somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চলুন গরীবের খাদ্য মেরে ডিজে (DJ) পার্টিতে যাই।

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Survival of the fittest.
চার্লস ডারউ্ইনের এই অবিস্মরণীয় থিওরী অনুযায়ী প্রাণী জগতের survive বড়ই আশ্চর্যময়।
একটি তিমি মাছ নাকি প্রতিদিন ২৫টন খাবার সংগ্রহ করে ও তা খেয়ে বেঁচে থাকে। পক্ষান্তরে একটি মানুষের প্রতিদিন মাত্র কয়েকশ গ্রাম খাদ্য প্রয়োজন। অথচ পৃথিবীর বহু মানুষ সেই খাবার পায় না! সম্ভবত “The Daily Star” এর কোনো ক্রোড়পত্রে পড়েছিলাম যে, সারা পৃথিবীর ক্যাপিটালিস্টরা যে পরিমাণ খাবার অবহেলায় নষ্ট করে, তার ১০০ ভাগের মাত্র ২৫ ভাগও যদি বাঁচানো যায়, তবে এই পৃথিবীর একটি মানুষও অভুক্ত থাকবে না।
খোদ রাজধানী ঢাকাতেই অনেক বন্ধুদের মেসে গিয়ে দেখেছি। মাসের শেষদিকে কোনো কোনো রাত তাদের চাল কিনার পয়সা থাকে না। ওয়াসার পানি ঢকঢক করে গিলে হাসিমুখে রাত কাবার করে দেয়। গণপরিবহণে চলতে গিয়ে টুকরো টুকরো অনেক গণজীবনের চিত্র দেখেছি। যে ৩/৪ বছরের কচি বাচ্চা ছেলে-মেয়েগুলোর মায়ের কোলে মুখ লুকিয়ে ‘অ-আ’ শিখতে না চাওয়ার বায়না করার কথা, তারাই আমার মতো অপদস্থ ও অপদার্থ ছেলের হাঁটুর কাছে পাত্র উঁচিয়ে বলে,
“দুইডা টেকা দিবেন? খিদা লাগছে, কিছু খামু!”
জনতা হাউজিং আমার বাসা থেকে খুব কাছে ওই বস্তির (বস্তি বলতে লজ্জা লাগছে। চেনার সুবিধার্থে বলতে বাধ্য হলাম) মানুষগুলোকে দেখেছি অবাক বিস্ময়ে। ওখানকার বাবা-মা তাদের সন্তানদের কাছ থেকে আধুনিক পিশাচ সভ্যতার প্রতিভা দেখতে চায় না। ওরা চায়, ওদের সন্তান দু’টা পয়সা কুড়িয়ে আনুক লোকের করুণায় আশীর্বাদ প্রাপ্ত হয়ে!
আমার নিজের ফুপুর কথাই বলি। প্রায়ই শুনি গ্রামে তাদের চুলোয় নাকি আগুন জ্বলে না। অসুস্থ ফুপা আর রিক্সা চালাতে পারে না। তাদের ঘরের বড় বড় মেয়েগুলো দেশের জনসম্পদ হতে পারে, কিন্তু সমাজের অবহেলিত উচ্ছিষ্ট মাত্র!
খাদ্যের ব্যপারটা বর্তমানে পুরোই Give and Take পলিসির উপরে আছে। অগাধ টাকা-পয়সা হলে মাজার, মসিজিদ, মন্দির, গির্জা আর প্যাগোডায় উজাড় করে ঢালা হয় ধর্মের প্রহরীদের খাইয়ে দিয়ে ঈশ্বরের তুষ্টি অর্জনের জন্য। গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজারের একটা ছবি দেখেছিলাম, দু’জন লোকের কোমড় পর্যন্ত উঁচু টাকার স্তূপ। কাদের জন্য? ক্ষুধার্তদের জন্য?
মিরপুর শাহ আলী মাজারে গত বছরই নাকি গড়ে প্রতি মাসে ২০ কোটি টাকা আসতো। এসব মাজারগুলো লিজ নেয় সরকারের কাছ থেকে একদল ধর্ম ব্যবসায়ী। কোনো ক্ষুধার্ত সেই টাকার ভাগ পায় কিনা জানি না। পাওয়ার কথাও না। এতো উদার কে আছে গাটের পয়সা খরচ করে লিজ নিয়ে কামাইকৃত পয়সা জনতাকে বিলাবে??
এতক্ষণ যা বললাম সব মিথ্যা। আসল ঘটনা শুনবেন?
পৃথিবীতে কোনো ক্ষুধা নেই। শুধু জন্মদিন, বার-বি-কিউ পার্টি, ফেস্টিভ্যাল আর DJ পার্টি আছে। মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জা, মাজার, দেব-দেবী প্রমুখ সম্মানিতদের পদতলে হৃদয় উজাড় করে পয়সা-কড়ি দিয়ে আসতে হয়।
কারণ DJ পার্টি করার পর ঈশ্বরের ব্যাপক ক্ষুধা লাগে! মানুষের কোনো ক্ষুধাবোধ আছে নাকি? এসব রূপকথা।
কার্ল মার্ক্স এর তত্ব, “জীবনধারণের জন্য মানুষের প্রয়োজন খাদ্য ও আশ্রয়। ধর্ম বা রাজনীতির কোনো ভূমিকা নেই এখানে।”
এগুলো পৌরাণিক যুগের বিভ্রান্ত গল্প। সময় হয়েছে গল্প শেষ করার। DJ পার্টি আর উপাসনালয় পার্টিতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হও হে মানব মণ্ডলী।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৯
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×