somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কান্ডারি অথর্ব
আমি আঁধারে তামাশায় ঘেরা জীবন দেখেছি, আমার বুকের ভেতর শূণ্যতা থেকে শূণ্যরা এসে বাসা বেঁধেছে, আমি খুঁজেছি তোমাকে সেই আঁধারে আমার মনের যত রঙ্গলীলা; আজ সাঙ্গ হতেছে এই ভবের বাজারে।

“কালানুক্রম” – উত্তাল মার্চ – চতুর্থ পর্ব

০৫ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


“ওয়ালাকুমুসসালাম” - উত্তাল মার্চ – প্রথম পর্ব
“ভিনদেশী মুক্তিবাহিনী” আমরা তোমাদের ভুলব না – উত্তাল মার্চ – দ্বিতীয় পর্ব
“ভিনদেশী মুক্তিবাহিনী” আমরা তোমাদের ভুলব না – উত্তাল মার্চ – তৃতীয় পর্ব

যুদ্ধের পূর্বে

মার্চ ১: ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদ-এর অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একে ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে ৩রা মার্চ দেশের সব জায়গায় হরতাল আহ্বান করেন।গভর্ণর আহসানকে পদচ্যুত করে লে: জেনারেল সাহেবজাদা ইয়াকুব খানকে পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব দেয়া হয়।



মার্চ ২: শেখ মুজিবুর রহমান সংসদ স্থগিতের সিদ্ধান্ত না মানার ঘোষণা দিয়ে ৭ মার্চ রেসকোর্সের ময়দানে গণ জমায়েতের আহ্বান জানান।ঢাকায় হরতাল পালিত হয় পূর্ব ঘোষণা অনুসারে।ঢাকা বিমানবন্দরে সামরিক বাহিনীর প্রবেশকে বাধা দেয়ার সময় সেনাবাহিনীর গুলিতে দু'জন নিহত হন।৩ মার্চ থেকে ৬ মার্চ দেশব্যাপী হরতালের কর্মসূচী অপরিবর্তিত রাখা হয়।অপরদিকে সামরিক জান্তা সংবাদপত্রের উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করে নতুন আদেশ জারি করে।



মার্চ ৩: সারা দেশে পূর্ণ হরতাল পালিত হয়। চট্টগ্রামে বহু লোক সেনাবাহিনীর গুলিতে মারা যায়।বঙ্গবন্ধু দেশব্যাপী অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন।অন্যদিকে সামরিক সরকার কার্ফু্ জারি করে।প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ১০ মার্চ জাতীয় পরিষদের নেতাদের বৈঠক আহ্বান করেন । শেখ মুজিব একে প্রত্যাখ্যান করেন।



মার্চ ৪: সেনাবাহিনীর সাথে জনসাধারণের সংঘর্ষে শতাধিক লোক হতাহত হন যার ফলশ্রুতিতে ঢাকাসহ পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান প্রধান শহরে কার্ফু জারি করা হয়।নুরুল আমিন ইয়াহিয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন। সামরিক বাহিনী ব্যারাকে ফিরে না গেলে তাদের প্রতিহত করা হবে বলে শেখ মুজিব ঘোষণা দেন। স্টেট ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংক হরতালের সময় শুধু বেতন দেয়ার জন্য দু'ঘণ্টা খোলা রাখার জন্য তিনি নির্দেশ দেন।



মার্চ ৫: ইয়াহিয়ার সঙ্গে ভুট্টোর আলোচনা চলে।অন্যদিকে ঢাকা ও টঙ্গীতে বিক্ষুব্ধ জনতার উপর গুলিবর্ষণে শতাধিক লোক নিহত এবং আরও অনেকে আহত হন।



মার্চ ৬: ইয়াহিয়া বেতার ভাষণে ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেন।ভুট্টোর পিপলস পার্টি অধিবেশনে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানায়।অন্যদিকে সামরিক জান্তা পূর্ব পাকিস্তানে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি করছে বলে আওয়ামী লীগ অভিযোগ করে।ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার ভেঙ্গে কয়েদিরা পালানোর সময় রক্ষীদের গুলিতে ৭ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়।এদিকে জেনারেল টিক্কা খানকে একই সাথে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর ও সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্বে নিযুক্ত করা হয়।



মার্চ ৭: শেখ মুজিবুর রহমান - নির্বাচনে সদ্য জয়ী হওয়া আওয়ামী লীগ এর নেতা, রেস কোর্সের ময়দানে ঘোষণা করেন , "এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম ".

মার্চ ৮: দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলন নতুন উদ্যমে শুরু হয়।জায়গায় জায়গায় কালো পতাকা উত্তোলন আর সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়।সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও অন্যান্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তানের লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়।ঢাকা হাইকোর্টের সব বিচারপতি টিক্কা খানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনায় অস্বীকৃতি জানান।



মার্চ ৯: পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা স্বীকার করে নেয়ার জন্য মওলানা ভাসানী উদাত্ত আহ্বান জানান।তিনি ১৪ দফার ভিত্তিতে আন্দোলনের ডাক দেন।সামরিক বাহিনীর পশ্চিম পাকিস্তানি অফিসারদের পরিবারবর্গকে পশ্চিম পাকিস্তানে পাঠানো শুরু হয়।



মার্চ ১০: সরকারের এক ঘোষণায় জানায় যে, সাম্প্রতিক বিভিন্ন সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়।

মার্চ ১১: সাড়ে সাত কোটি মানুষের মানবিক অধিকার আদায়ের সপক্ষে সমর্থন দান করার জন্য শেখ মুজিব জাতিসংঘের মহাসচিব উথান্টের কাছে আহ্বান জানান।



মার্চ ১২: শেখ মুজিবের সাথে আলোচনা শেষ করে এয়ার ভাইস মার্শাল(অব.) আজগর খান করাচিতে বলেন যে, শেখ মুজিব হচ্ছেন পূর্ব আর পশ্চিমের ক্ষীয়মান সম্পর্কের শেষ সংলাপ।তিনি ঢাকায় কোনো পাকিস্তানের পতাকা দেখেননি বলে জানান।



মার্চ ১৩: মওলানা ভাসানী রাজবন্দীদের মুক্ত করার জন্য 'জেল ভাঙ্গা' নামে এক আন্দোলনের ডাক দেন।ইয়াহিয়া লাহোরে সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বান করেন।কিন্তু ঢাকায় বৈঠক হলে তাতে যোগ দেবেন বলে শেখ মুজিব সম্মতি প্রদান করেন।

মার্চ ১৪: সামরিক আইন লংঘন করে মিছিল সভা চলতে থাকে। বেসামরিক প্রশাসন পশ্চিম পাকিস্তানি নীতি অনুযায়ী কাজ করা থেকে বিরত থাকে।



মার্চ ১৫: শেখ মুজিব আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাবিতে বাংলাদেশের শাসন নিজ হাতে নেয়ার ঘোষণা দেন এবং কাজ-কর্ম পরিচালনার জন্য ৩৫ টি বিধি জারি করেন। মাত্র দুটি ব্যাংকে সরকারকে দেয় কর প্রদানের নির্দেশ দেন।সামরিক প্রহরায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ঢাকায় আসেন।জাতির উদ্দেশ্যে ২৩ মার্চ ভাষণ প্রদানের ঘোষণা দেন।



মার্চ ১৬: প্রথম দফায় শেখ মুজিবের সাথে ইয়াহিয়ার আড়াই ঘণ্টা বৈঠক হয়।চট্টগ্রাম বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারীরা চীন থেকে আমদানি করা সমরাস্ত্রবাহী জাহাজের মাল খালাসে অস্বীকৃতি জানায়।স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এক বিবৃতিতে পূর্ব পাকিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার দাবি করে।

মার্চ ১৭: মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক দ্বিতীয় দফায় চলে । বেসামরিক প্রশাসনকে সাহায্য করার জন্য কোন অবস্থার প্রেক্ষিতে ২ মার্চ থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত সামরিক বাহিনী তলব করা হয়েছিল, সে সম্পর্কে তদন্ত করার জন্য সামরিক কর্তৃপক্ষের কমিশন নিয়োগ করা হয়।

যুদ্ধের ঘটনাবলি



মার্চ ২৫: পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঢাকা সহ সারা দেশে অপারেশন সার্চলাইট শুরু করে, রাজনৈতিক কর্মী,ছাত্র, এবং সেনাবাহিনী ,পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর বাংলাদেশী সদস্যদের হামলা করার মধ্য দিয়ে ।

মার্চ ২৬: দিনের প্রথম প্রহরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে। সন্ধ্যা ৭টায় পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বাঙালি অফিসার মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে নিজনামে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হিসাবে পালিত হয়।



মার্চ ২৭: মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে সকাল ১১টায় স্বাধীনতার আরেকটি ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।

মার্চ ৩০: পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশের গণহত্যা রোধে এগিয়ে আসার জন্য জাতিসংঘ এ বৃহৎ শক্তিবর্গের প্রতি মেজর জিয়াউর রহমান আহ্বান জানান।



মার্চ ৩১: কুষ্টিয়া প্রতিরোধ শুরু।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:১৬
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×