somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পগ্রন্থ : এখন আমি নিরাপদ / অরণ্য [পাওয়া যাচ্ছে বইমেলা ২০২২, স্টল নং: ৪৬ ও ৭০]

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জেগে থাকা কিংবা পাখির জন্য নীরবতা

ক’মাস ধরেই দেখছি পেচ্ছাবের রঙ হলুদ! ব্যাপারটা ভালো বুঝতে পারছি এজন্য যে, আমার ঘরে প্লাস্টিকের একটা মগ আছে, যেটা সময় মতো দুই ঊরুর সামনে তুলে ধরে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকি এবং ঘরের মধ্যেই রেখে দিই। এই তুলে ধরার ঘটনাটা দিনে দুই থেকে তিনবার ঘটলেও, রেখে দেওয়ার ব্যাপারটা চলে কয়েকদিন পর্যন্ত। বেশি পানি খাই, ফলে বারবার টয়লেট যাবার ঝামেলা পোহাতে পারি না। পারি না আরও অনেক কিছুই, কিন্তু ‘এই’ না পারাটার জন্য বিশ টাকা দামের একটা মগই যখন যথেষ্ট, তখন কেন আর মাথা ব্যথা। আমি ছাড়া কে আর এসে থাকছে এ ঘরে যে আমাকে অত ভাবতে হবে? ফলে নির্ঝঞ্ঝাটেই ঘটে মগের তুলে ধরা ও রেখে দেওয়া, এবং এই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি ও ক্রমশ নির্বিকার হয়ে উঠার ফলেই বুঝতে পারি যে, আমার পেচ্ছাবের রঙ হলুদ, যা প্রথম দু’একদিন হালকা রঙের থাকলেও পরের দিকে গাঢ় হয়, যা কখনও কখনও বেশ ভালোভাবেই আমার মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। প্রথম দিকে ভেবেছিলাম ডাক্তারকে দু’তিনশ’ দিয়ে জেনে নিই, কিন্তু পরে মগের ভেতরে স্থির হয়ে থাকা কয়েকদিনের গাঢ় হলুদ রঙের প্রতি তীব্র ভালোলাগা ও মায়া জন্মাতেই মনে হলো, ‘থাক না, নিজের শরীর থেকে বের হওয়া রঙ, কেন বদলাব’?


কিন্তু, আমি বদলাতে না চাইলেও শরীর নিজে নিজেই বদলে ফেলে, এবং যেদিন মগের ভেতর হলুদের পরিবর্তে দেখি সাদা রঙ, সেদিন হতাশ হই! আশঙ্কা হয়, তবে কি কাল থেকে কেউ আর আমাকে ডাক্তারের কথা শোনাবে না? দিন বা রাতের কোনো না কোনো সময় মা হঠাৎ ডুকরে উঠে আর কাঁদবে না? কিংবা তানিয়া, মাঝে মধ্যে প্রচণ্ড রাগে বেপরোয়া হয়ে মাথার চুল মুঠো করে ধরে আপ্রাণ ঝাঁকুনি দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে গেলে, মাথাটা বুকের মধ্যে চেপে ধরে কি একনাগাড়ে ফোঁপাবে না? সাদা তরল ভর্তি মগটা সামনে নিয়ে বসে এসব ভাবি, আর ভাবনার মধ্যেই নিজেকে প্রশ্ন করতে থাকি, একটানা।

আমার কি উচিত বাইরে থেকে ঘুরে আসা? বেশি দূরে না হোক কাছে-পিঠেই, এই যেমন পাবনা, রংপুর, কিংবা মহাস্থানগড়। নিদেনপক্ষে, নাটোরের রাজবাড়ি অথবা রাজশাহীর জাদুঘর। তাও যদি না হয়, পদ্মার পাড়ও কি ঘুরে আসা যায় না কোনোভাবে? যখন যে নাম মনে আসে তখন সেখানে যাবার জন্যই নিজেকে প্রশ্ন করি, আর মন সমস্ত অথর্বতা সমেত একভাবে মগের সাদা তরলে স্থির থাকতে থাকতে পৃথিবী ছেড়ে উঠে যায় মহাশূন্যে। চাঁদের মাটি কত করে বিঘে? মঙ্গলে পানির লিটার কত হতে পারে? বুধ থেকে প্লুটোতে যেতে ক’দিন লাগবে? শনির বলয়টা হঠাৎ ভেঙে গেলে কিভাবে সেটা জোড়া লাগানো যাবে? ক’টা পারমাণবিক বোমা দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া যাবে এই মহাবিশ্ব? কিংবা একটা অত্যাধুনিক রকেটে চড়ে অজানা কোনো গ্রহে পালালে আমাকে কি কেউ আর খুঁজে পাবে? এসব বহুবিধ প্রশ্ন থেকে কোনো একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে না পেরে রাগ হয়, আর তখন সব প্রশ্ন ছেড়ে সামনে রাখা সাদা তরল হলুদ নয় কেন, এই প্রশ্নটা উত্তরহীন রেখে দেওয়ার জন্য, মগটা মুখের কাছে তুলে ধরতে ইচ্ছে হয়, আর সেই ইচ্ছেটা ততক্ষণ পর্যন্ত ধুম মেরে বসে থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত না সাদা তরল হলুদ, গাঢ় হলুদে গিয়ে ঠেকে। না, পেচ্ছাব আমি পান করি নি, না নিজের না অন্যের। তবে অজান্তে ও উত্তেজনায় তানিয়া বা অন্যান্য কারও দু’একফোঁটা পেচ্ছাব পাকস্থলীতে গেলেও যেতে পারে, কারণ আমি দেখেছি, যৌনাঙ্গ ও জিভ কাছাকাছি হলে খুব কম মানুষই নির্ভুল ডায়েরি লিখতে পারে......[বিস্তারিত গ্রন্থে]





সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:২৪
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×