রংপুরের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সাহিত্যকর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতি সুপ্রাচীন ও বিভাসিত। প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ও সৌন্দর্যের লীলা নিকেতন এই রংপুর। বলা যায় প্রকৃতির রহস্যময়তায় নান্দনিক সৌন্দর্যে প্রকৃতির আদরণীয় হিল্লোলে ও প্রাণময়তায় ভরপুর রংপুর। অর্থাৎ
‘‘রঙ্গঁরসে ভরপুর
এই রঙ্গঁপুর’’
এই রঙ্গঁরস শিক্ষা-সাহিত্য, সঙ্গীত, সংস্কৃতি, ইতিহাস ঐতিহ্য বিশেষ করে লোকসংস্কৃতি মিলিয়ে অনবদ্য। রঙ্গঁপুরের পরিবর্তিত রূপ রংপুর (অমপুর)।
আঞ্চলিক ভাষা, যখন এ গ্রামাঞ্চলের জনপদে উদ্ভব হয়েছে নিঃসন্দেহে সে সময় হতে গ্রামীণ জনপদ আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে আসছে। এ ভাষার উচ্চারণগত সহজবোধ্যতা, সাবলীলতা ও শ্রুতিমাধুর্য অসামান্য। বেগম রোকেয়ার রচনায় রংপুরের আঞ্চলিক ভাষার শব্দাবলীও আছে ।
এ ভাষার বৈশিষ্ট্যঃ
1) আনুনাসিক বর্ণ রক্ষিত,
2) শ্বাসাঘাতের নির্দিষ্ট সহান নেই,
3) শব্দের আদিকে ‘ র ’ এর আগয় লোপ,
যথাঃ রস= অস, রামবাবু= আমবাবু, রংপুর= অমপুর, রক্ত = অক্ত,
‘‘ আমবাবুর রামবাগানে অনেক রাম পেকেছে ’’।
4) অধিকরণ কারকে ‘‘ ত ’’ বিভক্তির প্রয়োগ ।
‘‘ বাবা বাড়িত নাই’’।
5) অপিনিহিতর ব্যবহারঃ অদ্য>অহিজ, কাল্য>কাইল
6) শব্দের মধ্যবর্তী ব্যঞ্জনবর্ণ লোপ ঃ কহিল>কইল,
7) ‘‘ ছ’’ এর ব্যবহার ‘ চ ’ রূপেঃ মাছ>মাচ
8) শব্দের মধ্যবর্তী সহানে অতিরিক্ত স্বরবর্ণের ব্যবহার যেমনঃ গেলে>গেইলে, বোন>বইন,
9) ‘ল’ এর সহলে ‘ন’ এর আগম ঃ লাট>নাট, লাগে>নাগে
কতিপয় শব্দঃ
অকে, অমপুর, অক্ত, আঙা, আন্দন, উদিনকা, আইগন্যা, ক্যাংকা, ফ্যাদলা, এইংকা, উন্দাও, বাইগন, বাহে, সুন্দরী, তাংকু, দলান, ঢ্যানা, বাড়ুন, গাবরু, কাপাট, কইনা, এইকনা, ছাওয়া ইত্যাদি ।
অনেকে মনে করেন চর্যাপদের কবিদের অনেকের পদচারনা হয়তো ঘটেছিল রংপুরে । ফলে চর্যাপদের ভাষা’. অনেক রংপুরের আঞ্চলিক ভাষার শব্দও বিশেষতব দেখতে পাওয়া যায় যেমন. "টলিত মোর ঘর/নাহি পরবেসী হাড়িত ভাত নাই নিতি আবেসী"।
‘তে’ বিভক্তির স্থলে ‘ত’ বিভক্তির প্রয়োগ রংপুরের ভাষার বৈশিষ্ট্য। তেমনি নঞক অব্যয়ের ব্যবহার ব্যবহার ক্রিয়াপদের আগে, যেমন, গাছের তেস্তুল কুম্ভীরে নক্ষত্র, রংপুরের উদাহরণ।
না যাও, না খাও।
শব্দ মোর, তোর, সুতি, পোহাই, ঘিন, খাল, ইত্যাদি শব্দ রংপুরেও ব্যবহৃত হয়।
তথ্যসূএ ইন্টারনেট থেকে।
রংপুর জেলা তথ্য বাতায়ন
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১০:২২