্যাপার হচ্ছে যেকোনভাবে লিভ টুগেদার বা মিউচুয়েল সেক্সে বাধ্য করা, পরিস্থিতি তৈরী করা। প্রচার করা মেয়েটা বড় খারাপ, ও এই অন্যায় করেছে, তাহলে আমি ওটা করবো।

অন্যায়ের মানবাধিকার!

অমুকে ভাল হোক, তারপর আমি হবো!

ও হিজাবী, গণিমতের মাল! ধর্ষণ করা যেতে পারে, একাত্তরে ওরা ধর্ষণ করেছিল! হিজাবীদেরকে ব্লু ফিল্ম করাতে হবে।

ওদেরকে মিডিয়ায় নেয়া যাবে না। ওরা প্রশ্রয় পেয়ে যাবে! ওদের কাউকে সমাজে সামনের সারিতে রাখা যাবে না, যোগ্যতায় এগিয়ে গেলেও নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। কারণ, হিজাবী বা দাঁড়ি আছে। এই জবে নেয়া যাবে না, ওই জব দেয়া যাবে না ইত্যাদি ইত্যাদি।

ওদের ধর্মীয় কাজে বাঁধা দিতে হবে। আরবী শিক্ষাকে হেয় করতে হবে। তারাবী পড়াকে জঙ্গীবাদসম ভাবতে হবে। যারা যৌন ব্যবসায় সমর্থন দেবে না, তারা জঙ্গী! রাখতে হবে পেছনের সারিতে, পরিচয়ই দেয়া যাবে না। কারণ, ওরা মোল্লা!

কেবল খুন খারাবিতে সমর্থন দিতে হবে। পোড়াতে হবে, পুড়িয়ে মানুষ মারতে হবে। কারণ, এদের জঙ্গী হতেই হবে!

এদেরকে গবেষক বা উচ্চশিক্ষিতও হতে দেয়া যাবে না। স্বচ্ছল হতে দেয়া যাবে না। পরাধীন, পরাশ্রয়ী রাখতে হবে। সংসারও টেকানো যাবে না। সম্পদ/ সম্পত্তিও দেয়া যাবে না। হতে হবে ভাসমান!

প্রতিবাদ করতে গেলে আঘাত করা হবে, বাড়ি থেকে ল্যাপটপ চুরি হবে, মোবাইল চুরি হবে, অলংকার ডাকাতি হবে। স্বজনদের মাঝে কোন্দল, ভুল বোঝাবুঝি বাঁধিয়ে দেবে! বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার আয়োজন হবে, সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার থ্রেট আসবে, সন্তানের রেজাল্টের উপর আঘাত আসবে। স্কুলে বাচ্চাদের নাকে ইরেজার ঢুকিয়ে দিবে। মেরে ফেলা, এসিড মারার হুমকি, অপহরণ – এসব থ্রেট তো রইলোই। এরা সবাই দেশপ্রেমিকের তালিকাভুক্ত, বিশেষ দেশপ্রেমিক! ভীষণ দেশ বা দল প্রেমের জায়গা থেকে এগুলো করা হবে।

দূর্নীতির স্বাধীনতা আছে, মিথ্যার প্রসার আছে। সত্য বারে বারে লুকোতে বাধ্য! দল বেঁধে আক্রমণ করবে। এই কাজে সমাজের দুই প্রান্তের একেবারে প্রান্তসীমায় থাকা উভয় পক্ষের লোকেরাই নিজেদের স্বার্থে একজোট হয়ে আঘাত দিবে!
তাই ইচ্ছে ঘুড়িটা আর পজিটিভ নেই, বাদশা হয়ে গেছে!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০২৪ দুপুর ২:০৭
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×