যোগশাস্ত্র সম্পর্কে আগের একটি পোস্ট ।
যোগবলে আপনি দেহের এবং মনের যে কোন সাধারণ বা দুরারোগ্য ব্যাধির হাত থেকে মুক্ত হতে পারেন ।তবে এখানে কেবলমাত্র কয়েকটি সাধারণ অসুখ থেকে সহজে মুক্তি পাবার উপায় সম্পর্কে আলোকপাত করছি । সাধারণত যোগসাধনা খুবই কষ্টসাধ্য হলেও এর মধ্যে এমন কিছু সাধারণ শ্বাস প্রশ্বাস এর প্রথমিক ক্রিয়া আছে যার অনুশীলন দ্বারা আপনারা অতি অনায়াসে কয়েকটি সাধারণ রোগের হাত থেকে মুক্তি বা সেই রোগটিকে নিয়ন্ত্রনে করতে পারেন । প্রাচীন যোগশাস্ত্র খুবই দুর্জ্ঞেয়( প্রধানত গুরু পরম্পরায় এবং প্রকৃত অধিকারী ভেদে প্রকাশ করবার নির্দেশ থাকাতে ) তাই অনেকের কাছে এটি এখনও একটি মিথ হয়ে রয়ে গেছে । তবে কিছু মহাত্মা যোগী দ্বারা মানব কল্যাণে কিছু প্রক্রিয়ার কথা তাঁদের রচিত কিছু গ্রন্থে দেখতে পাওয়া যায় ।
যদি তাঁদের(যোগশাস্ত্র) নির্দেশ মতো সঠিক ভাবে কিছু অতি সাধারণ নিয়ম পালন করতে পারেন, তাহলে আপনি অবশ্যই নানা প্রকার সাধারণ ব্যাধি ( যা পরবর্তীতে আপনার জীবন অতিষ্ঠ করে তুলতে পারে ) থেকে মুক্তি পাবেনই আর সেই সঙ্গে আপনার জীবন হয়ে উঠবে নির্মল এবং সদা হাস্যময়।
আজকে একটি সাধারণ কিন্তু প্রায় নিত্যদিনের জীবনে ঘুরে ফিরে আসা অসুখ যাকে আমরা বলি উদারময় ও তার সঙ্গে অজীর্ণ থেকে কি ভাবে মুক্তি বা এই ব্যাধিকে নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন তা বলা হল ।
তবে এখানে কেবল মাত্র সকলের পক্ষে সহজে করা সম্ভব এমন কয়েকটি সাধারণ নিয়ম তুলে ধরা হল । কোন প্রকার যোগাসন ,প্রানায়ম এর বর্ণনা না করে ।
আপনাকে যা করতে হবে প্রতিবার যে কোন প্রকার খাবার গ্রহনের পর ইরা নামের নাড়ীর পথ বন্ধ করে দিতে হবে এবং তার স্থানে পিঙ্গলা নাড়ী পথে শ্বাস প্রবাহ চালু রাখতে হবে কিছুক্ষণ, এইটুকুই! কি কিছু বুঝলেন? খুবই কঠিন লাগছে ! না ভয় পাবার কিছু নেই আপনাকে যা করতে হবে খাবার পর প্রতিবার কিছুক্ষণ শান্তভাবে আপনার বাঁদিকে কাত হয়ে শুয়ে পরতে হবে(গুরুপাক হলে ২০-৩০ মিনিট) যাতে আপনার শরীরের বাঁপাশের বুকে কিছুটা চাপ অনুভব হয় । তবে যাঁদের সময় কম তাঁরাও কমপক্ষে ১২-১৫ মিনিট এই ভাবে বাঁ পাশ ফিরে শুতে পারলে এই অজীর্ণ এবং এই রুপ যে কোন প্রকার পেটের রোগ থেকে মুক্তি পাবেনই ।না শুধু মুখের কথা নয় ক্রিয়াটি করে দেখুন কিছুদিন। আসা করি যদি প্রতিবার প্রতিদিন এই ভাবে নিয়ম মেনে করতে পারেন তবে ১৫ দিন পর থেকেই কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন বলে আসা করি । তাও কিছুটা ধোঁয়াশা থেকে গেল ! যোগ শাস্ত্রে ইড়া, পিঙ্গলা, শুশুন্মা নামক কয়েকটি নাড়ী বর্তমান। এখানে পিঙ্গলা নাড়ী বলতে আপনার ডান নাসিকা(নাক) পথে শ্বাস প্রবাহ কে বোঝান হয়েছে ( বিস্তারিত পরবর্তীতে )। খাদ্য গ্রহনের সময় যদি আপনার ডান নাক দিয়ে শ্বাস প্রবাহ হয় তবে কোন সমস্যা নেই কিন্তু বাঁ নাক দিয়ে শ্বাস প্রবাহ হলে খাবার না খাওয়া উচিত । যোগীরা সাধারণত পিঙ্গলা পথে শ্বাস প্রবাহিত হলেই খাদ্য গ্রহন করে থাকেন । এটাই প্রাথমিক নিয়ম । কিন্তু আমরা সাধারণ উদরপরায়ণ মানুষ তাই আমাদের ক্ষেত্রে নিয়মের কিছু শিথিলতা ! যদি কোন কিছু খাবার সময় ইড়া নাড়ী(বাঁ নাক) পথে নিঃশ্বাস প্রশ্বাস প্রবাহিত হয়, তবে তাকে পিঙ্গলা পথে (ডান নাক) পরিবর্তনের নিয়ম হিসাবে( বাঁ পাস করে শোবার ) এই প্রক্রিয়ার কথা বলা হল ।তবে আবার নিদ্রা যাবেন না যেন । সারমর্ম এই খাদ্য গ্রহনের পর বাঁ নাক দিয়ে বায়ু প্রবাহিত হলে তা কিছুক্ষণ বাম পাশ ফিরে শোবার ফলে ডান নাক দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে ।
মনে রাখতে হবে খাবার গ্রহনের সময় যেন নিঃশ্বাস প্রশ্বাস ডান নাক দিয়ে প্রবাহিত হয় । এর বিপরীত অবস্থায় খাদ্য গ্রহণ করলে রোগ মুক্তি ওষুধ ছাড়া সম্ভব নয় এই কথা যোগ শাস্ত্র বলে থাকেন ।