somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শয়তান সাধনা

২৫ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শয়তান সাধনা বলতে সাধারণভাবে শয়তানের ওপর ভক্তি বা প্রশংসাকে বোঝানো হয়ে থাকে। পৃথিবীর মানুষের লোকসংস্কারের এটা বড় অংশই হলো যাদুবিদ্যা বা শয়তানের সাহায্য নিয়ে অলৌকিক কিছু করবার শয়তানি প্রচেষ্টা। হিব্রু বাইবেল অনুসারে যে মানুষের বিশ্বাসের ওপর আঘাত করে সেই শয়তান। গ্রিক নিউ টেস্টামেন্টে আরো বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যায়, যেখানে যিশুর প্রলুদ্ধ হওয়ার ঘটনাকে বুঝানো হয়েছে। আব্রাহামিক ধর্মে শয়তানকে তুলনা করা হয়েছে বিপথগামী দেবদূত বা দানব হিসেবে যে মানুষকে খারাপ কাজ বা পাপ করতে অনুপ্রেরণা যোগায়। খ্রিস্টান ধর্ম অনুযায়ী শয়তানকে খ্রিস্টান ধর্মের প্রধান শত্রু হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। ইউরোপে রেঁনেসা হওয়ার পরে শয়তানকে আসলে রূপক অর্থে দেখা হয়েছে যা বোঝাচ্ছে বিশ্বাসের অভাবকে, বিচ্ছিন্নতাবাদ, ইচ্ছার স্বাধীনতা, জ্ঞান এবং আলোকিত হওয়াকে। সাহিত্যে আমরা শয়তানকে দেখি পারাডাইজ লস্ট-এ। ১৯৬০ সালের আগে শয়তান উপাসকদলগুলোকে আন্ডারগ্রাউন্ড ও অবৈধ মনে করা হত। ডাকিনীবিদ্যা বিরোধী আইন যেমন ব্রিটিশ ডাকিনীবিদ্যা আইন ১৭৩৫( যা ১৯৫১ সালের আগে বাতিল হয়নি) জনগণের ডাকিনীবিদ্যা ও স্যাটানিজম বিরোধী আবেগকে প্রকাশ করে।আধুনিক স্যাটানিজম প্রথম সবার নজরে আসে ১৯৬৬ সালে শয়তানের চার্চ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।আধুনিক শয়তানের দলগুলো নানা ভাগে বিভক্ত হলেও প্রধান দু’টি ধারা হচ্ছে আস্তিক স্যাটানিজম ও নাস্তিক স্যাটানিজম। আস্তিক শয়তানের দলগুলো শয়তানকে পূজা করে একটি অতিপ্রাকৃতিক দেবতা হিসেবে যিনি প্রকৃতই দয়ালু।অন্যদিকে নাস্তিক শয়তানের দলগুলো নিজেদের নাস্তিক মনে করে এবং শয়তানকে মনে করে মানুষের খারাপ বৈশিষ্ট্যের একটি প্রতীক হিসাবে। (W.P)


শয়তানের সাধনা বিভিন্নভাবে কালো যাদুর উপর বিশ্বাস স্থাপন করে, শয়তানকে পূজার মাধ্যমে অর্জিত হয়।


(শয়তানের চিহ্ন)

ভুডু (Voodoo) : ভুডু হচ্ছে এক ধরনের ব্ল্যাক ম্যাজিক। এটা আফ্রিকাতে সবচেয়ে বেশী করা হয়। শয়তানের সাধনার মাধ্যমে মানুষের মারাত্মক ক্ষতি সাধনই এর মুল লক্ষ্য। শয়তান জিনের উপাসনা করে ,সেইসব শয়তান জিন দ্বারা মানুষের ক্ষতি সাধন করা হয়। প্রথমে একটি ভুডো পুতুল সংগ্রহ করতে হয়। মনে রাখতে হয় পুতুলটি যেন আপনার মত দেখতে হয়। তারপর এটাকে একসপ্তাহ ঔ ভাবে রাখতে হবে। এসময় কোনও ধুমপান, এ্যালকোহল পান করা হয় না। অষ্টম দিনে সকালে গোসল করে পরিস্কার জামা পরিধান করতে হয়। এ জঘন্যতম কালোযাদু করার সময় ঘরে একা থাকতে হয়। এরপর একটি ল্যাম্প নিয়ে পুতুল টির গায়ে ১৪ ফোটা রক্ত লাগাতে হয়। তারপর পুতুল টিতে বিভিন্নস্থানে পিন বা শলাকা ফোটানো হয়। তারপর নিজের নাম নিয়ে এভাবে শয়তান বা জিনের উপাসনা করার মাধ্যমে অন্যের ভয়ানক ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করা হয়।



শয়তান ও জিন সাধনা : শয়তান কে নানা কাজের মাধ্যমে খুশি করে ও এর উপাসনা করে শয়তান ও জিনের মাধ্যমে নানা বিধ কাজ করানো হয়। মানুষের প্রবাহমান রক্তের মত শয়তান মানব শরীরে প্রবেশ করে নানাবিধ কুমন্ত্রনা ও ক্ষতি সাধন করে। এখানে ভন্ড পীর, দরবেশ বা শয়তান সাধক টাকার বিনিময়ে শয়তান সাধনার মাধ্যমে নানাবিধ দুষ্ট জিনের মাধ্যমে ক্ষতি সাধন করে।এভাবে তলব করে আনা দুষ্ট জিন তাদের সঙ্গীদের গুনাহ করতে এবং স্রষ্টাকে অবিশ্বাস করতে সাহায্য করতে পারে। তাদের লক্ষ্য হল স্রষ্টা ছাড়া অথবা স্রষ্টার পাশাপাশি অন্যকে উপাসনা করার মত গুরুতর গুনাহ করতে যত বেশী জনকে পারা যায় তত জনকে আকৃষ্ট করে। একবার গণকদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং চুক্তি হয়ে গেলে, শয়তান ও জিনের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ এ মানুষের ক্ষতি করার অভিপ্রায় নিয়ে নানারকম ভাবে শয়তানি ভবিষ্যৎ বাণী করে । এক্ষেত্রে ঈমান ঠিক রাখার জন্য ভুক্তভোগীর শুধুমাত্র এবং স্রষ্টা /আল্লাহকে স্বরণে করা ও তাঁর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করা উচিত।


তান্ত্রিক সাধনা : বিভিন্ন তন্ত্র মন্ত্র বা বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থের আয়াত আবৃত্তি করে কিন্তু পক্ষান্তরে শয়তানের উপাসনা করে জিন ও শয়তানের মাধ্যমে মানুষের মারাত্মক ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করে থাকে। যাদুর মাধ্যমে অনেক দুষ্টু লোক আছে যারা দুষ্টু জিনের মাধ্যমে তান্তিকদের সাহায্য নিয়ে থাকে। তান্ত্রিক বাচ্চা না করার জন্য মোয়াক্কেল জিন প্রবেশ করায়। যাদুর দ্বারা বশকৃত জ্বিন মহিলার জরায়ুর ভেতরে প্রবেশ করে মহিলার যেই ডিম্বানু রয়েছে তা নষ্ট করে দেয়। যার ফলে আর বাচ্চা ধরে না।অথবা কখনো সে জ্বিন ডিম্বানু ক্ষতি করে না। এতএব জরায়ুতে বাচ্চা ধরে, কিন্তু গর্ভভধারনের কয়েক মাস পরে শয়তান জরায়ুর কোন রগে আঘাত করে, যার ফলে স্রাব নিগত হওয়া শুরু করে।পরে গর্ভ ভূপাতিত হয়ে যায়। এছাড়া শয়তান ও জিনের মাধ্যমে বিভিন্ন যাদুটোনা, শারিরীক ও মানসিক ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করা হয়।



ডাকিনী বিদ্যা : ডাক হলো এক ধরণের পিচাশ। যারা এ ধরনের যাদুর আশ্রয় নেয় বা শয়তানের আরাধনা করে তাদের ডাইনি বা ডাকিনী বলা হয়।




প্রেত সাধনা : সাধারণত নানা আধাভৌতিক বা শয়তানের কাছে নিবিড় উপাসনা করে তাদের দিয়ে নানা ধরনের জঘন্যতম কাজ করানো হয়।



( শয়তান, জিন, জিন শয়তান, প্রেতাত্মা, কালোযাদু প্রভৃতির মাধ্যমে উপাসনা বা এসবের মাধ্যমে কোনও কাজ করা বা এসবের কাছে সাহায্য চাওয়া জঘন্যতম তাই পাঠকের এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ কাম্য। আর এসবের প্রতি বিশ্বাসও নিতান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। ছবি ও তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট। )
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১২:৪০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×