গতকাল সকাল থেকেই আমার স্ত্রীর চেস্ট পেইন (বুকে পিঠে ব্যাথা)। ১১টার পর অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিবো তখনও কমছে না। রিস্ক নিলাম না, তাড়াতাড়ি নিয়ে গেলাম বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের কার্ডিয়াক ইমার্জেন্সিতে। কল দিতেই আমার অনেক দিনের শুভাকাংখি, বিএসএমএমইউ-র এক সিনিয়র সেকশন অফিসার ডি ব্লকের নিচতলায় চলে এলেন আমাদের আগেই। ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার মহিলা ডাক্তার ইসিজি দেখে তেমন ভালো মনে করলেন না। হার্ট অ্যাটাক রোগীর চিকিৎসায় যা যা দরকার প্রয়োজনীয় ইনজেকশনসহ প্রেসক্রিপশনে কিছু ওষুধ লিখে দিলেন।
অামি ওষুধ অানতে গিয়ে একটু চিন্তায় পরে গেলাম। তাহলে কি হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বা হতে যাচ্ছে! ফার্মেসিওয়ালা আমার পরিচিত, তিনিও প্রশ্ন করলেন এই বয়সের রোগীকে এসব চিকিৎসা কেন? তবুও সব ওষুধ কিনে নিয়ে ইমার্জেন্সিতে ফিরলাম। কিন্তু আমি চাচ্ছিলাম আরো নিশ্চিত হতে।
অামার টেনশনজনিত কল পেয়ে মূহুর্তের মধ্যে ছুটে এলেন আমার প্রিয় একজন মানুষ ওই বিভাগের ডা. Osmany ভাই। তিনি নিজেই রোগীর দায়িত্ব নিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করলেন। অামার এসএমএস পেয়ে ১৬ তলা থেকে নেমে এলেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, অামাদের গর্ব অধ্যাপক ডা. Abm Abdullah স্যার (নিজের বা অন্য কারো কোন বিপদ হলেই স্যারকে কল করি)। বাংলাদেশের বিশিষ্ট লিভার সার্জন অধ্যাপক ডা. জুলফিকার রহমান খান স্যারের ফোন পেয়ে এলেন কার্ডওলজির সহযোগি অধ্যাপক ডা. চৌধুরী মেশকাত স্যার। ছুটে এলেন আমার সাবেক কলিগ, জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠান উপস্থাপক, বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট ডা. S M Mustafa Zaman ভাইসহ হৃদরোগ বিভাগের বেশ কয়েকজন চিকিৎসক। শুনলাম, কোন ডাক্তার যেন বলতেছিলেন এটা নাকি ভিআইপি পেশেন্ট!!
ইতিমধ্যে রক্তসহ নানা পরীক্ষার রিপোর্টও এসে গেল। অবশেষে হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। না, তেমন কোন সমস্যা নয়। গ্যাস্ট্রিক থেকেই বুকে ব্যাথা।
এবিএম আব্দুল্লাহ স্যারসহ অন্যান্য চিকিৎসকদের পরামর্শে আগের ওষুধপত্র বাতিল করা হলো। রোগীকে অবজারভেশনে রাখতে বললেন। ওষুধগুলো ফেরত দিলাম পরে। এসিডিটির জন্য ইনজেকশন প্রয়োগ করা হলো।
সন্ধার দিকে আর কোন ব্যাথা নেই। রাত ৯টার কিছু পর আমরা বাসায় চলে এলাম। এখন পর্যন্ত ভালো আছে ইনশা আল্লাহ্।
অাল্লাহর নিকট অশেষ কৃতজ্ঞতা। ধন্যবাদ সবাইকে যারা সহযোগিতা করেছেন, যারা দোয়া করেছেন।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫০