somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মিনহাজ উল ইসলাম
ডাকনাম অপি। সবাই মিনহাজ বলে ডাকতেই সাচ্ছন্দ বোধ করে। স্কুল, কলেজ এর গণ্ডী পেরিয়ে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে। তেজগাওয়ের বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছি। যদিও কখনই ইচ্ছা ছিলনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার।

বাহাদূর শাহ পার্কঃ বাঙালী তেজস্বীতার এক অমলিন অধ্যায়

২০ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকের বাহাদুর শাহ পার্ক এর পূর্ব নাম ছিল "ভিক্টোরিয়া পার্ক"। এই পার্কের সাথে জড়িয়ে আছে বাঙালি স্বত্বার এক গৌরবময় ইতিহাস।
পুরো ব্লগে আমি বাহাদুর শাহ পার্কর ইতিহাস, কোথায় অবস্থিত এবং পার্কটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্প্রকে জানাবো।

ইতিহাস ও ঐতিহাসিক গুরুত্বঃ
অস্টাদশ শতাব্দীর দিকে বাহাদুর শাহ পার্ক যেখানে অবস্থিত সেখানে আরমেনিয়ান বসবাস করত। প্রচলিত আছে সেখানে তারা অ্যান্টা খেলত। সেই থেকে এটি আন্টাঘর নামে লোকমুখে পরিচিত।

উনিশ শতকের দিকে ইংরেজরা আন্টাঘর ময়দানটি কিনে নেয় এবং পার্কে রূপ দেয়।কিন্তু যথাযথ পরিচর্যার অভাবে আন্টাঘর ময়দানটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে।

তৎকালীন সময়ে ঢাকার সম্ভ্রান্ত নবাবদের সাথে ইংরেজদের খুব তাৎপর্যপূর্ণ এক বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল। পার্কের এই বেহাল দশা দেখে তাই নওয়াব আবদুল গনি ১৮৪০ সালে মেরামতের জোগাড় করেন এবং ময়দানটির শ্রী বৃদ্ধি করেন।

এরপর থেকে ময়দানটিকে ইংরেজরা ক্লাব হিসেবে ব্যবহার করতো। এখানে তারা ব্যাডমিন্টন বিলিয়ার্ড,টেনিস, ভলিবল খেলত। শুধু তাই নয়, তারা এখানে পার্টিও করত। তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল এসব কিছুরই পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সমসাময়িক ঢাকার নবাবেরা।



এভাবে অনেক চলতে থাকে।

১৮৫৭ সাল।
নাটকীয়তার প্রথম মোড়। পুরো ভারতবর্ষজুড়ে শুরু হয় সিপাহী বিপ্লব। বিপ্লবের দাবানল ছড়িয়ে পড়ে বাংলায় ও।

সায়ত্বশাসন চালিয়ে যাওয়া নবাবের সিপাহীরা বিপ্লবের যোগদান করে। ঢাকার স্বাধীন নবাবের সিপাহীরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে। সিপাহীরা বর্তমানে লালবাগ কেল্লা দুর্গে আশ্রয় নেয় এবং তাদের সর্বস্ব দিয়ে অন্যদের সাথে লড়াই করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা ইংরেজ সৈন্যদের হাতে পরাজিত হয়। বন্দী সিপাহীদের পরবর্তীতে প্রহসনের বিচারের মধ্য দিয়ে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির দণ্ডাদেশ হয়।

ইংরেজরা সিপাহীদের ফাঁসি দেবার জন্য আন্টাঘর ময়দানকে বেছে নেয়। কারণ তাদের ইচ্ছা ছিল জনসম্মুখে ফাঁসি মাধ্যমে জনমনে তীব্র ভীতি সঞ্চার করা। আর জনসম্মুখে ফাঁসি দেবার সবচাইতে উপযুক্ত জায়গাটি ছিল এই আন্টাঘর ময়দান তথা বাহাদুরশাহ পার্ক। কারণ এই পার্কে তখন সূউচ্চ অনেকগুলা পাম গাছ ছিল।

কথিত আছে, ইংরেজরা সিপাহীদের ফাঁসি দেওয়ার পরে অনেকদিন পর্যন্ত তাদের লাশ এখানে ঝুলিয়ে রাখে যা অত্র এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এখনো মানুষ রাতের আধারে এই পার্কের পাশ দিয়ে যেতে ভয় পায়।

পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে ঢাকার নবাবেরা এই আন্টাঘর ময়দান বা ভিক্টোরিয়া পার্কটির বাপক উন্নয়ন সাধন করেন।

আর হ্যা। আন্টাঘর ময়দান থেকে পার্কটির নাম কিভাবে হলো এটি তো বলায় হলো না। যখন রানী ভিক্টোরিয়া ভারতবর্ষের ক্ষমতা গ্রহণ করেন, তখন এই খবরটি ঢাকায়-ঢাকাস্থ ইংরেজ কর্মকর্তা এই আন্টাঘর ময়দান এই ঘোষণা করেন। সেই থেকে ময়দানটি ভিক্টোরিয়া পার্ক নামে পরিচিত।

১৯৫৭ সালে ‘ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট’ সিপাহি বিদ্রোহের শতবছর পূর্তি উপলক্ষে ভিক্টোরিয়া পার্কে স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করে এবং তখনই এটির নামকরণ করা হয় বাহাদুর শাহ পার্ক।

বাহাদুর শাহ পার্ক কোথায় অবস্থিত
বাহাদুর শাহ পার্কটি পুরনো ঢাকার সদরঘাট এলাকায় অবস্থিত। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এর ঠিক অপর প্রান্তে রয়েছে এটি।

বাহাদুর শাহ পার্ক কিভাবে যাবেন
ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে বাসে করে সদরঘাট যাবেন এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নামবেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এর ঠিক বিপরীত পাশে পার্কটি দেখতে পাবেন।

তথ্যসুত্রঃ ভ্রমনচারী.কম বাহাদুর শাহ পার্ক
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×