চা বাগান আর ৩৬০ আউলিয়ারদের পূর্ণভূমি অপূর্ব সুন্দযের জায়গা সিলেট । ভ্রমন পিপাসু যে কেউবার না একবার সিলেট যাবেই কিন্তু বুঝতে পারে না কিভাবে, কোথা থেকে ভ্রমন টা শুরু করলে তা ষোল কলায় পূর্ণ হবে। তাই সেইসব সিলেট ভ্রমন পিপাসুদের সামান্য সাহায্য করবার জন্যই আমার এই পোস্ট, যেহেতু আমি নিজেও একজন ভ্রমন পিপাসু মানুষ !
সিলেট বেড়ানোর জন্য যেতে পারেনঃ
১. জাফলং, ২. লালাখাল, ৩. শাহ্জালাল এর দরগাহ্, ৪. শাহ্পরান দরগাহ্, ৫. মালনীছড়া চা বাগান, এবং ৬. বাদবাকি নিচে দেখেন বিস্তারিত...
শাহজালাল ও শাহপরান মাজার জিয়ারত করে সবাই সাধারনত যাত্রা শুরু করে সিলেট ভ্রমন ।
দিনের আলোতে মাজার
রাতের আলোতে মাজার।।
সিলেট শহরের মাঝে ঘুরতে গেলে ভেটেনারী কলেজ (আলুরতল, গ্যাস ফিল্ড + চা বাগান), শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি ক্যাম্পাসে আসলে দেখতে পারবেন দেশের সর্বোচচ শহীদ মিনার যা পাহাড়ের উপর অবস্থিত , দুনিয়ার সবচেয়ে লম্বা পথ-আল্পনা আর ক্যাম্পাস তো বোনাস ই আশা করি ভাল লাগবে ..) নিচে কিছু ছবি দিলাম...নিজের ইউনিভার্সিটি বলে কথা...
ছায়া সুনিবিড় আমাদের কিলো রোড
মেইন কাম্পাস
পাহাড়ের চুড়ায় শহীদ মিনার !
পর্যটন টিলা (এয়ারপোর্ট রোড, সড়কের পাশে অনেক চা বাগান দেখা যাবে),
গৌর গবিন্দের টিলা, এমসি কলেজ, এছাড়া শাহজালাল, শাহপরান মাজার মাজারে তো যাবেন । সিলেট মালনি চড়া চা বাগান দেখবেন এয়ারপোর্ট রোডের পর্যটন পার্ক দেখতে যাওয়ার পথে। দেশের সবচেয়ে প্রাচীন চা বাগান মালনীচড়া ও লাক্কাতুড়া চা বাগান অপরূপ সাজে সজ্জিত যা আপনার চোখে ও মনে প্রশান্তি এনে দিবে । এটা সিলেট শহরের পাশেই রিকশাহ ও যেথে পারবেন । এখানে ইচ্ছে করলে পর্যটন মোটেল এ থাকতেও পারেন ।
এবং একটু দুরে জাফলং শ্রীপুরে আপনাকে স্বাগতম ।
মনোরম সুন্দয জাফ্লং...
তারপর আপনি যাবেন জাফলং । জাফলং এ আপনি দেখবেন চা বাগান ,খাসিয়া পুঞ্জি ও খাসিয়া রাজ বাড়ি এবং বল্লা ঘাট এ পাথর তুলার দৃশ্য ।এখানে আপনি কিছু পাথর এর সামগ্রী কেনাকাটা করতে পারেন ,দামাদামি করে কিনলে জিতবেন । আর খাবার দাবার এখানে না করে সিলেট শহরে যে কোন জায়গায় করলে ভালো হবে । কিন্তু শহরের আম্বরখানা পয়েন্ট এ ইষ্টি কুটুম হোটেল টাতে ভুলেও যাবেন না। ওই খানে খাবার এর দাম অনেক বেশি।
জাফলং থেকে ফিরার পথে যাবেন শ্রীপুর পিকনিক স্পটে।
তারপর যাবেন জৈন্তাপুর বাজার , এ জায়গায় আছে জৈন্তা রানীর বাড়ি আর দিঘি । আছে টকফল গবেষণা কেন্দ্র আমার খুব ভালো লাগত জায়গা টা । আমি অনেক বার গিয়েছি এ টকফল কেন্দ্রে , সব ধরনের টকফল এর বাগান এক সাথে দেখার সুযোগ আপনি অবস্যই মিস করবেন না ।
এ জায়গাটা জৈন্তা বাজার থেকে আপনি হেটে গেলে ১০ মিনিট লাগবে ।
জৈন্তাপুর দেখা শেষ করে আসার সময় রাস্তায় পাবেন লালাখাল নামক স্থান।
লালাখাল নদীর ব্রীজ এর নিচ এ গিয়ে দেখতে পাবেন নিল রঙের পানি ,ব্রীজ এর বামপাশে আছে নৌকা ঘাট ,এখানে আপনি পাবেন স্পীড বুট ও ছুটো নৌকা এগুলু দিয়ে ঘুরে দেখতে পারেন লালাখাল এর নিল রঙের পানি ও বাংলার রূপ ।
তারপর হাতে সময় থাকলে একদিন মাধবকুন্ড জল্প্রপাত দেখে আসতে পারেন কিন্তু অইটা সিলেট থেকে অনেক দূরে , প্রায় ২ ঘণ্টা লেগে যাবে শুধু জেতেই। মাধব্কুন্ধ জলপ্রপাত না দেখলে সিলেট ভ্রমন এর আসল সাদ পাবেন না ।
এবার, বাঙ্গালী হইয়া ফ্রী এডভাইস দিব না তা কি হয়, বলেন ??
# জাফলং দেখার আগে মাধবকুন্ড দেখা উচিত বলে আমি মনে করি। জাফলং দেখবেন লাষ্টের দিন, যখন ফিরবেন তখন যেন চোখে জাফলং ভেসে থাকে। পাশে থাকা মনের মানুষটা কেও যেন ভুলে যান !!! শুধুই জাফলং হাঃহাঃহাঃ...
# লোকাল লোকজন অতিথিপরায়ন কিন্তু তাদের সাথে তর্কাতর্কি তে না যাওয়াই ভাল।
# টুরে অযথা বীরত্ব না দেখানোই উচিত, হয়তো কিছুই হবে না কিন্তু যে দেশের সীমান্তরক্ষীরা ফেলানীকে মেরে কাটা তারে ঝুলিয়ে রাখে তাদের "কিছু করবে না" এই বিশ্বাস আমি করতে রাজি না।
# উগ্র ড্রেস পরা উচিত না সিলেটে, মনে রাখবেন আপনি যাচ্ছেন "বার আওলিয়ার মাজারের শহরে"। ভদ্রতা বজায় রাখুন।
# জাফলং যান আর মাধবকুন্ড যান, যেখানেই যান, পানিতে আপনে নামবেনই, তাই কাপড় চোপড় সাথে রাখবেন। ভাড়াও পাবেন তবে নিজেরটাই ব্যবহার করা উচিত।
# মাজারে যাবেন কিন্তু লক্ষ রাখবেন আপনার সব ভক্তি যেন আল্লাহর প্রতিই থাকে। সব আল্লাহর ইচ্ছায় হয়, মাজারে গিয়ে মাথা ঠেকাবেন না।
# পাঠিকাদের বলছি, ভুলেও মেকআপ নিয়েন না, অনেক গরম পরিবেশ, একটুপর আপনাকে ভুতের মত লাগবে। হাঃহাঃহাঃ
# টুরে যাবেন তো হালকা ড্রেস পরার চেষ্টা করুন। ভারি ড্রেসে আপনি সহজে মুভ করতে পারবেন না।
# অনুমতি না নেওয়া থাকলে চা-বাগানের বেশি ভিতরে ঢুকা উচিত না।
# কোন ছাইয়া পাবলিকদের দলে ভিরাবেন না, মনে রাখবেন, একজন স্বার্থপর টুর মেম্বার আপনার স্বাধের টুরের ১২টা বাজায় ফেলতে পারে।
জানার কোন শেষ নাই, তাই আরও জানতে ভিজিট করেনঃ ভ্রমন লিঙ্ক
সিলেট ভ্রমন আপনার আনন্দময় হোক।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মে, ২০১৩ বিকাল ৪:৫১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




